অর্থবছরের প্রথমার্ধ

ইউরোপের চেয়ে পোশাক রফতানির গতি বেশি রাশিয়া-মেক্সিকো-ভারতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমূল্য বিবেচনায় আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া পণ্যের ৮০ শতাংশের বেশি হলো তৈরি পোশাক। পণ্যের প্রধান রফতানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো। দেশভিত্তিক পরিসংখ্যান সংকলনে দেখা যাচ্ছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ইউরোপের চেয়ে ভারত, রাশিয়া মেক্সিকোর মতো অপ্রচলিত বাজারে রফতানির গতি বেশি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অধীনস্থ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যার হালনাগাদ থেকে পোশাকের দেশভিত্তিক রফতানির সংকলন করে পণ্যটি প্রস্তুত রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এতে দেখা যাচ্ছে, পোশাকের অন্যতম প্রধান বাজার ইউরোপের চেয়ে তুলনামূলক অপ্রচলিত বাজারে রফতানি প্রবৃদ্ধি বেশি।

একক দেশ হিসেবে পোশাক রফতানির প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত ২০২০-২১ অর্থবছরেও দেশটিতে গিয়েছিল পোশাকের মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। অঞ্চলভিত্তিক বিবেচনায় ইউরোপের ২৭টি দেশে গিয়েছিল ৬১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর ভারত, রাশিয়া জাপানসহ তুলনামূলক অপ্রচলিত বাজারে যায় পোশাকের মোট রফতানির ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ।

চলমান ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধ জুলাই থেকে ডিসেম্বরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, রফতানি প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি এমন দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রফতানি বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। কানাডাতে বেড়েছে ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ইউরোপের ২৭টি দেশে রফতানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

বিজিএমইএর সংকলন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া পোশাকের অপ্রচলিত বাজার আটটি। ভারত, রাশিয়া, জাপানসহ বাজারগুলোর মধ্যে আছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চিলি, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা তুরস্ক। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ভারতে বেড়েছে ৫৮ দশমিক শূন্য শতাংশ, রাশিয়াতে ৩৮ দশমিক ১০ শতাংশ এবং মেক্সিকোতে বেড়েছে ৬৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ইউরোপের চেয়ে রফতানি প্রবৃদ্ধি বেশি হয়েছে ভারত রাশিয়ার মতো অপ্রচলিত বাজারগুলোতে। আটটি বাজারে মোট রফতানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৬ শতাংশ।

অপ্রচলিত আট বাজারের মধ্যে পোশাক রফতানি সবচেয়ে বেশি হয় জাপানে। দেশটিতে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রফতানি হয়েছে ৫২ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছে ৪৪ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার ডলারের। জাপানের পরই সবচেয়ে বড় অপ্রচলিত পোশাক রফতানির বাজার অস্ট্রেলিয়া। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে দেশটিতে রফতানি হয়েছে ৩৯ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি ছিল ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলারের। রাশিয়াতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি হয়েছে ৩৪ কোটি ১২ লাখ ১০ হাজার ডলারের পোশাক। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ২৪ কোটি ৭০ লাখ ৬০ হাজার ডলারের।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ভারতে পোশাক রফতানি হয়েছে ৩৬ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছে ২৩ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার ডলারের। দক্ষিণ কোরিয়ার চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রফতানি হয়েছে ১৮ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের পোশাক। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয় ১৫ কোটি লাখ ৮০ হাজার ডলারের। মেক্সিকোতে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি হয়েছে ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের পোশাক। গত ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয় কোটি ৩১ লাখ ডলারের।

বিজিএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল জানান, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের দেশভিত্তিক পোশাক রফতানির ডাটা অনুযায়ী, প্রধান বাজারগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি ঘুরে দাঁড়ানোর চিত্র ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি প্রায় ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপ কানাডার বাজারে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। স্পেন, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সসহ ইউরোপের প্রায় সব দেশে রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এছাড়া সময়ে অপ্রচলিত বাজারেও রফতানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে পোশাকের মোট রফতানি ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৯ দশমিক বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন