লেনদেন বাড়লেও সূচকের অবস্থান প্রায় অপরিবর্তিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল দেশের পুঁজিবাজারে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বাড়লেও সূচকের অবস্থান প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে মাত্র দশমিক পয়েন্ট। এক্সচেঞ্জটির দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে দশমিক শতাংশ। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচক লেনদেন বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গতকাল শুরুতে সূচকে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেলেও বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতার কারণে শেষ পর্যন্ত সূচকে নামমাত্র উত্থান হয়েছে।

দেশে কভিড-১৯-এর ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের কারণে অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিতে চাইছেন। ফলে শেয়ারদর কিছুটা বাড়লেই বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ সেটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। অন্যদিকে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী খাতভিত্তিক বিভিন্ন শেয়ারে বিনিয়োগের মাধ্যমে অবস্থান নিচ্ছেন। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশকে সামনে রেখে কেউ কেউ এসব শেয়ারের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুর পর ঘণ্টা মিনিট পর্যন্ত সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। সময়ে প্রায় ৪৯ পয়েন্ট যোগ হয় সূচকে। এর পর থেকে শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিনশেষে হাজার ৫৫ দশমিক ৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স, যা আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৫৫ দশমিক ২৭  পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, এসএস স্টিল বিএসআরএম লিমিটেডের শেয়ার।

ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিনশেষে দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৫০৬ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ৫০৫ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে প্রায় পয়েন্ট কমে গতকাল হাজার ৫৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৬০৮ পয়েন্টে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে হাজার ৭১২ কোটি টাকা। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১৮৪টির, কমেছে ১৪৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৩টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ দখলে নিয়েছে বস্ত্র খাত। ১০ দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। চতুর্থ অবস্থানে থাকা ওষুধ রসায়ন খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। জীবন বীমা খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল জীবন বীমা খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নের শীর্ষে ছিল সিরামিক খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), বেক্সিমকো লিমিটেড, সাইফ পাওয়ারটেক, জিপিএইচ ইস্পাত, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পাওয়ার গ্রিড, জিএসপি ফাইন্যান্স, ফরচুন সুজ, আরএকে সিরামিক প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল।

গতকাল ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল দেশ গার্মেন্টস, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, এসএস স্টিল, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, শমরিতা হসপিটাল, অগ্নি সিস্টেমস, মেট্রো স্পিনিং ফার্মা এইডস। অন্যদিকে গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর কমার শীর্ষে থাকা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে আনলিমা ইয়ার্ন, আজিজ পাইপস, ইনফরমেশন টেকনোলজি কনসালট্যান্টস, তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, এশিয়ান ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি।

সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে দশমিক পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ৪১০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১২ হাজার ৪০৫ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল পয়েন্ট বেড়ে ২০ হাজার ৬৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ২০ হাজার ৬৫১ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩০৭টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৮টির, কমেছে ১১০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন