কভিড চিকিৎসায় আরো দুটি ওষুধের সুপারিশ

বণিক বার্তা ডেস্ক

করোনা চিকিৎসায় ব্যারিসিটিনিব সোট্রোভিমাব নামের দুটি ওষুধের নাম সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, কভিড-১৯-এর যেসব গুরুতর রোগী রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে ব্যারিসিটিনিব ওষুধটি ব্যবহার করা যাবে।

ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি জানুস কিনেস (জেএকে) ইনহিবিটর শ্রেণীর ওষুধ। ব্যারিসিটিনিব মূলত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। ওষুধ সেবনে গুরুতর কভিড-১৯ রোগীরা ভেন্টিলেশনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পায়। এছাড়া এসব রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কাও কম বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে অনুমোদন দেয় আর্থ্রাইটিসের আরো দুটি ওষুধ টসিলিজুম্যাব সেরিলোম্যাব। নতুন অনুমোদন পাওয়া ব্যারিসিটিনিব আগেরগুলো থেকে কিছুটা আলাদা বলে জানায় সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচওর বিবৃতিতে দ্বিতীয় সুপারিশকৃত ওষুধ সোট্রোভিমাব সম্পর্কে বলা হয়, যেসব ব্যক্তি কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার উচ্চঝুঁকিতে রয়েছেন, এসব রোগী যদি হালকা বা মাঝারি কভিডে আক্রান্ত হন তাদের চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ড্রাগ সোট্রোভিমাব ওষুধ ব্যবহার করা যাবে।

এতে আরো বলা হয়, বয়স্ক, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ স্থূলতার মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত রোগীরাও যদি হালকা বা মাঝারি কভিডে আক্রান্ত হন, তাহলে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া যাদের টিকা দেয়া হয়নি তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা করেছে ডব্লিউএইচও। সোট্রোভিমাব ওষুধটি মূলত সিনথেটিক অ্যান্টিবডি তৈরি করে।

গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, সোট্রোভিমাব ওষুধ ব্যবহারে হালকা বা মাঝারি কভিড-১৯ থেকে তীব্র কভিডে রূপান্তরিত হওয়ার ঝুঁকি ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনে। পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্য সরকার এটিকে কভিড-১৯ চিকিৎসায় জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। তবে সোট্রোভিমাব ওষুধটি তীব্র কভিডে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

ডব্লিউএইচও জানায়, সোট্রোভিমাব হলো ক্যাসিরিভিমাব-ইমদেভিমাবের একটি বিকল্প। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডব্লিউএইচওর সুপারিশকৃত একটি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল। তবে কভিডের রূপান্তরিত নতুন ধরন ওমিক্রনের বিরুদ্ধে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। প্রাথমিক গবেষণায় সোট্রোভিমাব তার কার্যকারিতা ধরে রেখেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ব্যারিসিটিনিব সোট্রোভিমাবের পাশাপাশি গুরুতর কভিড-১৯ চিকিৎসায় আরো দুটি ওষুধের দিকে নজর দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা। এগুলো হলো রুক্সোলিটিনিব টোফাসিটিনিব।  তবে এগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত নন তারা। তাই ডব্লিউএইচও কভিড-১৯ চিকিৎসায় ওষুধগুলো শর্তসাপেক্ষে সুপারিশ করেছে।

নতুন সুপারিশ করা ওষুধ দুটি হাজারের বেশি  -গুরুতর গুরুতর কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর ওপর ট্রায়াল চালানো হয়েছে। ডব্লিউএইচওর নির্দেশিকা অষ্টমবারের মতো হালনাগাদ হয়েছে।

এদিকে নতুন সুপারিশকৃত ওষুধ ন্যায়সংগত টেকসই নিশ্চিত করতে ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এছাড়া ধনী দেশগুলোর পাশাপাশি এসব ওষুধ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ব্যবহার নিশ্চিত করতে ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছে সংস্থাটি। যাতে সর্বত্র দ্রুতই এটি পৌঁছাতে পারে।

নতুন প্রস্তাবিত দুটি ওষুধ ব্যারিসিটিনিব সোট্রোভিমাবকে প্রাথমিক নিরীক্ষার জন্য নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ব্যবহারের সুপারিশ করেছে ডব্লিউএইচও।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন