ওমিক্রন সংক্রমণে অনিশ্চয়তায় ২০২২

চলতি বছর বৈশ্বিক বাণিজ্য ২৮ ট্রিলিয়নে পৌঁছবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠছে বিশ্ব। চলতি বছরের শুরু থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় পণ্য বাণিজ্য। রেকর্ড সৃষ্টি হয় শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের। অবস্থায় ২০২১ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্য ২৮ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বাণিজ্য উন্নয়নবিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলন (আঙ্কটাড) জানিয়েছে, চলতি বছর বাণিজ্য আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বাড়বে। তবে কভিডের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ২০২২ সালের বাণিজ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বছরজুড়েই বাণিজ্য বৃদ্ধি শক্তিশালী এবং দ্বিতীয়ার্ধে স্থিতিশীল ছিল। তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাণিজ্যের পরিমাণ রেকর্ড ২৪ শতাংশ বেড়েছে। এটি কভিডপূর্ব স্তরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বেশি। তবে কয়েকদিন ধরে কভিডের নতুন ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল ট্রেড আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদনে আঙ্কটাড জানিয়েছে, ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ইতিবাচক প্রবণতা মূলত মহামারীজনিত বিধিনিষেধের কারণে দেয়া আর্থিক প্রণোদনা পণ্যের ক্রমবর্ধমান দাম এবং শক্তিশালী চাহিদার ফলাফল।

বৈশ্বিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রেখেছে পণ্য বাণিজ্য। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে পণ্য বাণিজ্য আগের প্রান্তিকের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেড়ে লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। প্রান্তিকভিত্তিক পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ সর্বকালের সর্বোচ্চ। আঙ্কটাড আশা করছে, চলতি বছর পণ্য বাণিজ্য ২২ লাখ কোটি ডলারের রেকর্ড স্পর্শ করবে।

সময়ে পণ্য বাণিজ্য রেকর্ড পরিমাণ বাড়লেও পরিষেবা বাণিজ্যে শ্লথগতি রয়ে গেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে পরিষেবাগুলোর বাণিজ্য দশমিক শতাংশ বেড়ে লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। ২০২১ সালে বাণিজ্য লাখ কোটি ডলারে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য উন্নয়ন সংস্থাটি। যদিও আঙ্কটাড গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া কভিডের নতুন ধরন ওমিক্রনের সম্ভাব্য প্রভাবকে বিবেচনায় নেয়নি।

ওমিক্রনের প্রভাব নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও আশার বাণী শোনাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের ভাষ্য, কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম এবং দ্রুত বিধিনিষেধের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা বিশ্বকে যেকোনো খারাপ পরিস্থিতিতে সহায়তা করবে।

আঙ্কটাড জানিয়েছে, ২০২১ সালের প্রথমার্ধে শক্তিশালী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে এসে ধীর হয়ে গেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে চীন ১৬ শতাংশ বাণিজ্য বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। তাইওয়ানের ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির পর চীনের প্রবৃদ্ধি দ্বিতীয় ছিল। এরপর কেবল ভিয়েতনাম, ব্রাজিল অস্ট্রেলিয়া দুই অংকের বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করেছিল। 

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপ্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এরই মধ্যে ইইউতে সংক্রমণ বেড়েছে। ফলে আরোপ করা কভিডজনিত বিধিনিষেধ ভোক্তা চাহিদাকে দুর্বল করে দিতে পারে। তাছাড়া চিপ ঘাটতির কারণে অটোমোবাইল শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোয় বাণিজ্য দুর্বলতা লক্ষ করা গেছে।

আঞ্চলিক ভিত্তিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাণিজ্য শক্তিশালী ছিল। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নশীল অর্থনীতির বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি তৃতীয় প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত হয়েছে।

সময়ে অর্থনীতির বেশির ভাগ খাত শক্তিশালী বাণিজ্যের সাক্ষী হয়েছে। এক্ষেত্রে উচ্চ চাহিদা জীবাশ্ম জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে জ্বালানি-সম্পর্কিত পণ্যগুলো নেতৃত্ব দিয়েছে। খনিজ, ধাতুর পাশাপাশি রাসায়নিক যানবাহনের বাণিজ্য গড় হারে বেড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন