করোনা মহামারীতে ঢাকার বাস ও লেগুনার শ্রমিক, সস্তা হোটেল ও রেস্তোরাঁ কর্মী এবং খুচরা দোকান শ্রমিকদের আয় ৮১ শতাংশ কমেছে। আলাদাভাবে এ হার পরিবহন শ্রমিকদের ৯৬ শতাংশ, খাবার হোটেল কর্মীদের ৮৩ এবং খুচরা দোকান শ্রমিকদের ৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
‘ঢাকার খাবার হোটেল, নির্মাণ শ্রমিক ও বাস-লেগুনার শ্রমিকদের ওপর লকডাউনের প্রভাব নিরূপণ’ শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস্) এ গবেষণা করে। গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয় গত বছরের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে। এর কার্যক্রম শেষ হয় ডিসেম্বরে।
গতকাল ধানমন্ডিতে বিলসে্র কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিলসে্র ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিন, পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ এবং নাজমা ইয়াসমীন উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, মহামারীতে এ তিন খাতে চাকরি হারিয়েছেন ৮৭ শতাংশ শ্রমিক। চাকরি হারানোদের মধ্যে ৯৩ শতাংশ চাকরি পেলেও ৭ শতাংশ এখনো বেকার। তবে এ সময় শ্রমিকদের খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছিল ২১৫ শতাংশ। তবে কার্যদিবস কমে গিয়েছিল ৭৩ শতাংশ, যার সবচেয়ে বেশি পরিবহন খাতে ৯২ শতাংশ। যেখানে করোনার আগে গড় মাসিক আয় ছিল একজন শ্রমিকের ১৩ হাজার ৫৭৮ টাকা, সেটি কমে গিয়ে ২ হাজার ৫২৪ টাকায় দাঁড়ায়। একই সঙ্গে লকডাউনের পর এ আয় ১২ হাজার ৫২৯ টাকা দাঁড়ায়। ফলে লকডাউন-পরবর্তী রিকভারিতে কাজের চাপ বাড়লেও আয় ঘাটতি থেকে যায় ৮ শতাংশ।
এসব শ্রমিকের পরিবারের আয়ও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। অনেকেই স্থায়ী সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবারের খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। পক্ষান্তরে এসব শ্রমিক কম মূল্যের খাদ্য ও নগদ টাকা সহায়তা পেয়েছেন। সেটিও ১ শতাংশের নিচে। এসব শ্রমিকের ৩৬ শতাংশ করোনা টিকা নিয়েছেন এবং ৬৪ শতাংশ এখনো টিকা নেননি।