সিরাজগঞ্জে আবারো বেড়েছে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জে চুরি হয়ে যাওয়া মিটারের অংশ ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

সিরাজগঞ্জে আবারো বিদ্যুতের মিটার ট্রান্সফরমার চুরি বেড়েছে। এর আগে প্রায় তিন বছর আগে জেলার কামারখন্দ এলাকায় গণহারে বিদ্যুতের মিটার ট্রান্সফরমার চুরি শুরু হলে পুলিশি তত্পরতায় তা বন্ধ হয়। সম্প্রতি আবারো বিদ্যুতের মিটার ট্রান্সফরমার চুরি বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন কৃষক এবং চালকল মালিকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত এক মাসে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি--এর আওতায় শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া রায়গঞ্জ উপজেলায় ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে ১২টি।

সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি--এর আওতায় কামারখন্দ উপজেলায় শিল্প মিটার চুরি হয়েছে ১৭টি। সর্বশেষ জানুয়ারি রাতে কামারখন্দ থানার ৫০০ গজ দূরত্বের মধ্যেই চুরি হয়েছে ১৩টি মিটার। অন্য চারটি চুরি হয়েছে কামারখন্দ উপজেলার চর ধোপাকান্দি এলাকায়।

এদিকে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি--এর আওতায় চুরি যাওয়া ১৭টি মিটারই চালকলের আর চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারগুলোর বেশির ভাগই সেচকাজের সঙ্গে সংযোগ করা। মিটার চুরি হওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে চালকলগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে ধান সিদ্ধ করা থেকে শুরু করে চাল তৈরির সব ধরনের প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন চালকল মালিকরা।

কামারখন্দ গ্রামের চালকল মালিক সাগর আলী জানান, দুই বছর আগে মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছিল। সম্প্রতি আবার মিটার চুরি বেড়েছে। এর আগে তার মিটার চুরি করে নেয়ার পর চোরচক্র মিটার ফ্রেমে একটি টোকেনে বিকাশ নম্বর রেখে যায়। সেই নম্বরে পরদিন সকালে যোগাযোগ করা হলে চক্রের এক সদস্য তিনটি মিটারের জন্য হাজার টাকা করে দাবি করেন। পরে প্রতিটি মিটারে হাজার করে  মোট হাজার টাকা দিলে আমার চালকলের পাশে বালির স্তূপে মিটারগুলো রাখা আছে বলে জানায় চোর চক্রের সদস্যরা। পরে সেখান থেকে মিটার উদ্ধার করা হলেও বিদ্যুতের সংযোগ না পেয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে ধরনা দিতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যুতের লাইন চালু থাকা অবস্থায় সাধারণ মানুষের পক্ষে মিটার চুরি সম্ভব নয়। পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যানদের সঙ্গে বাইরের শ্রমিক যারা কাজ করেন তারা মিটার চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হলে এভাবে মিটার ট্রান্সফরমার চুরি সম্ভব নয়।

কামারখন্দ উপজেলার কর্ণসূতি গ্রামের চালকল মালিক রফিকুল ইসলাম  বলেন, এর আগেও মিটার চুরি হয়েছে। আবার নতুন করে মিটার চুরি শুরু হয়েছে। কারণে আতঙ্কে আছি, কখন যেন আমার মিটারটিও চুরি হয়ে যায়।  তাই মিটার চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে।

ব্যাপারে কামারখন্দ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর বলেন, মিটার চুরির বিষয়টি এই এলাকায় নতুন কিছু নয়। এর আগেও মিটার চোরচক্রের চার সদস্যকে ঢাকার সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের গ্রেফতারের পর এলাকায় গত প্রায় দুই বছরে মিটার চুরির ঘটনা ঘটেনি। সম্প্রতি মিটার চুরির অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশের পক্ষ থেকে আগের মতো এবারও আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে চোরচক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি--এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অখীল কুমার সাহা জানান, কামারখন্দ এলাকায় ১৭টি মিটার চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।  এছাড়া মিটার চুরির সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত কিনা, সেটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মিটার চুরি রোধে মাইকিংসহ লিফলেট বিতরণ গ্রাহকদের মিটার পাহারা দেয়ার জন্য বলা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন