ধান উৎপাদন ব্যয়ের ৩০ শতাংশই আগাছা দমনে —ব্রির গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধান উৎপাদনে বালাই ব্যবস্থাপনায়, বিশেষ করে আগাছা দমনে মোট ধান উৎপাদন ব্যয়ের ৩০-৩৫ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ফলন পেতে হলে সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদ্ধতিতে আগাছা দমন প্রয়োজন। আগাছা দমনে কায়িক শ্রম লাঘব, সময় এবং ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে ব্রির শক্তিচালিত নিড়ানি যন্ত্রটি উদ্ভাবন উন্নয়ন করা হয়েছে। যন্ত্রটির মাধ্যমে একসঙ্গে একাধিক সারির আগাছা দমন করা সম্ভব। এটির জনপ্রিয়করণ সম্ভব হলে ধানের আগাছা দমনে রাসায়নিক আগাছা নাশক ব্যবহার হ্রাস পাবে।

গতকাল কেজিএফ-বিকেজিইটির অর্থায়নে পরিচালিত সিজিপি প্রকল্প ভ্যালিডেশন অ্যান্ড আপস্কেলিং অব রাইস ট্রান্সপ্লান্টিং অ্যান্ড হারভেস্টিং টেকনোলজি ইন দ্য সিলেক্টেড সাইটস অব বাংলাদেশ (ভিআরটিএইচবি) শীর্ষক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উদ্যোগে এবং ব্রির মহাপরিচালক . মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক . জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রির পরিচালক (প্রশাসন এবং সাধারণ পরিচর্যা) . মো. আবু বকর ছিদ্দিক পরিচালক (গবেষণা) . মো. খালেকুজ্জামান।

প্রকল্প উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক এবং এফএমপিএইচটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা . মো. আনোয়ার হোসেন। প্যানেল অলোচক ছিলেন বাংলাদেশ কৃৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) সাবেক মহাপরিচালক . মো. আব্দুল ওয়াহাব, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি যন্ত্র বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক . মো. হামিদুল ইসলাম।

কর্মশালায় জানানো হয়, প্রকল্পের আওতায় ব্রি উদ্ভাবিত রাইস ট্রান্সপ্লান্টার কাম সার প্রয়োগ যন্ত্র, ব্রির শক্তিচালিত আগাছা দমন যন্ত্র এবং কম্বাইন হারভেস্টর যন্ত্র মূল্যায়ন, বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ বিশ্লেষণ করা হবে। মাঠ দিবস প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি প্রস্তাবিত যন্ত্রগুলো জনপ্রিয়করণে উদ্যোগ নেয়া হবে। ব্রি উদ্ভাবিত রাইস ট্রান্সপ্লান্টার কাম সার প্রয়োগ যন্ত্রের মাধ্যমে একই সঙ্গে ধানের চারা রোপণ সব সার একসঙ্গে প্রয়োগ করা যায় বিধায় কৃষকের অর্থ সময় সাশ্রয় হয় এবং ফসলের উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়।

তাছাড়া বর্তমান সরকারের ভর্তুকি কার্যক্রমের আওতায় বিভিন্ন মডেলের কম্বাইন হারভেস্টর বাংলাদেশে জনপ্রিয় হচ্ছে। সেইসব মডেল হতে শস্য, জমি এবং কৃষকের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ভালো মডেল নির্বাচন করাও একটি কঠিন কাজ। ওই প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প এলাকার শস্য, শস্যবিন্যাস, মাটি এবং কৃষকের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে সঠিক মডেলের কম্বাইন হারভেস্টর নির্বাচন এবং বিজনেস মডেল প্রস্তুত করা হবে।

কৃষির মানোন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, পুষ্টি এবং নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে ফসল উৎপাদনে লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি প্রযুক্তির ব্যবহার অর্থাৎ কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এখন সময়ের দাবি। ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে ক্রমবর্ধমান জনগণের খাদ্য পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য প্রয়োজন অল্প সময়ে বেশি পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন। এটি একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রকৃতিনির্ভর কৃষিকে আধুনিক যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদনশীলতা শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধি করে তা টেকসই করতে হবে। কৃষিকে লাগসই যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন