মিরসরাইয়ে পাহাড় ধসিয়ে বালি তুলছেন ইজারাদার

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, মিরসরাই

মিরসরাইয়ের সাইবেনিখীল শালবন এলাকায় পাহাড় ধসিয়ে বালি তোলা হচ্ছে ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পাহাড় ধসিয়ে বালি উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। করেরহাট ইউনিয়নের লক্ষ্মীছড়ার পাশে বড় বড় পাম্প মেশিন বসিয়ে পাইপগুলো দেয়া হয় পাহাড়ে। পরে ওই পাহাড়ের পাদদেশ থেকে পাইপ দিয়ে বালি আনা হয় সমতলে। এভাবে কৌশলে পাহাড় কাটছে একটি চক্র। ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রতি বছরের ৩০ চৈত্র পর্যন্ত মিরসরাই উপজেলার লক্ষ্মীছড়ার কিছু অংশ ইজারা দেয় সরকার। কিন্তু ইজারাদার নির্ধারিত স্থান থেকে বালি উত্তোলন না করে পাশের পাহাড় কেটে সাবাড় করছেন।

সোমবার সরেজমিনে করেরহাট ইউনিয়নের সাইবেনিখীল শালবন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চার-পাঁচজন শ্রমিক বালি উত্তোলন কাজে ব্যস্ত। লক্ষ্মীছড়ার পশ্চিম পাশে বসানো হয়েছে পাম্প মেশিন। ওই পাম্প মেশিন দিয়ে ছড়া থেকে পানি তুলে সেই পানি দেয়া হচ্ছে পাহাড়ে। পরে পাহাড়ের বালিমিশ্রিত পানি পাইপ দিয়ে আনা হচ্ছে সমতলে। এভাবে কৌশলে পাহাড় ধসিয়ে বালি উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মো. জসিম উদ্দিন প্রকাশ ঠাকুর জসিমের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট বালি উত্তোলন কাজে জড়িত।

জানতে চাইলে মো. জসিম উদ্দিন প্রকাশ ঠাকুর জসিম জানান, ১৪ জন ব্যক্তি মিলে আগামী ৩০ চৈত্র পর্যন্ত বছরের জন্য ১৩ লাখ টাকায় লক্ষ্মীছড়াটি বালি উত্তোলনের জন্য ইজারা নিয়েছেন। পাহাড় কেটে বালি উত্তোলন করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার অজান্তে পাহাড়ের কিছু অংশ শ্রমিকরা কেটেছে কিনা আমি জানি না।

করেরহাট রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন এলাহী জানান, গত মাসে একটি মামলা দেয়া হয়েছে। গতকাল অভিযান চালানো হয়েছে। নতুন করে আরো একটি মামলা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক নূর হোসেন সজীব জানান, পাহাড় ভেঙে বালি উত্তোলনের সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিভাগ থেকে অবৈধ বালি উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা হবে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএমএন জামিউল হিকমা জানান, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাননি। তবে পাহাড় ধসিয়ে বালি উত্তোলনের বেশকিছু যন্ত্র ধ্বংস করেছেন। ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন থেকে বালি উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হবে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান জানান, আমরা তাদের ছড়া ইজারা দিয়েছি, পাহাড় নয়। পাহাড় কেটে বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন