শেষ হলো প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

প্রচারণার শেষ দিনে গতকাল নির্বাচনী সমাবেশে সেলিনা হায়াৎ আইভী। সংবাদ সম্মেলনে তৈমুর আলম খন্দকার ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণার সময় শেষ হয়েছে গতকাল মধ্যরাতে। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটার আকৃষ্ট করতে দিয়েছেন নানা উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতি।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী অভিযোগ করে বলেন, আমাকে পরাজিত করার জন্য অনেকগুলো পক্ষ এক হয়ে গিয়েছে। সেই পক্ষগুলো ঘরের হতে পারে, বাইরের হতে পারে। সবাই মিলেমিশে চেষ্টা করছে কীভাবে আমাকে পরাজিত করা যায়। তিনি বলেন, সহিংসতা যারা করে তারা ঘর বা বাইরে বোঝে না।  কীভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ভোটটাকে ঝামেলা করা যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। আইভী জোর দিয়ে বলেন, সবাই জানে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।

সেলিনা হায়াৎ আইভীকে কেন্দ্রের নেতাদের শক্তি ব্যবহার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে হয়তো একটি দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন কারণে আসছে তারা। কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, ওনারা কিন্তু আইভী কীভাবে রাজনীতি করে ভোটারদের কাছে যায়এটি যদি না জানতেন তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সময়ে আমাকে নৌকা দিতেন না। জনগণই আমার শক্তির উৎস। এছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তাই আমি বারবার জনগণের কাছে ফিরে যাই।

আইভী বলেন, নেতারা আসতেই পারেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর আওয়ামী লীগ কী করছে সেটি জানার জন্য। তারা হয়তো পর্যবেক্ষণ করছেন, কিন্তু আমাকে তারা ফ্রি করে দিয়েছেন। আমি প্রতিদিন আমার ভোটারদের কাছে গিয়েছি।

এদিকে শেষদিনের প্রচারণা শেষে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, রাস্তা বন্ধ করে নির্বাচনী শোডাউন করার কোনো বিধান নেই। এটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, নারায়ণগঞ্জের ডিসি-এসপির। তারা এটা দেখে না। সরকারি প্রার্থী প্রতিদিন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। সেটা তারা দেখে না। উল্টো আমার যারা নির্বাচনী এজেন্ট-কর্মী, তাদের ওপর প্রতিদিন পুলিশ ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এতে আমার নেতাকর্মীরা আরো ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আমার এজেন্টরা যেকোনো পরিস্থিতিতে কেন্দ্রে থাকবে এবং তারা রেজাল্ট নিয়ে আসবে।

তৈমুর আলম বলেছেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। আমি ঢাকা থেকে লোক আনি না, নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ধমক দেয়ার জন্য। তারা বলছে ঘুঘু দেখেছ ঘুঘুর ফাঁদ দেখোনি। আমি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘুঘুর ফাঁদ দেখা শুরু করেছি। গ্রেফতার যে হচ্ছে না, এটা এসপি অস্বীকার করতে পারে না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমার নেতাকর্মীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। টেলিফোনেও তাদের থ্রেড দেয়া হচ্ছে। এটা নির্বাচনের আচরণবিধি চরম লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনগণ তাদের মনের মতো প্রার্থী খুঁজেছিল। তারা সে প্রার্থী পেয়েছে। জনগণও নির্বাচনে ব্যাপক সাড়া দিয়েছে। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও সব দলের নেতাকর্মীরা আমার প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করছে। আপনারা দেখেছেন আমি স্বাস্থ্যবিধির কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে ছোট আকারে প্রচার করি। যখন আমি মিছিল করেছি, তখন দেখেছেন ব্যাপকসংখ্যক নেতাকর্মী জনসাধারণ আমার পাশে ছিল। গত পরশু আমাদের যে পথসভা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জে স্মরণকালে এত বড় পথসভা হয়নি।

তিনি বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে নির্বাচন করছে। সরকারের যারা মেহমান আছেন তাদের বক্তব্য নানা জটিলতা সৃষ্টি করে। নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ব্যথা দিয়ে তারা এমন ভয়ভীতি দেখায়। গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে জাহাঙ্গীর কবির নানক। আমি মনে করি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে তারা     এসব করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন