কর্মীদের আস্থা ও দায়বদ্ধতা বাড়াচ্ছে বীমা

নিজস্ব প্রতিবেদক

একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ঢাকার ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের বিক্রয়কর্মী ছিলেন মোহাম্মদ স্বপন। গত ২৭ জুন ঢাকার মগবাজারে আকস্মিক বিস্ফোরণে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান তিনি। ২০১৯ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির ফিল্ড ফোর্স বীমা প্রোগ্রাম চালু থাকায় স্বপনের মৃত্যুর পর ক্লেইমের জন্য দ্রুত আবেদন করা সম্ভব হয়। প্রতিষ্ঠানটি গ্রুপ বীমা সেবা নিয়েছিল কার্নিভাল অ্যাসিউরের মাধ্যমে। কার্নিভাল অ্যাসিউরের বীমা পার্টনার মাত্র একদিনের মধ্যে স্বপনের পরিবারের কাছে ক্লেইমের অর্থ পৌঁছে দেয়।

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের কর্মীরা গত দুই বছরে প্রায় কোটি টাকা ক্লেইম সেটেলমেন্ট পেয়েছেন। বীমা প্রদানের উদ্যোগ দ্রুত ক্লেইমের টাকা পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্মীদের দায়বদ্ধতা বেড়েছে।        

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বীমার বিষয়ে কার্নিভাল অ্যাসিউরের বিজনেস হেড ইমতিয়াজ নূর সাদী জানান, কিছুদিন আগেও প্রতিষ্ঠানরা তাদের কর্মকর্তাদের নিয়েই বেশি ভাবলেও এখন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সব স্টেকহোল্ডারের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে আগ্রহী হচ্ছে। পার্টনারদের সহযোগিতায় গত তিন বছরে আমরা বহুজাতিক, মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, ভোগ্যপণ্য উৎপাদন বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান, জ্বালানি, কৃষি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্টারনেট, লজিস্টিকস, এনজিও, সফটওয়্যার কোম্পানিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় লাখ ২০ হাজার কর্মীর বীমা কভারেজের আওতায় এনেছি। শুধু কর্মী নয় প্রতিষ্ঠানের মেশিনারিজ, ল্যাপটপ মোবাইলের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসকেও বীমার আওতায় আনা যায়। ক্লায়েন্টের প্রয়োজন বাজেট বুঝে, দেশের ছয়টি স্বনামধন্য বীমা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাস্টমাইজড পলিসি তৈরি করে আমরা বীমা সেবা দিচ্ছি। 

দেশব্যাপী ৪৪ হাজার স্টার এজেন্টদের পরিবারের সদস্যসহ মোট লাখ ৭৬ হাজার মানুষকে কার্নিভাল অ্যাসিউর নিজস্ব অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে মাত্র কয়েক দিনে বীমার আওতায় নিয়ে এসেছে। 

স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের সুপারমম ডায়াপারের প্রতিটি প্যাকেটের সঙ্গে ফ্রি বীমা পলিসির মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কনজিউমার প্রডাক্টের সঙ্গে বীমা বান্ডেল করার আইডিয়া নিয়ে আসে কার্নিভাল অ্যাসিউর। বাচ্চা মা-বাবা এক মাসের জন্য বীমার আওতায় থাকবেন। বাচ্চার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুপারমম ডায়াপার এবং প্রডাক্টের সঙ্গে হেলথ ইন্স্যুরেন্স পলিসি থাকায় প্রডাক্টটির দ্রুত জনপ্রিয়তা বাড়ে বিক্রি বৃদ্ধি পায়। এরই মধ্যে প্রায় দেড় লাখ সুপারমম ডায়াপার কাস্টমার বীমা কাভারেজের সুবিধা নিয়েছেন। কনজিউমার প্রডাক্টের সঙ্গে বীমা বান্ডেলের বিষয়ে আগ্রহী হচ্ছে অনেক ব্র্যান্ড। প্রতিযোগিতায় অগ্রগামিতার সঙ্গে সঙ্গে কাস্টমারের বিশ্বস্ততা অর্জন কাস্টমারকে পুনরায় পণ্যটি ক্রয়ের ক্ষেত্রেও আকৃষ্ট করছে।

ডটলাইনস গ্রুপের পরিচালক কার্নিভাল অ্যাসিউরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রাস্তি মোরশেদ বলেন, গতানুগতিক পদ্ধতিতে বীমা করতে প্রচুর ডকুমেন্ট লাগে। টাকা ক্লেইমের পদ্ধতিও বেশ জটিল। প্রতিষ্ঠানে কর্মী সংখ্যা বেশি হলে প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ অ্যাডমিন টিমের জন্য বীমাসেবা ম্যানেজ করা বেশ ঝামেলার সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই আমরা নিজেরাই ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বীমাতে অনবোর্ডিং ক্লেইম প্রসেস সেবা ম্যানেজ করি। আমাদের পুরো প্রসেসটাই ডিজিটাল। তাই কোনো পেপার লাগে না। ক্লায়েন্টের কাছে আমাদের ড্যাশবোর্ড থাকে। সেখানেই কর্মীদের বীমার বিস্তারিত তথ্য, যেমন অনবোর্ডিং, ট্র্যাকিং, পার্টনারের মাধ্যমে ক্লেইম সেটেলমেন্টের পরিমাণ উল্লেখ থাকে। সব তথ্য একদম রিয়াল টাইম স্বচ্ছ থাকে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন