প্লেনারি সেশনে বক্তারা

ব্যবসার পরিবেশে নতুন উচ্চতায় বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিনিয়োগ সক্ষমতা এবং ব্যবসার পরিবেশ বিবেচনায় নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আছে বন্দর অবকাঠামো কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান। সব মিলিয়ে এশিয়ার উদীয়মান তারকায় পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ বাংলাদেশের প্লেনারি সেশনে এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন বক্তারা।

দুই দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ বাংলাদেশ শীর্ষক আয়োজনের উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠিত হয় প্লেনারি সেশন। ইনভেস্টমেন্ট কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড বিজনেস এনভায়রনমেন্ট ইন বাংলাদেশ: রিটিং নিউ হাইটস ইন দ্য নিউ নরমাল শীর্ষক ওই সেশনের মূল বক্তা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব . আহমেদ কায়কাউস। সেশনটির সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম।

সেশনের প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন বাংলাদেশ, ভুটান নেপালের অ্যাকটিং কান্ট্রি ম্যানেজার নুজহাত আনোয়ার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। সেশনে প্যানেল আলোচক হিসেবে ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয় ইউনিলিভার দক্ষিণ এশিয়া প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব মেহতার। মূল বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব . আহমেদ কায়কাউস বলেন, ২০২১ সালে পৌঁছার আগেই প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের পরিকল্পনা করেছেন। উন্নয়নশীল দেশে পৌঁছার সময় থেকে তিনি উন্নত দেশের পৌঁছার চিন্তা করছেন। একই সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ডেল্টা প্ল্যান হাতে নিয়েছেন। আমি বলব এটি মানব ইতিহাসে খুবই ব্যতিক্রমধর্মী একটি সিদ্ধান্ত, যাতে ২১০০ সালের পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। আমার জানা মতে বিশ্বের কোথাও শতবর্ষের পরিকল্পা নেয়া হয়নি, যা পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ উন্নতিতেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দরিদ্রদের গৃহ নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের পরিকল্পনায় তৃণমূল থেকে উন্নতির জন্য বিভিন্ন নীতি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষার ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী সমান গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব অর্জন করতে পেরেছি।

. আহমেদ কায়কাউস বলেন আরো বলেন, আমাদের অনুষ্ঠানে সৌদি আরবের মন্ত্রী উপস্থিত রয়েছেন। তিনি সম্ভবত আগামীকাল বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখতে আকাশপথে ভ্রমণ করবেন। আমি তাকে অনুরোধ করব তিনি যেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হেলিকাপ্টারে করে ঘুরে দেখেন। বিশেষ করে ঢাকা শহরের চারদিক থেকে একবার ঘুরে আসেন। তাহলে আপনি দেখতে পারবেন দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। দেশের যেকোনো প্রান্তে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বিদুৎ খাতে আমাদের বড় ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে। অন্যান্য খাতেও বড় বিনিয়োগ রয়েছে। মাতারবাড়ী, পায়রা বন্দরেও বড় বিনিয়োগ করা হয়েছে। সরকার গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগে গুরুত্ব আরোপ করেছে।

বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অন্যান্যসহ ৫০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এমন তথ্য উল্লেখ করে . আহমেদ কায়কাউস বলেন, সরকার বড় আকারের বিনিয়োগ করেছে। আমাদের স্বল্প আয় উৎপাদনশীলতার দেশ হিসেবে ধরা হতো। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা এখন আর স্বল্প দক্ষ শ্রমিকের দেশ নই। খুব দ্রুত পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণ ঘটেছে বাংলাদেশের। দারিদ্র্যের হার কমে হয়েছে প্রায় ২০ দশমিক শতাংশ। কভিডের কারণে হার বেড়েছে বলে বিতর্ক থাকলেও আমি মনে করি তা সাময়িক এবং এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। মাথাপিছু আয় হাজার ৫৫৪ ডলার। ভূমিস্বল্পতা নিয়ে বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে তৃতীয়। বিশ্বের ৩৯তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশী হিসেবে আমরা গর্বিত এবং আমরা খুব আত্মবিশ্বাসী যে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমরা বেশ ভালো অবস্থায় আছি।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ৫০ বছরের সফলতার প্রশংসা করে বলেন, দেশের সম্ভাবনার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জও আছে। সরকারি বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি টেকসই করার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ উৎসাহ দিতে কাজ করছে বাংলাদেশ।

এনবিআরের সদস্য তার বক্তব্যে বলেন, শেষ পাঁচ মাসে বাংলাদেশের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ২৫ শতাংশ। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে রাজস্ব কাঠামোর বিষয়েও আলোকপাত করেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় দক্ষিণ এশিয়ায় ইউনিলিভারের প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব মেহতা বাংলাদেশের বাজারের সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা করেন। সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য যা ভালো তা ইউনিলিভারের জন্য ভালো।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন