দাম বাড়াতে চাপ অনুভব করছে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো

বণিক বার্তা ডেস্ক

ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ব্যয় ২০ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে ছবি: রয়টার্স

দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ানোর জন্য চলতি মাসে চাপের মুখে পড়ছে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো। উৎপাদন খরচের পরিমাণ ক্রমে বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নভেম্বরে বিভিন্ন কাঁচামালের দাম, জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতনও বৃদ্ধি পায়। এসব বিষয় একীভূত হয়ে উৎপাদনকারীদের খরচ বাড়িয়ে তুলছে বহুগুণ। ফলে ১৯৯৮ সালের পর থেকে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির গতি রেকর্ড স্পর্শ করে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

আইএইচএস মার্কিটের মাসিক জরিপ অনুযায়ী দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে খরচ বৃদ্ধির প্রভাবে সব ধরনের বেসরকারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয় বেড়েছে। তবে সময়ে কেবল উৎপাদকরা তাদের নিজস্ব চার্জ বাড়ানোর মাধ্যমে ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। উৎপাদন খরচ ২০ বছরের সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন প্রতিক্রিয়া দেখায় উৎপাদকরা। জরিপ প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ভোক্তা পর্যায়ে খরচের পরিমাণ কমে আসায় ব্যয় বৃদ্ধির সব খাতে ভর্তুকি বহন করার মতো পরিস্থিতি প্রতিষ্ঠানগুলোর ছিল না।

বিশ্লেষকরা জানান, ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের চাপ দ্য ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের (বিওই) আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় সভায় সুদের হার বাড়াতে প্ররোচিত করছে। গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলিসহ ব্যাংকের মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা কমিটির (এমপিসি) অনেক সদস্যই জানান, মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান চাপ মোকাবেলায় সুদহার বৃদ্ধির একটি উদ্যোগ আসন্ন।

অর্থনৈতিক গবেষণা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্যান্থিয়ন মাইক্রোইকোনমিকসের প্রধান ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ স্যামুয়েল টোম্বস জানান, জরিপে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে বলা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদার পরিমাণে ক্রমবর্ধমান হার উপভোগ করছে এবং তারা কর্মসংস্থানের পরিমাণও বৃদ্ধি করছে। ধরনের পরিস্থিতি এমপিসি সদস্যদের আশ্বস্ত করে যে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সুদের হার সামান্য বাড়ানো হলে ব্রিটিশ অর্থনীতির জন্য তা সহনশীল হবে।

আইএইচএস মার্কিটের প্রধান ব্যবসায়িক অর্থনীতিবিদ ক্রিস উইলিয়ামসন জানান, টেকসই ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির হার আগামী ডিসেম্বরে সুদের হার বাড়ানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক ইঙ্গিত প্রদান করে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদের হার বৃদ্ধি নিয়েও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মহামারীকালীন সুদের ভিত্তিহার দশমিক শতাংশ থেকে বাড়িয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভিত্তিহার দশমিক শতাংশে উন্নীত করা হতে পারে।

এমপিসি সদস্য জনাথন হাস্কেল ইঙ্গিত দেন, সুদের হার বাড়ানোর জন্য তার কোনো তাড়া নেই। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির দুই-তৃতীয়াংশ চাপ বাইরে থেকে এসেছে, যা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।

গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডাম স্মিথ বিজনেস স্কুলে দেয়া এক বক্তব্যে জনাথন হাস্কেল বলেন, মূল্যস্ফীতির অধিকাংশই ঘটেছে বিশ্বব্যাপী নানা ঘটনার কারণে। কাঁচামালের আমদানি মূল্য জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ার ফলে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এসবের অধিকাংশই ক্ষণস্থায়ী হবে।

তিনি জানান, যখন সুদের হার বৃদ্ধির পক্ষে তিনি ভোট দেবেন, তার মানে দাঁড়ায় একটি স্থায়ী পুনরুদ্ধার কার্যক্রম তার গতিতে চলমান রয়েছে, যা ১০০ বছরের সবচেয়ে খারাপ অর্থনীতির ধাক্কায় রাজস্ব, স্বাস্থ্য বিজ্ঞাননীতির সফলতা দিয়ে মোকাবেলা করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন