সিনেমা
দেখতে গেলে আমরা নানা ধরনের রেটিং দেখি। পিজি (PG), আর
(R), এক্স
(X) ইত্যাদি রেটিং ছাড়া আজকাল কোনো সিনেমা আসে না। এসব রেটিং শুরু হওয়ার পেছনে লম্বা ইতিহাস আছে। ১৯০৯ সালে আমেরিকায় ‘ন্যাশনাল বোর্ড অব সেন্সরশিপ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল প্রোটেস্ট্যান্টদের অনুভূতি রক্ষা করা। ‘সেন্সরশিপ’ শব্দটিতে আপত্তির কারণে কয়েক বছর পর প্রতিষ্ঠানটির নাম বদলে ‘ন্যাশনাল বোর্ড অব রিভিউ অব মোশন পিকচারস’ রাখা হয়। এছাড়া অন্য কিছু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সিনেমার ওপর নজরদারি চলছিল। ১৯২০ সাল নাগাদ প্রটেস্ট্যান্ট সমালোচকরা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এক ধরনের নিয়মতান্ত্রিকতা চান এবং পরের বছর তা মঞ্জুর হয়। উইলিয়াম হ্যারিসন হেইস ‘মোশন পিকচার প্রডাকশন কোড’ তৈরি করেন, যা হেইস কোড নামে পরিচিত হয় এবং ত্রিশের দশক থেকে ষাটের দশক পর্যন্ত চলমান ছিল।
হেইস
কোড ১৯৬৮ সালে জ্যাক ভ্যালেন্টি প্রস্তাবিত রেটিং পদ্ধতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। প্রথমত, দর্শকদের বয়স মাথায় রেখে রেটিং করা হয়। ‘দ্য মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা’ নির্ধারিত রেটিং ব্যবস্থায় সাধারণ দর্শকদের জন্য G, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য M, পিতামাতার নজরদারি ছাড়া ১৬ বছরের অধিক বয়স্কদের জন্য R ও
X দ্বারা অনূর্ধ্ব ষোলোর জন্য অননুমোদিত বোঝানো হয়। ১৯৮৪ সালে ‘রেড ডন’ সিনেমায় সর্বপ্রথম PG-13
রেটিং দেয়া হয়। R-এর সীমা বদলে ১৭ বছর করা হয়। ১৯৯০ থেকে R পাওয়া প্রত্যেকটি সিনেমার রেটিংয়ের সঙ্গে ছোট করে একটি ব্যাখ্যা দেয়া হয়। সিনেমায় ক্রূরতা, মাদকের ব্যবহার, নগ্নতা কিংবা গালাগাল আছে কিনা তা উল্লেখ করা হয়। পরবর্তী সময়ে PG ও PG-13
আনা হয় এবং X
দ্বারা বোঝানো হয়, এটি ১৭ বছরের কম বয়সীদের জন্য নিষিদ্ধ। কেননা X
ততদিনে পর্নোগ্রাফিকে বোঝানো শুরু করেছে।
রেটিং
দেয়া হয় যেন অভিভাবকরা বুঝতে পারেন কোন সিনেমাটি তাদের সন্তনের জন্য উপযুক্ত। রেটিং ঠিক করে, আমেরিকান আদর্শে বিশ্বাসী অভিভাবকদের একটি গ্রুপ। বর্তমানে সব সিনেমাকেই রেট করা হয়। তবে রেটিং করা নিয়ে পরিচালক, প্রযোজকদের কিছু ক্ষোভও আছে। ২০০৬ সালে ‘দ্য ফিল্ম ইজ নট রেটেড ইয়েট’ নামে কির্বি ডিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সেখানে বলা হয়, অনেক ক্ষেত্রেই সিনেমা, পরিচালনা ও গল্প না বুঝেই রেট করা হয়। যেমন X
রেটেড সিনেমা ‘মিডনাইট কাউবয়’ ১৯৬৯ সালে অস্কার লাভ করে। প্রথমে R
দেয়া হলেও পতিতাবৃত্তি ও সমকামিতার দৃশ্য থাকার কারণে রেটিং বদলানো হয়।
কির্বি
ডিকের তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর রেটিং ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আসে। এ ধারায় ‘চেক দ্য বক্স’ পদ্ধতির মাধ্যমে রেটিংয়ের পাশাপশি সিনেমাসংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত তথ্য পাওয়া যায়। তবে রেটিং সম্পর্কে সমালোচক, পরিচালকসহ সিনেমার সঙ্গে জড়িত সবাই মনে করেন, এখানে আরো অনেক বিশেষায়িত কাজ করা বাকি।
সূত্র: হলিউড ইনসাইডার