ভ্যান গগে মুগ্ধ জয়া আহসান

ফিচার প্রতিবেদক

লন্ডনে ভ্যান গগ মিউজিয়ামে জয়া আহসান

নেদারল্যান্ডসে জন্ম নেয়া এক অসাধারণ শিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গগ, যার প্রেমে মগ্ন পৃথিবীর সব শিল্পবোদ্ধা। বাংলাদেশের গীতিকবি শিবলী ভ্যান গগকে বলেছেন চিরদুখী লিখেছিলেন, প্যারিসের কনসার্টে যতবার মোৎসার্ট কিংবা বিতোভেন শুনেছি, ততবারই কেন যেন চিরদুখী পাগল ভ্যান গগকে মনে পড়েছে।

সেই ভ্যান গগেই মুগ্ধ জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। মুহূর্তে লন্ডনে রয়েছেন জয়া। ভ্যান গগের আলোয় তার সৃষ্টিতে মেতে উঠলেন, মজে গেলেন। সামাজিক মাধ্যমে বেশকিছু ভিডিও ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, লন্ডনে দিনটা কেমন ভ্যান গগে মুড়ে রইল। আলোর বিচ্ছুরণে চারপাশে ফুটে উঠল তার জীবন, তার শিল্প, তার ব্যথার গল্প, তার তীব্র আবেগমাখা রঙ। বিষণ্ন আলোয় মনটা ভরে গেল।

ভ্যান গগের প্রেমে মত্ত জয়ার নতুন বছরে নতুন পরিচয় যুক্ত হয়েছে। ২০২২ সালটা শুরু করেছেন দারুণ এক সুখবর দিয়ে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন তিনি। ২০২২ সালের প্রথম দিন, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকেই দায়িত্ব পালন করবেন দেবীখ্যাত অভিনেত্রী। আগামী এক বছরের জন্য দায়িত্ব পেয়েছেন জয়া।

শুভেচ্ছা দূত হওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে জয়া বলেন, ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হতে পেরে একদিকে যেমন আনন্দ হচ্ছে, অন্যদিকে সম্মানিত বোধ করছি। সুন্দর পৃথিবীকে রক্ষা করার বিষয়ে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা ২০৩০ সালের মধ্যেই অর্জন করতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি কাজের মধ্য দিয়ে বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করব। আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশসহ বিশ্বকে আরো সুন্দর সহনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। এই পৃথিবীকে সুন্দর বাসযোগ্য করে তোলা আমাদের সবার অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকার রক্ষা করতে হলে আমাদের সবাইকে যার যার দায়িত্ব পালন করতেই হবে।

সময় ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, পৃথিবীকে সুন্দর বাসযোগ্য করে তোলা আমাদের সবার অঙ্গীকার। আর অঙ্গীকার রক্ষা করতে হলে আমাদের সবাইকে যার যার দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবেই কেবল এসডিজি অর্জন করা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, জয়া আহসান শুধু একজন জনপ্রিয় শিল্পী নন, পাশাপাশি সমাজ উন্নয়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এমন একজন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হওয়ায় আমরা সৌভাগ্যবান। তার মাধ্যমে আমাদের কথা এখন দেশ দেশের বাইরে মানুষকে আরো বেশি করে পৌঁছানো যাবে।

অবশ্য বছরের শেষটাও দারুণ কেটেছে জয়ার। বিশেষ করে কলকাতায়। গত বছরের শেষের দিকে মুক্তি পায় বিনিসুতোয়। হূত্বিক চক্রবর্তীর সঙ্গে জুটি বেঁধে দারুণ প্রশংসিত হন। বছরের একেবারে শেষের দিকে যুক্ত হন নতুন সিনেমায়। কালান্তরবঙ্গভঙ্গের বিপ্লবী যুগ নামের সিনেমায় জয়াকে দেখা যাবে বিপ্লবীর ভূমিকায়। সিনেমার চিত্রনাট্যকার পরিচালক কলকাতার পেন্ডুলাম রক্তরহস্য খ্যাত সৌকর্য ঘোষাল।

বঙ্গভঙ্গের সময়কার প্রেক্ষাপটে নতুন ছবির গল্প বুনেছেন পরিচালক। সিনেমা নিয়ে পরিচালক সৌকর্য বলেন, আমি ইতিহাসের ছাত্র, তাই চাইনি আমার সিনেমায় ইতিহাসে কোনো ভুল থাকুক। অরবিন্দ ঘোষ বা বাঘা যতীনের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীর সঙ্গে সিনেমায় উঠে আসবেন এমন বহু বিপ্লবী, যাদের নাম অনেকে জানেন না। ইতিহাসে তারা উপেক্ষিত। ১৯০৫ সালে ইংরেজরা যখন বাংলা ভাগ করার পরিকল্পনা করছে, তখন বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর এর বিরোধিতা করে। বাংলায় সশস্ত্র বিপ্লব শুরু হয় মূলত অরবিন্দ ঘোষের নেতৃত্বে। সেই বিক্ষুব্ধ সময়টাকে ধরার চেষ্টা করব সিনেমায়।

সিনেমায় এক বিপ্লবীর চরিত্রে অভিনয় করছেন জয়া। বাঘা যতীন অরবিন্দের চরিত্রে কলকাতার নবাগত অভিনেতাদের দেখা যাবে। দুই চরিত্রে অভিনেতা নির্বাচনে মুখের মিলকে প্রাধান্য দিয়েছেন বলে জানান পরিচালক। এর আগে সৌকর্যের পরিচালনায় ভূতপরী ওসিডিতে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। ঐতিহাসিক চরিত্রের পাশাপাশি কাল্পনিক চরিত্র মিশিয়ে লেখা হয়েছে কালান্তর সিনেমার গল্প। জয়া আহসান ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন কৌশিক সেন, চন্দন রায় সান্যাল, ঋদ্ধি সেন, সুরঙ্গনা ব্যানার্জি প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন