দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১১ বছরের শীর্ষে

বণিক বার্তা ডেস্ক

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত বছর বেড়েছে ভোক্তা ব্যয়, রফতানি বাণিজ্য ভবন নির্মাণ সম্পর্কিত কার্যক্রম। ফলে বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়েছে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রম। একটি পরিসংখ্যান বলছে, গত ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে ২০২১ সালে প্রসারিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি। যদিও নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারীর কারণে দেশটির পরিষেবা খাত বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর রয়টার্স।

দেখা গেছে, রফতানিতে রেকর্ড হলেও অর্থনৈতিক কিছু খাত বেশ পিছিয়ে পড়েছে। উৎপাদন পরিষেবা খাতের চাকরির বাজারের অবস্থা এখনো খারাপ। অনেক কর্মী ছাঁটাই করতে হচ্ছে। এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন কর্মসংস্থান বাড়ানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাও বাস্তবায়ন করা যায়নি।

গত বছর দেশের অর্থনীতি শতাংশ বেড়েছে। ব্যাংক অব কোরিয়ার তথ্য প্রকাশের কিছু সময় পরই কয়েকশ ছোট ব্যবসায়ী রাজধানী সিউলের জাতীয় সংসদের কাছে জড়ো হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। লকডাউনসহ নানা বিধিনিষেধের কারণে তাদের খুচরা ব্যবসার যে ক্ষতি হয়েছে তার প্রতিকার দাবি করেন তারা। চলতি বছরের মার্চেই দেশটিতে অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এটিকে সামনে রেখেও হতাশ দেশের অনেক মানুষ। নির্বাচনের প্রধান দুই প্রার্থীই সমতাভিত্তিক সমাজ ব্যবসাক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

ব্যাংক অব কোরিয়া ধারণা করছে, বছর জিডিপির শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। কারণ এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম দেশটির অর্থনীতিতে চিপ রফতানি ভোক্তাব্যয় বেড়েছে। দুটোর ওপর ভর করেই বছর অর্থনীতি এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যদিও চলতি সপ্তাহে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেক বেড়েছে। এটি ভোক্তাব্যয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে বলেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

অর্থনীতিবিদ হোয়াং স্যায় পিল বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার চিপের চাহিদা গোটা বিশ্বেই রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের রফতানিও বেশ শক্তিশালী। সাধারণ মানুষ সামাজিক দূরত্বের নিয়মের সঙ্গে নিজেদের অনেকটাই মানিয়ে নিয়েছেন। আগের চেয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিছুটা কম হলেও তা আগের মতো প্রভাব ফেলবে না।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এর আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেড়েছে। যদিও অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশ হতে পারে। কিন্তু বছর শেষে যে পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গেছে প্রবৃদ্ধি। গত ১৪ জানুয়ারি ব্যাংক অব কোরিয়া বেঞ্চমার্ক সুদের হার মহামারীর আগের সময়ের চেয়ে বাড়িয়ে দেয়। এর মাধ্যমে সংকেত দেয়া হয় যে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এটি আরো কঠিন হবে এবং মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়তে পারে।

তবে দেশটির অর্থনীতির যে অবস্থা সেটি গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মূলত রফতানি বৃদ্ধি ভোক্তাব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণেই নানা সমস্যা থাকার পরও সার্বিক অর্থনীতির প্রসার ঘটেছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা রেখেছে রফতানি খাত। পাশাপাশি ভোক্তাব্যয় বৃদ্ধি, নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণেও অর্থনীতির প্রসার ঘটেছে। সে তুলনায় পরিষেবা খাত মূলধন বিনিয়োগ খাত বেশ পিছিয়ে ছিল।

সম্প্রতি রয়টার্সের এক জরিপে ২০ অর্থনীতিবিদের একটি প্যানেল পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, চলতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশ হতে পারে। এটি ব্যাংক অব কোরিয়ার দেয়া পূর্বাভাস শতাংশেরও কম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন