ইউক্রেন ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে এমন আশঙ্কায় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার সেনাকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রয়োজন হলে স্বল্প সময়ের নোটিশে এসব সেনাকে ইউরোপে মোতায়েন করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে,স্থানীয় সময় সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে এক ভিডিও কলে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পশ্চিমা শক্তিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে পূর্ব ইউরোপে সেনাবহর, যুদ্ধজাহাজ ও বোমারু বিমান পাঠায় পাশ্চাত্য দেশগুলোর সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)।
স্থানীয় সময় সোমবার এক বিবৃতিতে ন্যাটোর মহাপরিচালক জনস স্টলটেনবার্গ বলেন, যেসব দেশ ন্যাটোতে তাদের সেনা বাহিনী ও যুদ্ধযান পাঠিয়েছেন তাদের জন্য কৃতজ্ঞতা। এভাবেই সকল মিত্রকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষপ গ্রহণ করা অব্যাহত রাখবে ন্যাটো।
বিবৃতির পরই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই ইউরোপে মোতায়েনের জন্য সেনা প্রস্তুত রাখার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন। সোমবার পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, সাড়ে আট হাজার মার্কিন সেনাকে যেকোনো মুহূর্তে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। মূলত তারা ন্যাটোর র্যাতপিড রেসপন্স টিম হিসেবে মোতায়েন হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন চান, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও অনির্দিষ্ট সংখ্যক সেনা তৈরি থাকুক।
তবে পেন্টাগন এখনও জানায়নি যে, তারা ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করবে কি না। তারা বলছে, এটা তখনই ঘটবে যখন ন্যাটো সামরিক জোট দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল বাহিনীকে সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নেবে। অথবা যদি অন্য পরিস্থিতি তৈরি হয় তবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সঙ্গে তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনের সাম্প্রতিক উত্তেজনা এই ন্যাটোকে ঘিরেই। রাশিয়ার অভিযোগ, ন্যাটো ইচ্ছাকৃত উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। ন্যাটো সামরিক জোটকে রাশিয়া একটি নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এবং মস্কোর দাবি ইউক্রেনসহ পূর্ব ইউরোপে নতুন করে এই জোটের সম্প্রসারণ বন্ধ করার ব্যাপারে ন্যাটোকে আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে। ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনার তাদের নেই বলেও জানায় তারা।
আর যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ন্যাটোর সম্প্রসারণ নয় বরং, রাশিয়ার আগ্রাসনই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে আনুমানিক এক লাখ রুশ সৈন্য মোতায়েন করার পটভূমিতে ন্যাটো প্রধান ইউরোপে নতুন লড়াই বাধার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন।