বৈদ্যুতিক গাড়িতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করছে জাপান

বণিক বার্তা ডেস্ক

জাপানের তোচিগি অঞ্চলে নিশানের বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন কারখানা ছবি: রয়টার্স

দেশের মানুষ যেন আরো বেশি পরিমাণে বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে পারে সেজন্য প্রণোদনার পরিমাণ দ্বিগুণ করতে যাচ্ছে জাপান। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতেই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য উন্নত অর্থনীতির দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাপানও বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জিংয়ের অবকাঠামোগুলোয় ভর্তুকি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এজন্য দেশটির সরকার চলতি অর্থবছরের জন্য সম্পূরক বাজেটে ৩২ কোটি ৯০ লাখ ডলার ভর্তুকি হিসেবে বরাদ্দ দিতে চায়। বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য ভর্তুকির পরিমাণ লাখ ইয়েন পর্যন্ত দেয়া হতে পারে। প্রকল্পের আওতায় প্লাগ ইন হাইব্রিড ফুয়েল সেল বাহনগুলোকেও নেয়া হবে।

গোটা বিশ্বই যখন জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক গাড়ি থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখন জাপানেরও আশা যে, তার দেশের মানুষ দ্রুত বৈদ্যুতিক গাড়ি গ্রহণ করবে। যদিও এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে তেমন অগ্রগতি দেখা যায়নি। গত বছর জাপানে যে পরিমাণ গাড়ি বিক্রি হয়েছে তার মাত্র শতাংশ ছিল বিদ্যুচ্চালিত।

২০৩৫ সালের মধ্যে জাপানে বিক্রি হওয়া সব যাত্রীবাহী পরিবহনকে পরিবেশবান্ধব বাহনে পরিণত করতে চায় জাপান। লক্ষ্যে হাইব্রিড গাড়িগুলোও রয়েছে, যা বৈদ্যুতিক গাড়ির চাইতেও বেশি জনপ্রিয়। ৩০ হাজারের বেশি বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য ভর্তুকি দিতে গেলে জাপান সরকারকে আরো আড়াই হাজার কোটি ইয়েন ব্যয় করতে হবে।

জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়াও জাপানের প্রণোদনা স্কিমের আদলে ভর্তুকি দেয়ার কথা জানিয়েছে। নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারীর কারণে দেশের অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণে অনেক দেশই এমন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।

গত অর্থবছরই জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পূরক বাজেটে ভর্তুকির সীমা বাড়িয়ে লাখ ইয়েন করে। কিন্তু এটা তখনই কার্যকর হবে যখন বাড়িতে বা কর্মস্থলে বসে এসব গাড়িতে নবায়নযোগ্য উৎস ব্যবহার করে চার্জ দেয়া হবে। গ্রাহকদের জন্য এটি বেশ ব্যয়বহুল কঠিন পূর্বশর্ত হিসেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফুয়েল সেল গাড়িগুলো প্রণোদনা পাবে ২৫ লাখ ইয়েন পর্যন্ত। যদিও একই আকৃতির গ্যাসচালিত গাড়ির দামের পার্থক্য এক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য তৈরি করবে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, টয়োটা মোটরসের মিরাই গাড়ির জন্য ভর্তুকির মাত্রা এখন ১৫ লাখ ইয়েন। বাজেটে হাইড্রোজেন ফিলিং স্টেশগুলোর জন্য ৬০০ কোটি ইয়েন বরাদ্দ রাখার কথাও বলা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য যথাযথ পরিমাণ চার্জিং অবকাঠামো না থাকায় জাপানে গাড়ির বিক্রি কম হয়েছে। দেশটিতে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য দশমিক ৩টি চার্জিং অবকাঠামো রয়েছে। অন্যদিকে ফ্রান্সে এর পরিমাণ দশমিক ৯। সে কারণে চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা দেড় লাখে উন্নীত করা হবে, যা এখন রয়েছে মাত্র ৩০ হাজারটি। বাজেটে যে আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে সেখান থেকেই উন্নয়নের কাজ চলবে।

একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রও চার্জিং স্টেশন খাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তারা চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা পাঁচ লাখে উন্নীত করতে চায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন