পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের পারপেচুয়াল বন্ডের লেনদেন আজ থেকে শুরু হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ‘এন’ ক্যাটাগরিতে বন্ডটি লেনদেন করবে। এ বন্ডের ট্রেডিং কোড হবে ‘পিআরইবিপিবন্ড’। কোম্পানি কোড ‘২৬০০৯’। ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৮০১তম কমিশন সভায় প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকার এ বন্ড অনুমোদন দেয়া হয়। বন্ডটির বৈশিষ্ট্য হলো এটি আনসিকিউরড, কনটিনজেন্ট-কনভার্টিবল, পুরোপুরি পরিশোধিত, নন-কিউমুলেটিভ ও ব্যাসেল থ্রি কমপ্লায়েন্ট। বন্ডটির ১৮০ কোটি টাকা প্রাইভেট প্লেসমেন্ট ও বাকি ২০ কোটি টাকা পাবলিক অফারের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়েছে। বন্ডটির ইউনিটপ্রতি অভিহিত মূল্য ৫ হাজার টাকা। কুপন হার ৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ, যা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচুয়াল ফান্ড, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, তালিকাভুক্ত ব্যাংক, আঞ্চলিক রুরাল ব্যাংক, ট্রাস্ট, সংগঠন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য যোগ্য বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে ইস্যু করা হয়।
বন্ডটি ইস্যুর মাধ্যমে এডিশনাল টায়ার ওয়ান মূলধনের ভিত্তি শক্তিশালী করবে প্রিমিয়ার ব্যাংক। বন্ডের ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড। অ্যারেঞ্জার, ইস্যু ম্যানেজার ও আন্ডাররাইটার হিসেবে রয়েছে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ২৩ পয়সা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস ছিল ১ টাকা ৪০ পয়সা। অন্যদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬৫ পয়সায়। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৫১ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৫৮ পয়সায়।
সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক। এর মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ১৩ পয়সা। এর আগের হিসাব বছরে ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৪৪ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)।
এর আগের ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল প্রিমিয়ার ব্যাংক। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। ২০১৮ হিসাব বছরে ব্যাংকটি ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০১৭ হিসাব বছরে ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডাররা।
২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রিমিয়ার ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৪৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৯৯৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১০৪ কোটি ৩০ লাখ ৭০ হাজার ৭২৭। এর ৩৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৯ দশমিক ৫১, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ৯৫ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৪৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
ডিএসইতে গতকাল প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১৫ টাকা ১০ পয়সা। গতকাল শেয়ারটি ১০ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১৭ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১০ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১৭ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ৭ দশমিক শূন্য ৯, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত প্রান্তিক মুনাফার ভিত্তিতে যা ৫ দশমিক শূন্য ৮।