বড় আকারের উদ্বৃত্তের পথে প্লাটিনামের বৈশ্বিক বাজার

বণিক বার্তা ডেস্ক

দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত একটি প্লাটিনাম খনি ছবি: মাইনিং ডটকম

চলতি বছর প্লাটিনামের বৈশ্বিক বাজারে বড় আকারের উদ্বৃত্ত থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বাজারে সরবরাহের আধিক্য বজায় থাকবে আগামী বছরও। ফলে স্বর্ণের চেয়েও মূল্যবান ধাতুটির বাজারদর কমে আসবে। ওয়ার্ল্ড প্লাটিনাম ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল (ডব্লিউপিআইসি) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে তথ্য জানিয়েছে।

বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে দেশে উৎপাদন বাড়লেও মূল্যবান ধাতুটির বিনিয়োগ চাহিদা পড়তির দিকে, যা মোট চাহিদাকে চাপের মুখে ফেলেছে। ফলে বছর শেষে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি সরবরাহ থাকবে।

ডব্লিউপিআইসি জানায়, সংস্থাটি চলতি বছরের মে মাসে প্লাটিনামের বৈশ্বিক ঘাটতির পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি ইতিবাচক দিকে মোড় নেয়ায় সেপ্টেম্বরে লাখ ৯০ হাজার আউন্স উদ্বৃত্তের পূর্বাভাস দেয়া হয়। তবে চলতি মাসে উদ্বৃত্ত পূর্বাভাস চমকপ্রদভাবে বাড়ানো হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, বছর শেষে প্লাটিনামের উদ্বৃত্ত থাকবে লাখ ৬৯ হাজার আউন্স। বছরের তৃতীয় প্রান্তিকেই (জুলাই-সেপ্টেম্বর) উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে লাখ ৯২ হাজার আউন্সে, যা প্রান্তিক ভিত্তিতে আট বছরের সর্বোচ্চ উদ্বৃত্ত। এদিকে আগামী বছর শেষে উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়াবে লাখ ৩৭ হাজার আউন্সে।

গাড়ি নির্মাতারা ইঞ্জিন থেকে কার্বন নিঃসরণ রোধে প্লাটিনাম ব্যবহার করেন। অলংকার গ্লাস তৈরিসহ শিল্প খাতেও প্লাটিনামের কদর রয়েছে। বিনিয়োগের জনপ্রিয় একটি মাধ্যমও প্লাটিনাম।

করোনা মহামারী সংকট কাটিয়ে চলতি বছর বিশ্বজুড়ে প্লাটিনাম উৎপাদন লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে। বছর শেষে ধাতুটির উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ডব্লিউপিআইসি। কিন্তু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চাহিদা কমে যেতে পারে বড় পরিসরে।

সংস্থাটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি বছর প্লাটিনামে বিনিয়োগ চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে লাখ ২৫ হাজার আউন্সে, যা গত বছরের তুলনায় ৮৫ শতাংশ কম। এতে মূল্যবান ধাতুটির মোট চাহিদা গত বছরের তুলনায় শতাংশ কমতে পারে।

যদিও বর্তমানে সেমিকন্ডাক্টর চিপের বৈশ্বিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে বিশ্বজুড়ে কমছে গাড়ি নির্মাণ। এদিক থেকেও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে প্লাটিনামের চাহিদা। যদিও ডব্লিউপিআইসি বলছে, গাড়ি নির্মাণ শিল্পে চলতি বছর ধাতুর চাহিদা ১৪ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ কার্বন নিঃসরণসংক্রান্ত নীতিমালা কঠোর হওয়ায় অটো-ক্যাটালিস্ট তৈরিতে আরো বেশি প্লাটিনাম ব্যবহার করছেন গাড়ি নির্মাতারা। এদিকে অন্য শিল্প খাতেও ধাতুটির চাহিদা ২৬ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডব্লিউপিআইসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গাড়ি নির্মাণ অন্যান্য শিল্পে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার কারণে আগামী বছর প্লাটিনামের ফিজিক্যাল সরবরাহে ভারসাম্য থাকবে। কিন্তু ওই বছর বিনিয়োগে ধাতুটির চাহিদা আরো কমবে। ফলে উদ্বৃত্তও থাকবে অনেক বেশি।

তথ্য বলছে, বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্লাটিনামের দাম আউন্সপ্রতি হাজার ৩০০ ডলারে উন্নীত হয়েছিল, যা সাত বছরের সর্বোচ্চ। তবে বিনিয়োগ কমতে থাকায় দাম কমতে শুরু করে। সর্বশেষ ধাতুটির আউন্সপ্রতি দাম হাজার ডলারে স্থির হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন