বিবিয়ানায় সংস্কারকাজ

শিল্প-আবাসিকসহ সব খাতে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সিলেটের বিবিয়ানায় সংস্কারকাজের জন্য গ্যাস সরবরাহ সংকট দেখা দিতে পারে। ১২-২১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১০ দিন সংকট থাকবে বলে জ্বালানি বিভাগ পেট্রোবাংলার বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এরই মধ্যে তিতাস এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরবরাহ সংকটের কথাও জানিয়েছে। উৎপাদন সংকটে পড়লে দেশের শিল্প, আবাসিক-বাণিজ্যিকসহ সব শ্রেণীর গ্রাহক গ্যাস সংকটে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে পেট্রোবাংলা বলছে, গ্যাসক্ষেত্র সংস্কারকাজের জন্য নিয়মিত সরবরাহের চেয়ে কিছুটা কম গ্যাস পাবে বিতরণ কোম্পানিগুলো। প্রতিদিন যে পরিমাণ গ্যাস উৎপাদন হবে তার পরিমাণ হিসাবে করে সব কোম্পানিকে আনুপাতিক হারে বিতরণ করা হবে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বণিক বার্তাকে বলেন, বিবিয়ানায় গ্যাসক্ষেত্রে টিউবিংয়ের কাজ চলছে। সংস্কারকাজের জন্য গ্যাস উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে। এর কারণে যে গ্যাসের চাপ কমে যাবে এমনটি নয়, কম-বেশি হতে পারে। তবে গ্যাস সরবরাহ কমতে পারে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। ফলে সরবরাহ লাইনে আগে যা দেয়া হতো তার চেয়ে একটু হয়তো কমে যাবে।

এলএনজি নিয়ে বিদ্যমান সংকটের মধ্যে দেশের অবকাঠামোগত ত্রুটিতে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে নানামুখী ভোগান্তিতে রয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এর আগে ১৮ নভেম্বর সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের (এফএসআরইউ) মুরিং পয়েন্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে ৪৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ হচ্ছে। মুরিং পয়েন্ট সংস্কারকাজের জন্য চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকার কথা বলা হলেও এখন সে সময় আরো বাড়বে।

পেট্রোবাংলা বলছে, সামিটের এফএসআরইউ চালু করতে চলতি মাসের শেষ অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। ফলে এলএনজি সরবরাহ আগের অবস্থায় ফিরতে হলে আরো অন্তত ১৫-২০ দিন বেশি সময় লেগে যেতে পারে।

দেশের গ্যাসক্ষেত্র আমদানীকৃত এলএনজি মিলিয়ে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে ২৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস আসত মহেশখালীতে অবস্থিত দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে। তবে গত নভেম্বরে সামিটের ভাসমান টার্মিনালের মুরিং পয়েন্ট বিকল হওয়ায় গ্রিডে ৪০-৪৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস কমে যায়।

এদিকে বিবিয়ানা সংস্কারকাজের জন্য প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে প্রায় ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ হবে বলে জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

১২ জানুয়ারি থেকে গ্যাস সংকটের আভাস দেয়া হলেও রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে গ্যাসের চাপ কম হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে শিল্প এলাকায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা গ্যাসের চাপ কম পাচ্ছে।

রাজধানীতে গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে তিতাস। গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকেও শীর্ষ অবস্থানে কোম্পানিটি। গ্যাসের চাপ কমে গেলে বা কোন কোন এলাকায় কম হবে জানতে চাইলে তিতাসের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, এখন ঠিক কোন কোন এলাকায় প্রভাব পড়বে বা আদৌ পড়বে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। যেটুকু গ্যাস কম পড়বে তা বিতরণে রেশনিং করা গেলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন