আবার নজর কাড়লেন তাসকিন রহমান

ফিচার প্রতিবেদক

তাসকিন রহমান

ঢাকা অ্যাটাক সিনেমাটি মুক্তির পর সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিলেন তাসকিন রহমান। নায়ক আরিফিন শুভকে ছাপিয়ে খলনায়ক হিসেবে তিনি হয়েছিলেন সিনেমার প্রাণভোমরা। তার দুর্দান্ত অভিষেক মুগ্ধ করেছিল দর্শকদের। সে সময় তাসকিনকে নিয়ে মেতে ছিল দর্শক। তিন বছর পর ঢাকা অ্যাটাকের সিকুয়ালে নির্মিত মিশন এক্সট্রিম-এও বাজিমাত করলেন তাসকিন।

ক্যাট আই লুক ঠাণ্ডা মাথার অভিনয়ে তাসকিন নজর কাড়লেন। বৃহস্পতিবার মিশন এক্সট্রিম সিনেমার প্রিমিয়ার দেখার পর তাসকিনের অভিনয়ের তারিফ করতে ভোলেনি দর্শক। ঠাণ্ডা মাথায় একটার পর একটা হামলার পরিকল্পনায় উতরে গেছেন অভিনেতা। পুরো সিনেমায় তাকে ধরতে তত্পর ছিলেন নায়ক শুভ। কিন্তু ব্যর্থ হন তাকে ধরতে। প্রথম কিস্তিতে পর্দায় নায়ক শুভ ভিলেন তাসকিনকে ধরতে ব্যর্থ হলেও তাসকিনকে ঠিকই দর্শকের মনে ধরেছে। যখনই তিনি পর্দায় হাজির হচ্ছিলেন, উপস্থিত দর্শক ছিল আনন্দিত, উত্কণ্ঠিত। এজন্য অনেকেই তাসকিনকে ওয়ার্ল্ড ক্লাস অভিনেতা বলে আখ্যা দিয়েছেন।

যদিও বড় বড় সব অভিনেতার সমাবেশ হওয়ায় একক কোনো চরিত্রের বিশেষ কিছু করে দেখানোর সুযোগ খুব বেশি ছিল না। তার পরও তাসকিন যতক্ষণ পর্দায় ছিলেন, বাজিমাত করেছেন। মাস্টারমাইন্ড হয়ে নেপথ্যে থেকে তাসকিন দেখিয়েছেন সুনিপুণ অভিনয়। টেরোরিজম ইঙ্গিতপূর্ণ চরিত্র থ্রিনটথ্রিতে তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজও যেন অভিনয় করছিল। হালকা লেন্সের চশমার ফাঁক দিয়ে তাসকিনের নীল চোখের এক্সপ্রেশনে শিউরে ওঠেন দর্শক। তাসকিনের অভিনয়ে কোথাও বিন্দুমাত্র কমতি মনে হয়নি। ভিলেন হয়েও ছিলেন পুরোপুরি মেথড অ্যাক্টিং ফর্মে।

ঢাকা অ্যাটাক মুক্তির পর তাকে নিয়ে হইচই পড়ে যায়। দেশে ভিলেন বলতে গ্ল্যামারলেস একটা চরিত্র পর্দায় হাজির হয়, যার কাজ সিনেমার শুরুতে কিছু পাপ করা এবং শেষের দিকে নায়কের হাতে পিটুনি খাওয়া। তাসকিন তাক লাগিয়ে দিলেন। লম্বা, সুদর্শন চেহারা, ঠাণ্ডা মেজাজ, ভয়ংকর চাহনি, চমত্কার অভিনয়। দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখল তাসকিনকে। প্রশংসা করল। একের পর এক সিনেমায় ডাক পেতে থাকেন। প্রথম ছবি মুক্তির পরের বছরই চুক্তিবদ্ধ হলেন চার সিনেমায়। ২০১৯ সালে দুটি সিনেমায় অভিনয় করলেও একটিতে হলেন নায়ক। ২০২০ সাল গেছে মহামারীর গর্ভে। ২০২১ সালে করলেন সাতটি সিনেমা। যার কোনোটা মুক্তি পেয়েছে, কোনোটা মুক্তির মিছিলে। ঢাকার গুলশানে জন্ম শৈশব-কৈশোর কাটলেও ২০০২ সাল থেকে আছেন অস্ট্রেলিয়ায়। উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে সিডনিতে থিতু হন। ঢাকা অ্যাটাক তাকে ঢাকায় ফিরে নিয়ে আসে। তবে ঢাকা অ্যাটাক দিয়েই যে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন, বিষয়টা এমন না।

শিশুশিল্পী হিসেবে টিভি নাটকে অভিনয় করেন নয় বছর বয়সে। নব্বইয়ের দশকে হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনে শীতের পাখি নামে একটি নাটকে অভিনয় করেন। সে সময় ১০টির মতো টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। ১৯৯৫ সালে আমিন খান অভিনীত হূদয় আমার সিনেমারও শিশুশিল্পী তাসকিন। তাসকিনের বাবা আনিসুর রহমান বাংলাদেশ টেলিভিশনের গীতিকার। ভাই তানিম রহমান অংশু জনপ্রিয় টিভি নাটক, চলচ্চিত্র মিউজিক ভিডিও নির্মাণের জন্য। অভিনয়ের পাশাপাশি চিত্রশিল্পী হিসেবেও সুনাম আছে তাসকিন রহমানের। ২০১৫ ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তার আঁকা তৈলচিত্রের প্রদর্শনী হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন