ভারতের অন্যতম প্রডাকশন হাব হতে পারে বাংলাদেশ

আব্দুল মাতলুব আহমাদ

নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান। এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি।  অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। একে একে সম্পৃক্ত হয়েছেন গাড়ির ডিলারশিপ, ইমপোর্টার, ডিস্ট্রিবিউটর, অ্যাসেমব্লিং শিল্প বাণিজ্য কার্যক্রমে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের বিকাশমান অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে যেসব উদ্যোক্তা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি তাদের অন্যতম। সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তি উপলক্ষে বণিক বার্তার সঙ্গে দুটি দেশের ব্যবসা বিনিয়োগের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের পাঁচ দশককে আপনি কীভাবে দেখেন?

ভারত সবসময় বাংলাদেশের জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে যে থাকবে। ৫০ বছর আগে ভারত বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছিল। আজ বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কিছুদিন আগেও ভারত বাংলাদেশের শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার ছিল। ভারত প্রথম থেকেই চেষ্টা করেছে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয়ার। তবে রাষ্ট্র হিসেবে ভারত বরাবরই রক্ষণশীল। বাইরে থেকে আমদানি করার চেয়ে তারা সবসময় নিজেরা উৎপাদন করতে চাইত। স্বাধীনতা-পরবর্তী যদিও আমাদের অর্থনীতি খানিকটা ভঙ্গুর ছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিকল্পনা তৈরি করে গেছেন যে আমাদের অর্থনীতি কীভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হবে। দেশ স্বাধীনের পরে জাতীয়করণের মাধ্যমে শিল্পগুলোকে আবার চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আমলে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখন বঙ্গবন্ধুর সে পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করেই অগ্রসর হচ্ছেন।

প্রথম দিকে ভারত আমাদের পণ্য নিতে চাইত না, আমদানিতে অনেক শর্ত থাকত, একসময় ভারত বুঝতে পেরেছে যে বাংলাদেশ যদি তার অনেক পণ্য ভারতে রফতানি করে, তাতে তাদের কোনো ক্ষতি নেই। কারণ ভারত আমদানি করে প্রায় ২৮০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের ওপর। সেখানে বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্য এলে তো সমস্যা নেই। সে হিসাবে ২০১১ সালে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা দিয়েছে। এর আগে সার্কের অধীনে আমরা কিছু সুবিধা পাচ্ছিলাম। ভারত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এখন অনেক ভালো পর্যায়ে চলে এসেছে। ভারত অনুধাবন করেছে যে বাংলাদেশ এখন একটি শক্তিশালী অর্থনীতি, যাদের সঙ্গে হাত মেলালে ভারতও লাভবান হবে। কভিড-১৯ পরিস্থিতি এর অভিঘাত বাংলাদেশ ভারতের চেয়েও অনেক ভালোভাবে সামলাতে পেরেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্কে ভারতেরই লাভ বেশি। কারণ তাদের উত্তরপূর্ব প্রদেশগুলো কিছুটা হলেও বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের যখন উন্নয়ন হবে এবং তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্প গড়তে থাকবে তখন তাদের অর্থনীতি আরো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে উঠতে পারবে। বাংলাদেশ ভারতকে দুটো বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দিয়েছে। ভারত সেখানে বড় আকারে বিনিয়োগ করছে, আরো বড় বড় বিনিয়োগ আসছে। যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ভালো অবস্থায় রয়েছে এবং এখন সম্পর্কের পরিপক্বতা তৈরি হওয়ার সময় হয়েছে। আমরা ভারতের শিল্প প্রতিষ্ঠার ৩০ থেকে ৩৫ বছর পরে শুরু করলেও এখন তাদের থেকে আমরা বিশেষায়িত পণ্যের রফতানিতে এগিয়ে গেছি।

ভারত বাংলাদেশের বিজনেস টু বিজনেসের বর্তমান অবস্থা কী?

দুটি দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক বিষয় নির্ভর করে। যেমন সরকারের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ। তেমনি জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ। বর্তমান সময়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে দুটি দেশের ব্যবসার সঙ্গে ব্যবসার যোগাযোগের বিষয়টি। ভারত বাংলাদেশের বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) যোগাযোগটা বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। কভিড পরিস্থিতিতে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে করোনার সময়ে যে ক্ষতিটা হয়েছে, তা আমরা কাটিয়ে উঠে অগ্রসর হতে পারব।

বিটুবিতে অনেক প্রকল্পই রয়েছে। টাটা, ম্যারিকো, সানফারমা, ইমামির বিনিয়োগ আছে। ভারতের এমন কোনো বড় কোম্পানি নেই, যারা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করছে না। প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বড় কোম্পানি বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে।

ভারত বাংলাদেশকে ব্যবসায়িক সুবিধা দিচ্ছে, তবে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় বলছে যে দেশটির রাজ্যগুলোয় তারা কিছু বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। সমস্যাগুলোর কি সমাধান সম্ভব? সেক্ষেত্রে কী করা উচিত?

ভারতজুড়ে বাংলাদেশের আকারের ২৮টা রাজ্য রয়েছে। তাদের কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকার রয়েছে। প্রতিটা রাজ্যের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো রাজ্য সরকার নেয়। মাত্র কয়েকটি বিষয় রয়েছে, যা কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আগে যেমন ভারতের একটি রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্য রফতানিতে শুল্ক ইত্যাদির সমস্যা ছিল, এগুলো এখন উঠে গেছে। কিন্তু তাদের প্রতিটা রাজ্য চালানোর জন্য নিজস্ব পার্লামেন্ট আছে, সরকার আছে। এটা একটা ভালো দিক তাদের, যে বিরোধী দলে থাকলেও উন্নয়ন করা সম্ভব হয়। যদি কিছু বাধা থাকে, তবে তা তারা তাদের স্থানীয় জনগণের শক্তির সাহায্যে উপেক্ষা করতে পারে। ভারতের রাজ্যগুলোয় বাংলাদেশের পণ্য রফতানিতে আগের সমস্যাগুলো অনেকটাই কমে এসেছে, তার পরও এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যের কর পরিবর্তন হয়। আমাদের ধরে নিতে হবে যে ২৮টি রাজ্যের সঙ্গে আমরা ব্যবসা করছি। ভারতের ২৮টি প্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন আইন থাকতেই পারে, সেজন্য যারা রফতানিকারক তাদের বেছে নিতে হয়। তবে ভারত সরকার কিন্তু বলে দিয়েছে যে যদি অশুল্ক বাধা থাকে কিংবা আঞ্চলিক শুল্ক সমস্যা থাকে, সেটা নিয়ে তারা ইতিবাচক আছেন এবং তারা সমাধান দেয়ার জন্য প্রস্তুত।

বাংলাদেশের বিভিন্ন সংকটে ভারতকে আমরা অনেকটা নির্লিপ্ত থাকতে দেখি।

আমাদের নিজেদেরও অনেক কিছু শিখতে হবে। যেমন মোদি সরকার গরু রফতানিতে কঠোর অবস্থান নিল। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। বাংলাদেশ এখন গরু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ভারত থেকে গরু আমদানি না করতে পারলেও এখন আর আমাদের সমস্যা নেই। তেমনি পেঁয়াজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সংকট থাকে মাত্র দুই থেকে তিন মাস। এজন্য উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং মজুদ সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এরপর আসে তুলা। আফ্রিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশও এটি রফতানি করে। তাহলে আমরা কেন ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি, কারণ ভারতে কম দামে ভালো তুলা পাওয়া যায়। তাই আমাদের আগে থেকে তা ক্রয় করে রাখতে হবে। সংকটের সময় স্বাভাবিকভাবেই দাম বেড়ে যায়। এখানে ভারতকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ আমরা আগে থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করিনি।

ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে কিন্তু সীমান্ত হত্যা থামছে না। আবার তিস্তার পানি চুক্তি এখনো পূর্ণতা পায়নি। কেন?

বাংলাদেশ-ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল ছিটমহল ঘিরে। শেখ হাসিনা মোদি সরকার কিন্তু এর সমাধান করেছেন। তিস্তার পানি চুক্তিটা ভারতের প্রাদেশিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি ভারতের ভেতরেও রাজ্যের রাজ্যের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু একটা বিষয় ঠিক যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সমস্যাটির সমাধান করতে আগ্রহী। ভবিষ্যতে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস। তাই আমাদের বর্তমান উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের বিনিয়োগ দেশে আনা এবং পণ্য উৎপাদন করে ভারতে রফতানি করা। বিষয়টি আমরা আমাদের চেম্বার অব কমার্সেও আলোচনা করেছি। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতে ভারত যেন বাংলাদেশকে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করে। এছাড়া আমরা গ্লোবাল ভ্যালু চেইন নিয়ে কাজ করছি। ভারতের তুলা সুতা আমাদের এখানে এনে কাপড় তৈরি করে তা বিশ্বব্যাপী রফতানি করা। গ্লোবাল ভ্যালু চেইনের অংশ হিসেবে দুই দেশ মিলে যৌথ উদ্যোগে সারা বিশ্বে পণ্য সরবরাহ করার বিষয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি।

ভারতে আমাদের পণ্য রফতানির সবচেয়ে বড় সমস্যা কী বলে মনে করেন?

সবচেয়ে বড় সমস্যা লজিস্টিক সাপোর্ট। আমাদের বর্ডার ২৪ ঘণ্টা চলে না, চালাতে হবে, এক বর্ডারে সুতা আমদানি করা যায়, অন্যটায় যায় না। সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমাদের সব সীমান্ত থেকেই পণ্য আমদানি-রফতানির সুযোগ থাকতে হবে এবং দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টা এটা খোলা থাকতে হবে। আমাদের বড় সমস্যা পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে দুই দেশেরই। আর ক্ষতির বোঝাটা দিন শেষে ক্রেতার ওপর বর্তায়। দ্বিতীয়ত, আমাদের বিএসটিআইয়ের সঙ্গে ভারতের পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর চুক্তিতে যাওয়া। এর মধ্যে অনেক চুক্তি হয়েছে, যৌথভাবে দুই দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সনদও প্রদান করেছে। তবে প্রক্রিয়াগুলো খানিকটা দীর্ঘ। কারণ প্রত্যেক দেশই চায় সেখানে যেন কোনো মানহীন পণ্য প্রবেশ না করতে পারে। এজন্য তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। বাংলাদেশও নেয়। তবে আমরা একটু বেশি উদার। আমরা সহজে অন্যদের সার্টিফিকেট গ্রহণ করে ফেলি। ভারত কিন্তু এতটা উদার না, তারা পণ্যের মান সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হতে চায়। বিএসটিআইয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভারত কিন্তু অর্থও দিয়েছে, কারণ এতে তাদেরও লাভ রয়েছে।

কোন দিকে নজর দিলে ভারত বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হবে?

বাংলাদেশ-ভারত বিনিয়োগ এখন একমুখী। ভারত থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ আসছে। তবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা দেশের বাইরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এখন অনেক বেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত দেশের ব্যবসায়ীদের ভারতে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া এবং বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করা। এতে আস্থা গড়ে ওঠে। একপাক্ষিক বিনিয়োগে আস্থাটা কম থাকে। সরকার যদি উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে ভারত বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগে উৎসাহী হবে।

বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে ভারতের পক্ষ থেকে কি কোনো বাধা আছে?

ভারতের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই, বাধা হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। বিদেশে যারা বিনিয়োগ করবে সরকার এখন কেস টু কেস দিচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীরা বলছি যে কেস টু কেস লাগবে না, সার্বিকভাবে অনুমতি দেন। পরবর্তী সময়ে যাচাই করে নেয়া যায় কাকে বিনিয়োগ অনুমতি দেবেন আর কাকে দেবেন না এবং নীতিমালা তৈরি করে দেবেন। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে। দুই দেশই পরস্পরের সমর্থন পায়। একপেশে বিনিয়োগ হয় না। সম্পর্ক-আস্থা বাড়তে থাকে।

বাংলাদেশের মোংলা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতকে এর উত্তরপূর্ব অঞ্চলগুলোয় পণ্য পরিবহনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। বিপরীতে নেপাল ভুটান থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে পণ্য আসবে বলে আলোচনা চলছে। এখানে বাংলাদেশের লাভের বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন

আমাদের যে বিষয়টা দেখতে হবে তা হচ্ছে রফতানীকৃত পণ্য ঠিকভাবে যেতে পারছে কিনা। এজন্য বাংলাদেশ ভারত সরকার কাজ করছে। এজন্য বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল (বিবিআইএন) ইনিশিয়েটিভ নেয়া হয়। ভুটান ছাড়া বাকি দেশগুলো এটা অনুমোদন দিয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে, যা খুব তাড়াতাড়ি চালু হয়ে যাবে। তিন দেশের মধ্যে বিনা মূল্যে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা শুরু হয়ে যাবে। পরবর্তী সময়ে দেখা যাবে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে মানুষের আর ভিসা লাগছে না। তবে ভুটানের জন্য উদ্যোগটা তিন থেকে চার বছর পিছিয়ে গেছে।

পাটপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ভারত অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছিল। বিষয়টি কি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায় না?

বিষয়টি এখন ভারতের কোর্টে চলে গেছে। সমস্যাটি হচ্ছে যখন কোনো বিষয় কোর্টে চলে যায় তখন সরকার কিংবা ব্যবসায়ীরা কেউ কিছু করতে পারেন না। ভারত সরকার এটি উঠিয়ে দেয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। প্রক্রিয়াটা শুরু হচ্ছে। তাছাড়া অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্কে ভারতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ তারাও কিন্তু এত কম দামে কোথাও পাটপণ্য পাবে না।

আগামী পাঁচ দশক পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে আপনি কোথায় দেখতে চান?

বিগত ৫০ বছরে আমরা যা পেয়েছি, আগামী দশ বছরে তার চেয়ে বেশি পাব। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য এখন ১২ থেকে ১৩ মিলিয়ন ডলার, আগামী দশ বছরে এটি ২৫ থেকে ২৬ মিলিয়ন ডলার হবে। আজ আমরা দশমিক বিলিয়ন ডলার রফতানি করছি, আমি মনে করি, আগামী জুন নাগাদ এটি বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে। এজন্য ভারতের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। তাদের কাছে আমাদের প্রতিনিধি দল পাঠাতে হবে। তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আমি মনে করি, গত ৫০ বছরের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আজ যে পর্যায়ে এসেছে, আগামী দশ বছরে তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। দুই দেশের আমদানি-রফতানি-বিনিয়োগ সম্পর্ক পাঁচ গুণ দ্রুতগতিতে অগ্রসর হবে।

 

শ্রুতলিখন: রুহিনা ফেরদৌস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন