২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। বাংলা চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘরখ্যাত বিএফডিসিতে চলছে নির্বাচনের আমেজ। দুই প্যানেলের প্রার্থীরা ব্যস্ত তাদের জয় নিশ্চিত করতে। ছুটছেন ভোটারদের কাছে। প্রায় সারা দিন আড্ডা দিচ্ছেন এফডিসিতে। দেশের জনপ্রিয় ও ব্যস্ত শিল্পীরা সব ব্যস্ততা ভুলে লড়ছেন ভোটের মাঠে। যারা কোনো প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি, তারাও নিয়মিত উঁকি দিচ্ছেন শিল্পী সমিতির আশপাশে। তার পরও দেশের জনপ্রিয় ও আলোচিত অনেক শিল্পীই আছেন এ নির্বাচনের আমেজ থেকে দূরে। কাজ, ব্যস্ততা কিংবা নির্বাচনের প্রতি অনাগ্রহের কথা বলে ভোটের লড়াই থেকে দূরে আছেন যে শিল্পীরা—
শাকিব খান
শাকিব খান নিজেও শিল্পী সমিতির নির্বাচিত নেতা ছিলেন। গত দুই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এবার নেই নির্বাচনের মাঠে। গত দুই নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করেছেন। ভোটও দিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে কোনো আলোচনায়ই নেই এ নায়ক। সব ছেড়েছুড়ে তিনি আছেন আটলান্টিকের ওপারে। গত বছরের নভেম্বর থেকে আছেন আমেরিকায়। নির্বাচন উপলক্ষে দেশে আসেননি। ভোটও দেবেন না। ফলে এবার নির্বাচন থেকে আক্ষরিক অর্থেই সবচেয়ে বেশি দূরে অবস্থান করছেন এ চিত্রনায়ক।
শাবনূর
একসময়কার জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরকে জোর করে গণমাধ্যম আলোচনায় নিয়ে এলেও তিনি আছেন ভোটের মাঠ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার মাইল দূরে। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন তিনি। নির্বাচন উপলক্ষে দেশে আসেননি। তবে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর এসেছে, অস্ট্রেলিয়া থেকে মিশা-জায়েদ পরিষদকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে শিল্পী সমিতির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঘটনা এমন কিছুই না। একজন প্রার্থী শাবনূরকে কল করেছিলেন। শাবনূর তাকে শুভ কামনা জানিয়েছেন।
আমিন খান
ইলিয়াস কাঞ্চন-মান্না যখন বাংলা সিনেমার সেরা নায়ক, তখন আমিন খানের আবির্ভাব। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে বেশকিছু কাজ করেছেন। কাঞ্চন নির্বাচনের মঠে। অথচ নায়ক আমিন খান নির্বাচন নিয়ে একদম চুপ। তিনি বরং ব্যস্ত আছেন ব্যবসা আর একটি রিয়্যালিটি শোর বিচারকাজ নিয়ে। নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে বণিক বার্তাকে বলেন, আমি নির্বাচন নিয়ে কোনো কথাই বলব না। ভোটের দিন গিয়ে ভোট দিয়ে আসব। যিনিই জিতুন আশা করব তিনি শিল্পীদের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করবেন।
আরিফিন শুভ
বর্তমানে ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম ব্যস্ত নায়ক আরিফিন শুভ। কয়েক দিন আগেই মুক্তি পেল বিগ বাজেটের সিনেমা মিশন এক্সট্রিম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু’তে অভিনয় করছেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। এছাড়া বেশকিছু বড় প্রজেক্টের কাজ হাতে। তিনিও আছেন নির্বাচন থেকে দূরে। নির্বাচনী আমেজ শুরু হওয়ার পর এফডিসিতে যাননি এ অভিনেতা। সিনেমার কাজ নিয়েই আছেন।
বাপ্পি চৌধুরী
বাপ্পি চৌধুরী ব্যস্ত কুস্তিগীর নিয়ে। নেত্রকোনা থেকে কয়েকদিন আগে এ সিনেমার শুটিং করে এসেছেন। হাতে রয়েছে কাজী হায়াতের জয় বাংলাসহ বেশ কয়েকটি আলোচিত কাজ। তার আগে-পরে আসা অনেকেই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। বাপ্পি নির্বাচনে তো দাঁড়াননিই, বরং তিনি শিল্পী সমিতির এ নির্বাচনের বিপক্ষেও। তিনি মনে করেন, এসব নির্বাচন শিল্পীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিল্পী সমিতির নির্বাচন আমি সাত বছর ধরে দেখছি। নির্বাচনের সময়টা এবং পরবর্তী দুই বছর এফডিসিতে শুধু ক্ল্যাশ হয়। সে ভালো না, সে ভালো আবার সে খারাপ, সে ভালো। এগুলো নিয়েই আমাদের দুটি বছর চলে যায়। তাই আমি মনে করি সমিতি থাকুক। এ সমিতিতে আমাদের যারা সিনিয়র আছেন তারা সবাই একসঙ্গে বসবেন, কাজ করবেন।’
মাহিয়া মাহি
শাবনূর-পূর্ণিমা-পরবর্তী যাকে গুরুত্বপূর্ণ নায়িকা হিসেবে মনে করা হতো তিনি মাহিয়া মাহি। যদিও সংসার শুরুর পর এ নায়িকাকে চলচ্চিত্রে নিয়মিত হতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি নানা ইস্যুতে আলোচনায় থাকলেও মাহিয়া মাহি নেই নির্বাচনী আলোচনায়। একই সিনেমায় অভিষেক হওয়া বাপ্পি চৌধুরী নির্বাচনের বিরুদ্ধে হলেও মাহি পক্ষে না বিপক্ষে সে বিষয়েও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নুসরাত ফারিয়া
তরুণ নায়িকাদের মধ্যে বাংলাদেশ ও কলকাতায় আলোচিত নুসরাত ফারিয়া। তার হাতে যেমন রয়েছে বিগ বাজেটের সিনেমা, সিনেমার পাশাপাশি করছেন নাচ-গানও। এ নায়িকাকেও দেখা যাচ্ছে না ভোটের মাঠে। নির্বাচনে অনাগ্রহের কারণ জানতে চাইলে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমি আসলে প্রচণ্ড ব্যস্ত। এজন্য নির্বাচন করছি না। তবে নির্বাচনের দিনে অবশ্যই ভোট দেব। একই সঙ্গে যারা নির্বাচিত হয়ে আসবেন তাদের প্রতি অনুরোধ করব, শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষায় তারা যেন আরো জোরালো ভূমিকা রাখেন।’