‘চিরঞ্জীব মুজিব’ সিনেমার ট্রেলার মুগ্ধতা ছড়াল

ফিচার প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি তার পরিবারসহ প্রায় ৩ ঘণ্টা এ চলচ্চিত্র উপভোগ করার পর সুইচ অন করে চিরঞ্জীব মুজিব সিনেমার ট্রেলার উদ্বোধন করেন। ছাত্রনেতা থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদান এবং বাংলার ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে প্রধান নেতা হয়ে ওঠা একজন চিরঞ্জীব মুজিবের গল্প এ চলচ্চিত্রের মূল প্রেক্ষাপট ছবি: পিআইডি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী অবলম্বনে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র চিরঞ্জীব মুজিব সিনেমার ট্রেলার দর্শককে মুগ্ধ করেছে। মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ট্রেলারের শুরুতেই শোনা যায়- নুরুল আমীন কি বুঝতে পারল না যে, আমলাতন্ত্ররে কোথায় নিয়ে গেল? বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করা আহমেদ রুবেলের ভরাট গলা অবিকল বঙ্গবন্ধুর মতোই শোনা যাচ্ছিল। যা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেয়, নির্মাতা অভিনেতা শুধু অভিনয়ের দিকেই নজর দেননি; বরং কণ্ঠ নিয়েও বিশেষ কাজ করেছেন। এরপরেই শোনা যায় উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সংবাদে বঙ্গবন্ধুর প্রতিক্রিয়া। সিনেমার আবহ, অভিনয়, শব্দ সবকিছুতেই মুগ্ধতা। এর আগে সিনেমাটির ট্রেলার উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি তার পরিবারসহ প্রায় ঘণ্টা চলচ্চিত্র উপভোগ করার পর সুইচ অন করে চিরঞ্জীব মুজিব সিনেমার ট্রেলার উদ্বোধন করেন। ছাত্রনেতা থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদান এবং বাংলার ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে প্রধান নেতা হয়ে ওঠা একজন চিরঞ্জীব মুজিবের গল্প চলচ্চিত্রের মূল প্রেক্ষাপট। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে আহমেদ রুবেলের অভিনয়, লুক সংলাপ প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সিনেমা দেখার পর অনুভূতি ব্যাক্ত করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনের ঘটনাবলি নিয়ে আরো চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, জীবন কর্ম নিয়ে আরো চলচ্চিত্র নির্মাণ হলে নতুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। চিরঞ্জীব মুজিবের মতো ধরনের চলচ্চিত্র নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সেনাবাহিনীর প্রধান, নৌবাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তারা।

প্রদর্শনী শুরুর আগে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় চলচ্চিত্রটির পরিচালক প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম প্রযোজক লিটন হায়দার চিরঞ্জীব মুজিবের পটভূমি তুলে ধরেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী . হাছান মাহমুদ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল, রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক এমপি, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বঙ্গভবনের সচিব এবং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস (পরশ) উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে গত ২৩ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্রের তিনটি পোস্টারে স্বাক্ষরের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন। শিগগির দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোয় চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

হায়দার এন্টারপ্রাইজের ব্যানারে নির্মিত চলচ্চিত্রের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকছে সিকদার গ্রুপ, পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস লিমিটেড ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড।

এর আগে জানানো হয়, চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেয় সিকদার গ্রুপ এর দুই অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ শেষে এর বাণিজ্যিক প্রদর্শন বিজ্ঞাপন প্রচার থেকে যত আয় হবে তার পুরোটাই জমা হবে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টে। 

গত সেপ্টেম্বর সেন্সর ছাড়পত্র পায় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি। এর একটি প্রদর্শনী দেখে কোনো ধরনের কাট-ছাঁট ছাড়াই ছাড়পত্র দেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী অবলম্বনে চিরঞ্জীব মুজিব  নির্মাণ করা হয়েছে। চলচ্চিত্রটির নিবেদক হিসেবে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ছোটবোন শেখ রেহানা।

চলচ্চিত্রটি পরিচালনা, নাট্যরূপ সংলাপ লিখেছেন নজরুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপ সংশোধন পরিমার্জন করেছেন। চিত্রনাট্য রচনা করেছেন জুয়েল মাহমুদ। তিনি চলচ্চিত্রটির সৃজনশীল পরিচালকও। হায়দার এন্টারপ্রাইজের ব্যানারে নির্মিত চলচ্চিত্রের প্রযোজক লিটন হায়দার।

চিরঞ্জীব মুজিব চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল। বেগম ফজিলাতুন্নেছা রেণুর চরিত্র রূপায়ণ করেছেন পূর্ণিমা এবং বঙ্গবন্ধুর বাবা মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যথাক্রমে খায়রুল আলম সবুজ দিলারা জামান।

প্রয়াত এসএম মহসীন, নরেশ ভুঁইয়া, কে আজাদ পাভেল, শতাব্দী ওয়াদুদ, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, আরমান পারভেজ মুরাদ, কায়েস চৌধুরীসহ পাঁচ শতাধিক নবীন প্রবীণ অভিনেতা-অভিনেত্রী চলচ্চিত্রটির বিভিন্ন চরিত্রে রূপদান করেছেন। সংগীত আয়োজনে ছিলেন ইমন সাহা, ক্যামেরায় সাহেল রণি এবং শিল্প নির্দেশনা পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন প্রয়াত সেলিম আহমেদ। সাবিনা ইয়াসমিন, কুমার বিশ্বজিৎ, কিরণ চন্দ্র রায়, কোনাল নোলক বাবু বিভিন্ন গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। চলচ্চিত্রটিতে গগন হরকরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম   জসীমউদ্দীনের গান ব্যবহার করা হয়েছে। শিগগিরই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোয় চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন