শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার বিষয়ে মালিক-শ্রমিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। গতকাল দুপুর পৌনে ১২টায় শুরু হওয়া আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে হাফ ভাড়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
বৈঠক শেষে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে। ঢাকার ৮০ শতাংশ বাস মালিক গরিব। হাফ ভাড়া নিলে মালিকদের যে ক্ষতি হবে, তা সরকার কীভাবে পূরণ করবে? সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। সবার সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে এনায়েত উল্লাহ বলেন, হাফ ভাড়ার দাবিতে বাস ভাংচুর, শ্রমিকদের মারধর অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ, তারা যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যায়।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, বাসে হাফ ভাড়া বাস্তবায়নে পরিবহন নেতারা আন্তরিক। কিন্তু তাদের যে ক্ষতি হবে, তা কীভাবে পূরণ করা হবে, কত ভর্তুকি দেয়া হবে—সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য সরকার ও পরিবহনে সম্পৃক্তদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব এসেছে।
তিনি বলেন, টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে। টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত আসবে, তা সেভাবে বাস্তবায়ন হবে। তবে পরিবহন নেতাদের পক্ষ থেকে কনসেশন দেয়ার প্রস্তাব এসেছে। কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কত ছাত্র, কতজন বাস ব্যবহার করে, তার একটা পরিসংখ্যান চেয়েছেন নেতারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেই তথ্য দেবে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন ধরে বাসে হাফ ভাড়া পাসের দাবিতে বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যেই গত বুধবার গুলিস্তানে রাস্তা পার হওয়ার সময় ডিএসসিসির একটি ময়লাবাহী গাড়ির চাপায় নটর ডেম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যুতে শিক্ষার্থীরা আবারো রাজপথে নেমে আসেন। শিক্ষার্থীদের দেয়া ছয় দাবির মধ্যে রয়েছে সবার জন্য সড়ক নিরাপদ করা, ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে পাস হওয়া আইন বাস্তবায়ন, নাঈমের মৃত্যুতে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা ও ক্ষতিপূরণ দেয়া, গুলিস্তানে পদচারী-সেতু ও সব সড়কে কঠোরভাবে ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করা।