ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ থেকে

করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামীকাল (১৬ জানুয়ারি) নাসিক নির্বাচনের ভোট নেয়া হবে। এরই মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল প্রার্থীরা শেষদিনের মতো প্রচারণা চালিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এবার নাসিক নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রে হাজার ৩৩৩ বুথে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের নয়জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পাঁচজন সহকারী কর্মকর্তা ভোটের দিন দায়িত্ব পালন করবেন। 

ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মাফুজা আক্তার বণিক বার্তাকে বলেন, নাসিক নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমাদের ইভিএম প্রচারণা চলছে এবং আজ (শুক্রবার) মক ভোটিংও হয়েছে। আগামীকাল আমরা কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেব।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর দেশের অন্যান্য নির্বাচনের চেয়ে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনকে আমরা বিশেষভাবে দেখে থাকি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারাও প্রস্তুত রয়েছেন। সবার সহযোগিতা নিয়ে আগামীকালের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এর আগে নাসিক নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা দুই দিনের জন্য নারায়ণগঞ্জ এসেছিলেন। তিনি নাসিক নির্বাচনের দায়িত্ব পাওয়া প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদর সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদের দিকনির্দেশনাও দেন। এছাড়াও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।

নির্বাচনের ভোটারদের আশ্বস্ত করে নূরুল হুদা বলেন, ভোটারের থেকে নিরাপত্তা বাহিনী বেশি থাকবে। পুলিশের বিশেষ বাহিনী এদিন ভোটকেন্দ্রগুলো পাহারা দেবে। দেশবাসী ভালো ভোট দেখবে। সময় ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আদর্শের জায়গা পরিহার করে প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশনে এবার মেয়র পদে লড়ছেন সাতজন প্রার্থী। তারা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), খেলাফত মজলিসের প্রার্থী এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়াল ঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার (হাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ (হাত পাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ রাশেদ ফেরদৌস (হাত ঘড়ি) স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম বাবু (ঘোড়া) এছাড়া নির্বাচনে সিটি করপোরেশনের ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে এবং নয়টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন লড়ছেন ভোটের মাঠে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা লাখ ১৭ হাজার ৩৫৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৪ নারী ভোটার লাখ ৫৭ হাজার ৫১৯ জন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে সিটিতে ভোটার ছিল লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। সে হিসেবে এবার নতুন ভোটার ৪২ হাজার ৪২৬, যা মোট ভোটারের প্রায় সাড়ে শতাংশ।

স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচনে মূল লড়াই হবে সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে তৈমুর আলম খন্দকারের। স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর মূলত বিএনপি নেতা। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন। কারণে দল থেকে বহিষ্কৃতও হয়েছেন।

গত ৩০ নভেম্বর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এবার তৃতীয়বারের মতো ভোট হচ্ছে সিটিতে। এর আগে দুবারই ভোটে জিতেছিলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন