সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার

সিরামিক, পেপার ও চামড়া খাতে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন বছরের শুরু থেকেই দেশের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। যার প্রভাব পড়েছে সাপ্তাহিক লেনদেন সূচকে। গত সপ্তাহে চাঙ্গা ভাব ধরে রেখেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সময়ে এক্সচেঞ্জটির লেনদেন বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। বাজার মূলধন বেড়েছে শতাংশের বেশি। সাপ্তাহিক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে সব সূচকও। অন্যদিকে গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে সিরামিক, পেপার চামড়া খাতে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক লেনদেন দুটোই বেড়েছে। 

পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকেই বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। মুনাফা লাভের আশায় বাজারে নতুন করে বিনিয়োগের প্রবণতাও লক্ষণীয়। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের চাপে অধিকাংশ সরকারি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। যার সার্বিক প্রভাব পড়েছে সূচক লেনদেনে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইতে খাতভিত্তিক ইতিবাচক রিটার্নে শীর্ষে ছিল সিরামিক খাত। খাতটিতে গত সপ্তাহে রিটার্ন এসেছে ১৫ দশমিক শতাংশ। এরপরে রয়েছে পেপার খাত, শতাংশ। তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা চামড়া খাতের ইতিবাচক রিটার্ন হয়েছে দশমিক শতাংশ। এছাড়া টেলিকম দশমিক শতাংশ, বিদ্যুৎ জ্বালানি শতাংশ, পাট শতাংশ, বিবিধ এবং ওষুধ রসায়ন খাতে দশমিক শতাংশ করে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে।

গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট হাজার ৮৩২ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন ছিল হাজার ৪৮৮ কোটি টাকার বেশি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন বেড়েছে হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার বেশি বা ২০ দশমিক ৭২ শতাংশ। সময়ে টাকার অংকে ডিএসইর গড় লেনদেনও বেড়েছে। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে হাজার ৫৬৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল হাজার ৩০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। সপ্তাহের ব্যবধানে গড় লেনদেন বেড়েছে প্রায় ২৬৯ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটির খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে ছিল বিদ্যুৎ জ্বালানি খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ শতাংশ ছিল খাতটির দখলে। ১১ দশমিক শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক শতংশ নিয়ে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে প্রকৌশল খাত। পরের অবস্থানে থাকা ওষুধ রসায়ন খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশ। পঞ্চম স্থানে রয়েছে সাধারণ বীমা খাত। খাতটির লেনদেন ছিল দশমিক শতাংশ। এছাড়া পরের অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র, ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। খাত তিনটির লেনদেন হয়েছে যথাক্রমে দশমিক শতাংশ, দশমিক দশমিক শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইর সব সূচকেই পয়েন্ট যোগ হয়েছে। এর মধ্যে সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে হাজার ১৭ পয়েন্টে। যেখানে আগের সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৯৮৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে। সূচকটির উত্থানে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল স্কয়ার ফার্মা, তিতাস গ্যাস, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) গ্রামীণফোনের শেয়ারের।

ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ১৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে হাজার ৬১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৬০৩ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২৯ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য শতাংশ বেড়ে হাজার ৫০১ দশমিক ৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৪৭২ পয়েন্টে।

গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে দশমিক ২৫ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন ছিল লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। সপ্তাহ শেষে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৮৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ২১৯টির, অপরিবর্তিত ছিল ১৯টির। আর লেনদেন হয়নি ৫টির শেয়ার।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে সমাপনী দরের ভিত্তিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানি হলো ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রংপুর ফাউন্ড্রি, এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি (প্রাণ), বসুন্ধরা পেপার মিলস, আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ), তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসি, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ওয়াটা কেমিক্যালস।

অন্যদিকে সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ২৬২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন ছিল ১৭৬ কোটি টাকার। গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে ২০ হাজার ৫৪৫ দশমিক ৯১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ২০ হাজার ৪৯৫ পয়েন্টে। আলোচ্য সময়ে সিএসইতে মোট ৩৪৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৪টির। কমেছে ২০৩টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ১৬টির শেয়ারদর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন