স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশ অনুমোদন দিয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। ২৪ নভেম্বর সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় সুপারিশটি অনুমোদন হয়। এ বিষয়ে অভিমত জানিয়েছেন বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা
সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের উদ্যোগে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা করা হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সালে সে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এরই মধ্যে কয়েকটি দেশ এ তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হয়েছে। ২৪ নভেম্বর স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের সুপারিশ অনুমোদন দিয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। এটা কাঙ্ক্ষিতই ছিল। এখন অর্থনীতির সক্ষমতা বাড়াতে সরকারকে মনোযোগী হতে হবে। দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। আমদানি শুল্ক কমানোসহ উচ্চমাত্রার সংরক্ষণমূলক নীতি পাল্টাতে হবে সরকারকে। তেমন পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে ব্যবসায়ীদের এখনই উদ্যোগী হতে হবে। যতটা সম্ভব কম্পিটিটিভনেস বাড়াতে হবে। আমাদের এক্সেঞ্জ রেট ইস্যু আছে, পোর্ট ইস্যু আছে, পরিবহন ইস্যু আছে, এগুলোকে অ্যাড্রেস করতে হবে। রফতানি বাড়াতে হলে সেই পরিবেশ, মার্কেট অ্যাকসেস সৃষ্টি করার দায়িত্ব সরকারের। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের পক্ষ থেকে সুপারিশ অনুমোদন নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য বড় অর্জন। তবে এর চ্যালেঞ্জও আছে। জাতিসংঘের এ স্বীকৃতির ফলে বিশ্ববাজারে বর্তমানে বাংলাদেশ যেসব সুবিধা পায়, তা বন্ধ হওয়ার সময় গণনা শুরু হলো। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠলে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া এবং বিভিন্ন রফতানি সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। কৃষিতে ভর্তুকি সুবিধা সীমিত করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে বাণিজ্য প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়বে তা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশ্ববাজারে বিপণন ও বিনিয়োগ আকর্ষণ এক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে। তবে মূল সমস্যা হলো একমাত্র ভুটান ছাড়া আর কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের এফটিএ বা পিটিএ নেই। আমাদের উন্নত দেশগুলো ছাড়াও ভারত ও চীনের মতো বড় বড় উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে এফটিএ বা পিটিএ করতে হবে। অন্যদিকে ইইউর জিএসপি প্লাস পাওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে।