গত বছর মোবাইল অ্যাপে ভোক্তাব্যয় ১৭ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। আগের বছরের তুলনায় তা বেড়েছে ১৯ শতাংশ। অ্যাপ অ্যানির ‘স্ট্যাট অব মোবাইল ২০২২’
প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর টেক ক্রাঞ্চ ও বিজনেস টুডে।
আইওএস, গুগল প্লেসহ চীনে থার্ড পার্টি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে ভোক্তাব্যয় বেড়েছে। অ্যাপ অ্যানির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ভোক্তারা বিভিন্ন অ্যাপে রেকর্ড ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঘণ্টা সময় ব্যয় করেছেন। গবেষণা সংস্থাটির শীর্ষ নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) থিওডর ক্রান্টজ জানান, সর্বকালের সেরা ডিভাইস হিসেবে দাঁড়িয়েছে মোবাইল। বড় স্ক্রিনের ব্যবহার তুলনামূলক কমেছে এবং মোবাইল স্ক্রিন নির্ভরতা রেকর্ড সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছে। সময় কাটানো, ডাউনলোড এবং আয়ের দিক থেকে সর্ব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে সেলফোন।
২০২১ সালে সর্বাধিক ডাউনলোড হওয়া শীর্ষ পাঁচ অ্যাপ হচ্ছে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম। ভোক্তাদের সময় কাটানোর দিক থেকে শীর্ষে ছিল টিকটক, ইউটিউব, টিন্ডার, টেনসেন্ট ভিডিও, ডিজনি প্লাস ও টেনসেন্ট ভিডিও।
প্রকাশক হিসেবে ডাউনলোডে শীর্ষ পাঁচ কোম্পানি যথাক্রমে গুগল (শীর্ষ অ্যাপ গুগল মিট), মেটা
(শীর্ষ অ্যাপ ইনস্টাগ্রাম), বাইটডান্স
(শীর্ষ অ্যাপ টিকটক), মাইক্রোসফট
(শীর্ষ অ্যাপ টিমস) ও ইনশট। ভোক্তাব্যয়ের দিক থেকে শীর্ষ প্রকাশক কোম্পানিগুলো যথাক্রমে গুগল, ম্যাচ গ্রুপ, টেনসেন্ট, ডিজনি ও বাইটডান্স।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বের শীর্ষ ১০ মোবাইল মার্কেটে সাধারণ ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন গড়ে ৪ দশমিক ৮ ঘণ্টা ব্যয় করেছেন। প্রতি ১০ মিনিটের ৭ মিনিটই কেটেছে কোনো সোস্যাল, ফটো বা ভিডিও অ্যাপে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছে টিকটক। চীনের বাইরে গত বছর টিকটকের বাজার ৯০ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়েছে।
ডাউনলোড প্রবৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দিয়েছে ভারতের মতো উদীয়মান বাজার। এছাড়া পাকিস্তান, পেরু, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও মিসরেও ডাউনলোডের হার বেড়েছে। গত বছর মোবাইলে ডাউনলোড ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার কোটি।
২০২১ সালে ২০ লাখ নতুন অ্যাপ ও গেম উন্মোচন করেছেন ডেভেলপাররা। সব মিলিয়ে বিভিন্ন অ্যাপ ও গেমের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ। গত বছর রিলিজ হওয়া ৭৭ শতাংশ অ্যাপস ও গেমস ছিল গুগলের প্লেস্টোরের। অ্যাপ স্টোর ও গুগল প্লেতে নতুন রিলিজ হওয়া সার্ভিসের ১৫ শতাংশ ছিল গেমস। মোবাইল গেমিং থেকে আয় ১৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। গত বছর বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপে ভোক্তাব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪২০ কোটি ডলার। মহামারীপূর্ব ২০১৯ সালের তুলনায় যা বেড়েছে ৫৫ শতাংশ।
গত বছর ১০ কোটি ডলারের বেশি করে আয় করেছে ২৩৩টি অ্যাপস ও গেমস এবং ১০০ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছে ১৩টি অ্যাপস ও গেমস। ২০২০ সালের তুলনায় উচ্চ আয়কারী অ্যাপস ও গেমসের সংখ্যা বেড়েছে ২০ শতাংশ। ২০২০ সালে ১০ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছে ১৯৩টি অ্যাপস ও গেমস এবং ১০০ কোটি ডলারের বেশি আয়কারী অ্যাপস ও গেমসের সংখ্যা ছিল ৮।
বিশ্বব্যাপী ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে কাটানো সময় মহামারীপূর্ব সময়ের চেয়ে বেড়েছে ১৬ শতাংশ। তবে টিকটক ও কেওয়াইয়ের মতো শর্ট ভিডিও নির্ভরতা বৃদ্ধিতে চীনে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে সময় কাটানো কমেছে।
করোনাকালে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধিতে হেলথ ও ফিটনেস অ্যাপ ডাউনলোড ২০২০ সালে রেকর্ড সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু গত বছর বেশির ভাগ দেশেই হেলথ ও ফিটনেস অ্যাপ ডাউনলোড ২০২০-এর তুলনায় কম ছিল। অবশ্য শীর্ষ পাঁচ মেডিটেশন অ্যাপে ২০২১ সালে ভোক্তাব্যয় ২০২০-এর তুলনায় বেড়েছে ২৭ শতাংশ।