জরুরি ভিত্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। দেশের সব ব্যাংকের কাছে চিঠি দিয়ে এ তথ্য চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে ড. ইউনূসের ব্যাংক হিসাবের সর্বশেষ দুই বছরের লেনদেনের সব তথ্য বিএফআইইউতে পাঠাতে বলা হয়।
তবে কেন হঠাৎ করে শান্তিতে এ নোবেলজয়ীর ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে সেটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। চিঠিতে ড. ইউনূসের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মসাল উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএফআইইউর প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস বণিক বার্তাকে বলেন, রুটিন কাজের অংশ হিসেবে আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছি। ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর সেগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হবে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করে হালনাগাদ করা বিএফআইইউর নিয়মিত কাজের অংশ।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার জয় করেন তিনি। নির্ধারিত বয়সসীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০১১ সালে ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরিয়ে দেয় সরকার। সরকারের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তিনি উচ্চ আদালতে গেলেও শেষ পর্যন্ত হেরে যান।
৬ জানুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকের সব শাখা ব্যবস্থাপক বরাবর প্রধান কার্যালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। ব্যাংকটির মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধানের পক্ষ থেকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন অফিসের প্রজেকশন বোর্ড, অফিসের ভেতরে ও বাইরে অনেক আগের পুরনো ছবি ও বাণী প্রদর্শিত হয়ে আসছে। এখন থেকে পুরনো ছবি ও বাণী না রেখে সাম্প্রতিককালের ছবি, বাণী, নির্দেশনা ও কর্মসূচি প্রজেকশন বোর্ডে, অফিসের ভেতরে ও বাইরে প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হলো।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের তথ্য বলছে, গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত কোনো কিছুতেই যাতে ড. ইউনূসের ছবি বা বাণী প্রচার করা না হয়, সেজন্যই প্রধান কার্যালয় থেকে চিঠিটি ইস্যু করা হয়েছিল। চিঠির মাধ্যমে নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদের বিষয়ে সরকারের মনোভাবই প্রকাশ পেয়েছে। বিএফআইইউর পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের ব্যাংক হিসাব তলব করা একই সূত্রে গাঁথা বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
