স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সংসদে বিশেষ স্মারক বক্তৃতা

রাজনৈতিক দলের প্রতি পরমতসহিষ্ণুতার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়তে রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণু হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একই সঙ্গে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে সুশীল সমাজের এগিয়ে আসার কথা জানান তিনি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ আলোচনার স্মারক বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি গতকাল এমন আহ্বান রাষ্ট্রপতি।

গতকাল বেলা ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা গত সোমবার অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। অধিবেশনের আগের বৈঠকগুলোয় সংসদ সদস্যরা পালা করে অংশগ্রহণ করেন। তবে কভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ পাওয়া সব সদস্য গতকালের বৈঠকে অংশ নেন।

বক্তব্যকালে অর্থনৈতিক সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, কিছু কিছু সূচকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। শিশুমৃত্যু হ্রাসসহ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অর্জনে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জনের কারণে বাংলাদেশকে সংশ্লিষ্ট পুরস্কারও দিয়েছে জাতিসংঘ। দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় যেখানে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৭, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ বছরের ওপরে।

রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার গল্প উঠে আসে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সাহচর্য পাওয়া আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রয়োজন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবার মধ্যে ঐক্য। ঐক্য গড়ে তুলতে হবে সাম্প্রদায়িকতা, অগণতান্ত্রিকতা সহিংসতার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণুতা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে দল-মতের পার্থক্য ভুলে উন্নয়নের যাত্রায় শামিল হওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে জাতিসংঘ। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং উপযুক্ত নীতি কার্যক্রমের অভাবে অর্থনীতিতে তেমন গতি সঞ্চার হয়নি। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে দেশ আজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্টের নির্ধারিত তিনটি সূচক মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকের প্রতিটিতে নির্ধারিত স্কোরের বেশি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ, দূরদর্শী অদম্য নেতৃত্বের জন্য আমাদের অর্জন সম্ভব হয়েছে। এজন্য আমি তাকে আন্তরিক অভিনন্দন ধন্যবাদ জানাই।

দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তথ্য কমিশন সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার রায় দ্রুত নিষ্পত্তি করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সময় বাংলাদেশের শিল্প, অর্থনীতি, কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জনের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন