দুপুরে
ও
সন্ধ্যার
পরে
হলের
ক্যাফেটেরিয়ায়
পরিবেশিত
হতো
ভাত।
দুপুরের
মেনুতে
সাধারণত
থাকত
মাছ
এবং
রাতে
গোশত।
পাতলা
ডাল
ছিল
দিনের
সাথী
এবং
রাতেরও
সঙ্গী।
বলা
বাহুল্য,
এখানে
সাথী
এবং
সঙ্গীর
একই
অর্থ।
কদাচিৎ
ব্যতিক্রম
ছাড়া
ঘুরেফিরে
মাছ
খেতাম
আমরা
তিন
ধরনের—নলা
মাছ,
ইলিশ
ও
কৈ।
গরমকালে
প্রথম
দুটো,
শীতকালে
কৈ।
নলা
মাছ
আমার
একদম
ভালো
লাগত
না।
তারপর
কাঁটার
কারণে
এ
মাছে
আমার
কোনো
আগ্রহই
ছিল
না।
ইলিশটা
আমার
খুব
প্রিয়
ছিল।
ইলিশের
ডিম
থাকলে
ডিমের
বাটি
আলাদা
বানানো
হতো
এবং
আমি
ডিমই
পছন্দ
করতাম,
তবে
দেরিতে
গেলে
আর
ডিম
পাওয়া
যেত
না।
এখানে
বলতে
দ্বিধা
নেই,
জীবনে
একবার
এই
অমৃতেও
আমার
অরুচি
ধরেছিল
এবং
সেটা
হয়েছিল
ওই
১
নম্বর
হলের
ডাইনিং
রুমেই।
উপর্যুপরি
পাতলা
ঝোলের
ইলিশ
খেতে
খেতে
একেবারে
ত্যক্তবিরক্ত
হয়ে
উঠেছিলাম।
ইলিশের
ওপর
ভীষণ
অরুচি
এসে
গিয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে
পাস
করে
বেরোনোর
পর
অনেক
দিন
আমি
ইলিশ
খেতেই
পারতাম
না।
ইলিশের
গন্ধ
নাকে
লাগলেই
রীতিমতো
বমি
আসত।
অবশ্য
দু-তিন
বছরের
মধ্যেই
আমি
সেই
সিনড্রোম
থেকে
বেরিয়ে
আসি।
আবার
হয়ে
যাই
একজন
ইলিশভক্ত,
ইলিশপাগল
ও
ইলিশরসিক
মানুষ।
ইলিশ
প্রসঙ্গে
একটি
কথা
বলতে
ভুলে
গেছি—যেভাবেই
তৈরি
হোক
না
কেন,
ইলিশের
মাথা
কিংবা
লেজের
প্রতি
আমার
আকর্ষণ
কোনো
কালেই
ছিল
না,
এখনো
নেই।
এখানে
কৈ
মাছের
কথাও
আরেকটু
বলা
দরকার।
শীতকালে
কৈ
কেনা
হতো
ভোরে
অন্ধকার
থাকতে
নয়ারহাট
মাছের
আড়ত
থেকে।
টুকরিতে
করে
কৈ
এনে
যখন
গোনা
হতো
তখন
জীবিত
তাগড়া
তাগড়া
জিয়ল
মাছের
লাফালাফি
দেখতে
আমার
ভীষণ
ভালো
লাগত।
অবশ্য
মাঝে
মাঝে
দিনের
বেলা
সাভার
বাজার
থেকেও
কৈ
কিনে
আনা
হতো।
ওইসব
বড়
দেশী
কৈ
আজকাল
পাওয়া
যায়
কিনা,
জানতে
বড়
ইচ্ছে
করে।
রাতের
খাবারে
থাকত
হয়
গরু,
না-হয়
খাসি
নতুবা
মুরগি।
যেদিন
গরুর
গোশত
রান্না
হতো,
সেদিন
হিন্দু
ছাত্রদের
জন্য
থাকত
ডিমের
তরকারি।
প্রতিটা
বাটি
সাজানো
হতো
দেড়টা
ডিম
আর
ঝোল
দিয়ে।
বাটিতে
দেড়টা
ডিম
সাজানোর
জন্য
সেদ্ধ
ডিমকে
মাঝখান
দিয়ে
কাটতে
হতো।
ছোটবেলা
বাড়িতে
মা-চাচিকে
বঁটি
দিয়ে
ডিম
কাটতে
দেখেছি।
হলে
এসে
দেখলাম
এক
অভিনব
পদ্ধতি।
এক
টুকরো
সুতোর
দুই
মাথায়
দুটো
বাঁশের
কাঠি
বেঁধে
বয়-বেয়ারারা
বানিয়ে
নিত
সুতোর
করাত
এবং
এ
করাত
দিয়ে
টেনে
টেনে
আস্ত
সেদ্ধ
ডিমকে
দুই
ভাগ
করা
হতো।
বঁটি
দিয়ে
ডিম
কাটলে
বঁটির
গায়ে
ডিমের
কুসুম
লেগে
যে
অপচয়
হতো,
সুতোর
করাত
দিয়ে
সে
অপচয়
তারা
রোধ
করতে
পেরেছিল।
যেদিন
মুরগি
রান্না
হতো
সেদিন
গিলা,
কলিজা
ও
কল্লা
দিয়ে
বানানো
হতো
‘কলিজি বাটি’।
ডাইনিং
হলে
‘কলিজি বাটি’
ইলিশের
ডিমের
মতোই
সবসময়
থাকত
‘হাই ডিমান্ড
আইটেম’।
প্রথম
আধা
ঘণ্টায়ই
শেষ
হয়ে
যেত।
তরকারি
শেষ
হওয়ার
পর
রাত
১১-১২টার
পরে
কেউ
খেতে
এলে
তাকে
দেয়া
হতো
ডালের
সঙ্গে
পেঁয়াজ-মরিচ
দিয়ে
ভাজা
দুটো
ডিমের
ওমলেট।
লিখতে
গিয়ে
আজ
ডাইনিং
হলের
দুটো
মজার
ঘটনার
কথা
মনে
পড়ছে।
প্রথমটা
এ
রকম: রাতের
খাবার
খেতে
এসেছি
একসঙ্গে
আমি
ও
আমার
রুমমেট
আব্দুর
রব
এবং
আমাদের
আরেক
বন্ধু
আব্দুল
আউয়াল।
সে
রাতে
অপ্রত্যাশিতভাবে
রান্না
হয়েছে
ইলিশ
মাছ।
ও-বেলা
আমি
ডিমের
কথা
জিজ্ঞেস
করতে
ভুলে
গিয়ে
নিয়েছি
ইলিশের
পেটি,
আব্দুর
রবও
এ
রকমই
একটা
কিছু
নিয়েছে,
কিন্তু
আউয়াল
যখন
এসে
বসল
তখন
তার
সামনে
দেখি
ডিমের
বাটি।
আমি
বললাম,
আউয়াল,
তোকে
তো
কখনো
মাছের
ডিম
খেতে
দেখিনি,
আজ
কী
মনে
করে
নিলি?
আউয়াল
জবাব
দিল,
‘ঠিক করতে
পারছিলাম
না—মাথা
খাব
না
লেজ
খাব,
না
পেটি
খাব,
না
পিঠ
খাব,
তাই
ভাবলাম
পুরোটাই
খাই।’
আশা
করি
আউয়ালের
কথার
গূঢ়
অর্থ
বুঝতে
আপনাদের
কারো
অসুবিধা
হচ্ছে
না,
সে
সবসময়
এভাবেই
কথা
বলত।
দ্বিতীয়
ঘটনা
একটু
ভিন্ন
ধরনের।
আমাদেরই
এক
বন্ধু
গণিত
বিভাগের
আব্দুল
হামিদের
রুমে
এসে
উঠেছেন
পাবনা
থেকে
তার
এক
মেহমান,
তিনি
হতে
পারেন
তার
আত্মীয়,
হতে
পারেন
বন্ধু।
ছিলেন
অন্তত
মাস
খানেক।
কয়েক
দিন
যাওয়ার
পর
শুনি,
তিনি
নাকি
এক
বৈঠকে
শুধু
ডাল
দিয়ে
১০-১২
জনের
ভাত
একাই
খেয়ে
ফেলেন।
খেতে
বসলে
তার
পাক্কা
২
ঘণ্টা
লাগত।
প্রথম
প্রথম
আমি
এমন
আজগুবি
গল্প
বিশ্বাস
করিনি।
পরে
যখন
দেখলাম
সবাই
একই
কথা
বলাবলি
করছে
তখন
আর
অবিশ্বাস
করি
কী
করে।
দু-একদিনের
মধ্যে
আমি
হাতেনাতে
তার
প্রমাণও
পেয়ে
গেলাম।
সেদিন
আমি
ঢাকা
থেকে
এসে
দেরিতে
দুপুরের
খাবার
খেতে
ডাইনিং
হলে
গিয়েছি।
তখন
বিকাল
৪টা
কি
সাড়ে
৪টা
বাজে।
দেখি
গোটা
হল
খালি,
আমাদের
অতিথি
একাই
বসে
খাচ্ছেন।
ইচ্ছে
করে
আমি
তার
পাশে
গিয়ে
বসলাম।
আমি
খাওয়া
শেষ
করে
উঠে
যাব,
তখনো
তিনি
চালিয়ে
যাচ্ছেন।
আমি
তাকে
শুধু
জিজ্ঞেস
করলাম,
এই
পাতলা
ডাল
আপনি
খেতে
পারেন?
তিনি
আমাকে
বললেন,
‘ডাল নয়,
ডাল
নয়,
এ
তো
অমৃত!’
যে
মানুষটির
কাছে
অতি
সাধারণ
হাতের
রান্না
ডাল
‘অমৃত’ মনে
হয়,
তিনি
কাবাব-বিরিয়ানি,
গোশত-পরোটা,
রসগোল্লা-সন্দেশ
খেলে
কী
বলবেন,
আল্লাহই
মালুম।
খাওয়া-দাওয়া
নিয়ে
আমার
আরো
কিছু
কথা
রয়ে
গেছে।
শীতের
সকালে
নাশতার
পরে
আমরা
১
নম্বর
হল
শহীদ
মিনারের
পাশে
দাঁড়িয়ে
দাঁড়িয়ে
রোদ
পোহাতাম
এবং
আড্ডা
মারতাম।
এ
রকম
সময়
মাঝে
মাঝে
আশপাশ
গ্রামের
লোকজন
ক্যাম্পাসে
কলসি
ভরে
তাজা
খেজুরের
রস
নিয়ে
আসতেন।
ছ’কড়া
ন’কড়া
দামে
আমরা
মিষ্টি-মধুর
রস
কিনে
খেতাম।
এছাড়া
ক্যাম্পাসে
১২
মাস
আরেকটা
জিনিস
পাওয়া
যেত।
সেটা
হলো,
সাভারের
বড়
বড়
তাজা
রসগোল্লা।
যে
ছেলেটা
বালতিতে
করে
রসগোল্লা
নিয়ে
করিডোরে
এবং
গোটা
ক্যাম্পাস
ঘুরে
বেড়াত,
তার
নাম
ছিল
‘বিপদ’।
সে
টাকায়
একটা
করে
রসগোল্লা
বেচত।
তারের
চিমটি
দিয়ে
ধরে
এক
টুকরো
পুরনো
বইয়ের
ছেঁড়া
পাতায়
অথবা
পত্রিকার
কাগজে
সে
রসগোল্লা
পরিবেশন
করত।
‘বিপদ’ সবসময়
আমাদের
মিষ্টি
মুখ
করাত
আবার
কখনো
কখনো
বিপদেরও
কারণ
হয়ে
উঠত।
সে
যদি
টের
পেত,
বাইরের
মেহমান
নিয়ে
কেউ
কোথাও
বসে
গল্প
করছে
তাহলে
বিপদ
এমনভাবে
সামনে
এসে
দাঁড়িয়ে
থাকত
যে
অনিচ্ছা
সত্ত্বেও
বাধ্য
হয়ে
মিষ্টি
কিনে
মেহমানকে
খাওয়াতে
হতো।
ক্যাম্পাসের
ভেতরে
বিভিন্ন
সময়ে
ঝুপড়ি
ঘরে
ছোট
ছোট
খাবার
দোকান
গজিয়েছে,
আবার
কিছুদিন
পর
লাল
বাতিও
জ্বালিয়েছে।
এর
মধ্যে
একটার
কথা
মনে
আছে,
যেখানে
আমরা
রাতে
খুব
সস্তায়
চাপাতি
ও
গরুর
গোশত
খেতাম,
কিন্তু
দোকানটা
বেশি
দিন
টেকেনি।
আরেকটা
দোকান
ছিল
রেজিস্ট্রার
অফিসের
পুবপাশের
দেয়াল
ঘেঁষে
একচালা
টিনের
ঘরে।
সেটা
চলেছিল
অনেক
দিন।
ওখানে
পাওয়া
যেত
চা
ও
ডালপুরি।
ডেপুটি
রেজিস্ট্রার
এলআর
মল্লিকের
অফিসে
গিয়ে
বসলেই
এক
কাপ
চা
আর
দুটো
ডালপুরি
পাওনা
হয়ে
যেত।
তিনি
আমাকে
খুব
স্নেহ
করতেন
আর
আমি
ওই
সুযোগটা
নিতাম।
ওদিকে
গেলেই
কারণে-অকারণে
স্যারের
অফিসে
ঢুঁ
মারতাম
ডালপুরির
লোভে।
সে
ডালপুরির
স্বাদ
আজও
আমার
জিবে
লেগে
আছে!
ওই
এরিয়াতেই
ব্যাংকের
উল্টোদিকে
রাস্তার
পশ্চিম
পাশে
ছোট্ট
একচালা
টিনের
ঘরে
একটা
পানের
দোকানও
ছিল।
তার
পণ্যসামগ্রীর
মাঝে
তিনটা
জিনিসের
কথাই
আমার
মনে
পড়ে—পানের
খিলি,
সিগারেট
ও
কলা,
কিন্তু
আমার
আকর্ষণ
ছিল
অন্য
জায়গায়।
দোকানি
ছেলেটার
একটা
ট্রানজিস্টারও
ছিল।
আমাদের
বৈকালিক
হাঁটাহাঁটির
সময়
ট্রানজিস্টারে
রবীন্দ্রসংগীত
কিংবা
খবর
হলে
আমরা
তার
দোকানের
সামনে
কাঠের
বেঞ্চে
বসে
কিছুক্ষণ
জিরিয়ে
নিতাম।
এ
পথে
হেঁটে
হেঁটে
বন্ধু
আনোয়ারের
সঙ্গে
বার্ট্রান্ড
রাসেলের
দর্শন
নিয়ে
আমাদের
তর্ক-বিতর্ক
হতো
হরহামেশা।
শিক্ষক
হওয়ার
পরও
ক্যাম্পাসে
আমার
আরো
কিছু
খাবারদাবারের
স্মৃতি
আছে।
একবার
মীর্জা
মোজাম্মেল
হক
স্যার
তার
বাসায়
আমাকে
ডিনারের
দাওয়াত
দিয়েছিলেন।
ওইদিন
দাওয়াতে
আর
কেউ
ছিল
কিনা
মনে
নেই,
তবে
কালিজিরা
চালের
পোলাওয়ের
সঙ্গে
গরুর
গোশত
ভুনা
যে
আত্মতৃপ্তির
সঙ্গে
খেয়েছিলাম,
সেকথা
আজও
ভুলিনি।
ভাবির
হাতের
রান্না
যদি
আরেকটু
কম
স্বাদের
হতো
তাহলে
সেদিন
রসগোল্লা
আরো
একটা-দুটো
বেশি
গিলতে
পারতাম।
আরেকবার
ভূগোল
বিভাগের
দারা
শামসুদ্দীন
স্যারের
বাসায়
ঈদের
দিন
দই
বড়া
খেয়েছিলাম।
সেটাই
ছিল
আমার
জীবনের
প্রথম
দই
বড়া
খাওয়া।
ওইদিন
আমাদের
বিভাগের
তত্কালীন
চেয়ারম্যান
কায়সার
হোসেইন
স্যার
একটি
মজার
কথা
বলেছিলেন।
পেটের
অসুখে
গরম
ভাতের
সঙ্গে
গরুর
গোশত
ভুনা
খেলে
নাকি
তিনি
ভালো
হয়ে
যেতেন!
এতক্ষণ
আমার
একঘেয়েমি
বয়ান
শুনে
আপনাদের
মনে
হতে
পারে,
‘জাহাঙ্গীরনগর’ বুঝি
একটি
রেস্তোরাঁ।
আসলে
তা
তো
নয়,
তাই
এবার
একটু
ইলম-তালিমের
কথা
বলতে
চাই।
অন্যান্য
বিশ্ববিদ্যালয়ের
তুলনায়
আমাদের
লেখাপড়াটাও
ছিল
একটু
ভিন্ন
কিসিমের।
প্রতি
বছরের
শেষে
সে
বছরের
পরীক্ষাগুলোর
সমাপনী
হয়ে
যেত
(এ রকমই
হওয়ার
কথা
ছিল,
কিন্তু
সেশনজটের
কারণে
বাস্তবে
তা
হয়নি।
আমাদের
চার
বছরের
প্রোগ্রাম
শেষ
করতে
লেগেছিল
পাঁচ
বছরের
একটু
বেশি)।
তত্কালীন
অন্যান্য
উচ্চশিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের
মতো
আমাদের
বিশ্ববিদ্যালয়ে
তিন
বছর
শেষে
একসঙ্গে
সম্মান
পরীক্ষা
দিতে
হতো
না।
আরেকটা
ব্যাপার
ছিল,
আমাদের
প্রতিটি
কোর্সে
৪০
শতাংশ
নম্বর
ছিল
ক্লাস
টিউটোরিয়ালের
ওপর
এবং
এর
পুরোপুরিই
ছিল
কোর্স
শিক্ষকের
হাতে।
এতে
নম্বর
তোলা
ও
ফার্স্ট
ক্লাস
পাওয়া
তুলনামূলকভাবে
একটু
সহজ
ছিল,
অবশ্য
কারো
কারো
জন্য
বোধগম্য
কারণে
কঠিনও
ছিল।
আরেকটা
বিষয়
ছিল,
ক্যাম্পাসে
লেখাপড়ার
সুযোগ
পুরোবেলা
থাকলেও
দিনের
শিক্ষা
কার্যক্রম
ছিল
মাত্র
আধাবেলার।
ক্লাস
শুরু
হতো
সকাল
৮টায়
এবং
শেষ
হয়ে
যেত
বেলা
১টায়।
সকালে
ঢাকা
থেকে
প্রথম
বাস
আসত
৮টায়,
দ্বিতীয়টা
আসত
৯টায়।
দুপুরে
প্রথম
বাস
ক্যাম্পাস
ছেড়ে
ঢাকা
যেত
১টায়,
পরেরটা
যেত
২টায়।
প্রতিদিন
বেলা
১টা
বাজতে
না
বাজতেই
আমাদের
ছুটি!
আমরা
হলে
এসে
নাওয়া-খাওয়া
সেরে
দরজা-জানালা
খুলে
দিতাম
লম্বা
ঘুম।
খোলামেলা
পরিবেশে
দক্ষিণের
হাওয়া
এমনভাবে
খেলা
করত
যে
গরমে
কোনো
কষ্টই
হতো
না।
আর
বেলা
২টার
পর
গোটা
ক্যাম্পাস
হয়ে
যেত
বিরান
মুলুক।
অবশ্য
বিজ্ঞান
অনুষদের
ব্যাপারটা
ছিল
আলাদা—বিকালেও
তাদের
প্র্যাকটিক্যাল
ক্লাস,
পরীক্ষা
ইত্যাদি
চলত।
লাইব্রেরি
খোলা
থাকত
সকাল
৮টা
থেকে
রাত
১০টা
পর্যন্ত।
আমরা
এমন
একটা
সময়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ে
লেখাপড়া
করেছি
যখন
কম্পিউটার
ছিল
না,
ইন্টারনেট
ছিল
না,
ডিজিটাল
ক্যামেরা
ছিল
না,
সেলফোন
ছিল
না,
এসএমএস
ছিল
না,
এমনকি
কপিয়িং
মেশিনটা
পর্যন্ত
ছিল
না।
আমাদের
লাইব্রেরিতে
পর্যাপ্ত
পরিমাণ
বই-জার্নাল
তো
ছিলই
না।
আমি
ঢাকার
পথে
পথে
পায়ে
হেঁটে
ঘামে
ভিজে
বিভিন্ন
লাইব্রেরিতে
গিয়ে
ঘণ্টার
পর
ঘণ্টা
বসে
বিভিন্ন
বই
থেকে
প্রয়োজনীয়
অংশ
হাতে
লিখে
নোট
করে
নিয়ে
আসতাম।
এ
রকমই
একদিন,
মতিঝিলে
রাস্তার
পাশে
রিকশাওয়ালাদের
সঙ্গে
এক
কাতারে
লাল
ইটের
পিঁড়িতে
বসে
আলু
ভর্তা
আর
ডাল
দিয়ে
মজা
করে
খেয়েছিলাম।
দাম
কত
পড়েছিল—শুনবেন?
কুল্লে
আট
আনা।
খাবার
গল্প
ছেড়ে
দিয়ে
পড়ার
কথা
বলতে
এলাম,
তবু
ডাল-ভাতের
প্রসঙ্গ
আমার
লগ
ছাড়ল
না।
আমার
বেলা
এ
আবার
নতুন
কী!
ওই
সময়
পায়ে
হেঁটে
পথ
চলায়
আমার
অনেক
সময়
নষ্ট
হয়েছিল
ঠিকই,
কিন্তু
চিনেছিলাম
ঢাকা
শহরের
নতুন
নতুন
অনেক
রাস্তা
এবং
জানাশোনাও
হয়েছিল
অনেক
জায়গায়
হরেক
রকম
মানুষের
সঙ্গে।
এমনি
এক
লাইব্রেরির
পাঠাগারে
একজন
মনের
মানুষও
পেয়ে
গিয়েছিলাম,
কিন্তু
শেষ
পর্যন্ত
তাকে
পেতে
পেতেও
আর
পাওয়া
হলো
না।
যেসব
লাইব্রেরিতে
ছিল
আমার
অবাধ
যাতায়াত,
তার
মধ্যে
বলতে
পারি
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়,
বিআইডিএস,
আমেরিকান
কালচারাল
সেন্টার,
ভারতীয়
হাইকমিশন,
বাংলাদেশ
ব্যাংক,
বিসিক
ও
ঢাকা
পাবলিক
লাইব্রেরি।
আবু এন
এম ওয়াহিদ: অধ্যাপক,
অর্থনীতি,
টেনেসি
স্টেট
ইউনিভার্সিটি,
এডিটর,
জার্নাল
অব
ডেভেলপিং
এরিয়াজ