যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক-কভিডের কাছাকাছি ব্ল্যাক ফ্রাইডের বিক্রি

বণিক বার্তা ডেস্ক

অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই কেটেছে এবারের ব্ল্যাক ফ্রাইডে। শপিং মল দোকানগুলোয় সীমিত পরিসরে লোকজনের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। সশরীরে কেনাকাটার পাশাপাশি অনলাইন শপিং এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে মানুষের কাছে। ক্রিসমাস পর্যন্ত অনলাইন, অফলাইন উভয় স্থানেই মূল্যছাড়সহ নানা সুবিধা দিয়ে থাকেন বিক্রেতারা।

এপির খবরে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এবারের ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে বিক্রির পরিমাণ ২৯ দশমিক শতাংশ বেড়েছে। মাস্টারকার্ড স্পেন্ডিংপ্লাস এমন তথ্য জনায়, যা পূর্বাভাসের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। প্রতিষ্ঠানটি সাধারণত ক্যাশ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্টের সব তথ্য শনাক্ত করে। মাস্টারকার্ডের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা স্টিভ স্যাদভ জানান, পেমেন্ট কার্যক্রমে এমন বৃদ্ধির হারে বোঝা যায় যে ভোক্তাদের চাহিদা শক্তিশালী আকার ধারণ করেছে।

এবারের ব্ল্যাক ফ্রাইডেতে সরবরাহ চেইনে প্রতিবন্ধকতা, খাদ্য গ্যাসের উচ্চমূল্য এবং শ্রমিক সংকটের ফলে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। অবস্থা বিক্রেতাদের মনোবল অনেকটাই ব্যাহত করেছে বলেও জানায় সংশ্লিষ্টরা।

মিনেসোটার ব্লুমিংটনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহদাকারের শপিং মল দ্য মল অব আমেরিকার কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার দুপুরে মলটিতে প্রায় এক লাখ মানুষ আসে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ, তবে ২০১৯ সালের তুলনায় কিছুটা কম। শপিং মলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জিল রেনস্লো বলেন, আমরা একটি দুর্দান্ত শুরু করেছি।

এবার অধিকাংশ খুচরা বিক্রেতা রেস্টুরেন্টগুলো কর্মী সংকটে ভুগেছে। সংকটের প্রভাব পড়েছে শপিং মলগুলোয়। মল অব আমেরিকা কর্তৃপক্ষ জানায়, কর্মী সংকটের কারণে ব্ল্যাক ফ্রাইডের দিনে শপিং মলের কার্যক্রম শুরু করতে তাদের বেশ সময়ক্ষেপণ করতে হয়েছে।

চলতি বছর সামগ্রিকভাবে ছুটির দিনের বিক্রি বাড়ার আশা প্রকাশ করেছে বিশ্লেষকরা। দ্য ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের ধারণা অনুযায়ী, নভেম্বর ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটির দিনগুলোয় বিক্রির হার দশমিক শতাংশ থেকে শুরু করে ১০ দশমিক শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। ২০২০ সালের একই সময়ে বিক্রি বৃদ্ধির হার ছিল শতাংশ।

সাধারণত ব্ল্যাক ফ্রাইডের দিনটি আমেরিকানদের জন্য অফুরন্ত কেনাকাটার দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গত এক দশকে অনলাইন খুচরা বিক্রেতাদের দাপটে দিনটি তার জৌলুশ অনেকটাই হারিয়েছে। দিনের পর দিন বিজ্ঞাপনের ফলে দিনটির আমেজ আরো কমিয়ে এনেছে বিক্রয়কেন্দ্রগুলো।

মহামারীর কারণে অনেক খুচরা বিক্রেতা থ্যাংকসগিভিং ডে উপলক্ষে তাদের বিক্রয় কেন্দ্র বন্ধ রেখেছে। পরিবর্তে ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রকার মূল্যছাড়ের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। অক্টোবরের শুরু থেকেই বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধের প্রবণতা শুরু হয়। বছরের বাকি দিনগুলোয়ও এমন চলার শঙ্কা রয়েছে।

চলতি বছর সরবরাহ চেইনে বিশৃঙ্খলা একটি বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্যই। অনেক ক্রেতাই আশঙ্কার ফলে সরাসরি স্টোর থেকে উপহার ক্রয়ের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

টিম ক্লোবার্ন নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি নিশ্চিত নই যে তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমার পণ্য পৌঁছাতে পারবে। তাই আমি সরাসরি ক্রয়ের পক্ষে, এতে আমাকে শিপিং নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

তবে অনলাইন শপিংয়ের পরিমাণ বৃহদাকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি সপ্তাহে অনলাইন শপিং শতাংশ বাড়ার আশা করা হচ্ছে। এক বছর আগে বৃদ্ধির হার ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত স্পর্শ করেছিল। বিক্রেতারা আশা করছেন, গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ অনলাইন বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। ২০২০ সালে বার্ষিক বিক্রয় প্রবৃদ্ধির হার ৩৩ শতাংশ স্পর্শ করেছিল। অ্যাডোবি ডিজিটাল ইকোনমি ইনডেক্স অনুসারে তথ্য জানা যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন