যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানি ৭২১ কোটি ডলার ছাড়াবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সদ্যসমাপ্ত বছরের ১১ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের তৈরি পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের হিসাবে এর পরিমাণ ৭২১ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে যুুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের অধীনস্থ অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটিইএক্সএ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য বিশ্লেষণ করে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা পোশাকের মধ্যে কটন ট্রাউজার, স্ল্যাকস, নিট শার্ট নিট ব্লাউজ উল্লেখযোগ্য। কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি খাত। সময় উৎপাদন অব্যাহত রাখলেও কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন পোশাক শিল্প মালিকরা। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে বাতিল হতে থাকে একের পর এক ক্রয়াদেশ। উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে রফতানির পরিমাণ। ২০২০ সালের এমন স্তব্ধ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। গত বছরের মে মাস থেকে দেশের তৈরি পোশাক রফতানির স্বাভাবিক চিত্র ফিরে আসতে শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিদায়ী বছরের প্রথম ১১ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি ৩১ দশমিক ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ৬৬১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করে ঢাকা। ২০২০ সালের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০৪ কোটি ডলার। ওটিইএক্সএর দেয়া তথ্য অনুযায়ী গড়ে বিদায়ী বছরের প্রথম ১১ মাসের প্রতি মাসে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সব মিলিয়ে অন্তত ৬০ কোটি ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রফতানি করে। ২০২১ সালের মে থেকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রতি মাসেই রফতানি প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন ডিসেম্বরের রফতানি প্রবৃদ্ধির অংকও ঊর্ধ্বগামী ধারাতেই থাকবে। সে অনুযায়ী বলা যায় প্রবৃদ্ধির হার ৭২১ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

এছাড়া বিদায়ী বছরের প্রথম ১১ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের শুধু তৈরি পোশাক রফতানি ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ৬৩৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করে ঢাকা। এর আগের বছর একই সময়ে অংক ছিল প্রায় ৪৮৭ কোটি ডলার। ২০১৯ সালে এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৯২ কোটি ডলারের কটনভিত্তিক পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী করোনাকালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রফতানি ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৫২২ কোটি ডলারে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর প্রভাবে ২০২০ সালে অন্যসব পণ্যের মতো কমে যায় পোশাক রফতানিও। রফতানিতে মন্দা ভাব কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে ২০২১ সালের প্রথম চার মাস। সে বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আগের বছরের তুলনায় রফতানি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পায় যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৬১, ১৩ দশমিক ১১, দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং দশমিক ৭১ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে মে এর হিসেবে দেখা যায় ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ঊর্ধ্বগামী ধারা অব্যাহত রয়েছে পরের মাসগুলোতে। এক্ষেত্রে জানুয়ারি থেকে জুনে দেখা যায় ২৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, জুলাইয়ে ২৮ দশমিক শতাংশ, আগস্টে ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং জানুয়ারি থেকে অক্টোবরে ২৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন