পর্যালোচনা

ধনীদের দেশন্তরী হওয়ার সুলুক সন্ধানে

ড. আরএম দেবনাথ

পাকিস্তান আমলের শেষের দিকে সত্তরের দশকে আমরা নতুন একটা সমস্যার সঙ্গে পরিচিত হই। আমরা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কিছুদিন পরপর খবরের কাগজের আলোচিত বিষয় হচ্ছে ব্রেন ড্রেন ব্রেন কীভাবে ড্রেন হয়? মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা যখন দেশত্যাগ করে ভিন দেশে বসতি স্থাপন করে তারই নাম ব্রেন ড্রেন দেখা যাচ্ছিল যারা বিদেশে যাচ্ছেন পড়াশোনা করতে তারা আর দেশে ফেরেন না। কেউ সরকারি বৃত্তিতে যান, কেউ আন্তর্জাতিক নানা প্রতিষ্ঠানের বৃত্তিতে যান উচ্চতর পড়াশোনা করতে। কিন্তু পড়াশোনা গবেষণা শেষে দেশে ফেরেন কম। বলা হতো দেশে ফিরে কী করবেন? দেশে উপযুক্ত কোনো কাজ নেই। কাজের পরিবেশ নেই। গবেষণা করার মতো সুযোগ-সুবিধা নেই। বেতন-ভাতা কম। মোট কথা দেশে আকর্ষণীয় কিছু নেই। ঢাকা তখন রিকশার শহর, মুড়ির টিনের মতো বাসের শহর। সদরঘাট থেকে গুলিস্তান, গেণ্ডারিয়া থেকে লালবাগ এই হচ্ছে ঢাকা শহর। নিউমার্কেট ইত্যাদি নতুন নতুন বাজার হচ্ছে, হবে করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস বিল্ডিং-এর সামনে বড়জোর দুই-চারটা মোটর গাড়ি দেখা যেত। হেঁটে-সাইকেলেই সব কাজ করা যায়। এমন একটা পরিবেশে যারা বিদেশের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, পিএইচডিধারী, বড় বড় গবেষক, মাস্টার্স করাতাদের ভালো লাগত না। তাই গ্রাম থেকে ঢাকা, তারপর দেশের পড়াশোনা শেষে লন্ডন যাওয়া একটা স্বপ্নে পরিণত হয়। কমার্সের (কম কম আর্টস বলা হতো) ছেলেরা লন্ডনে যেত। চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি (সিএ) পড়ার জন্য। এই যে শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেষে বিদেশে পড়াশোনার পর সেখানেই থেকে যাওয়া, তাকেই বলা হতো ব্রেন ড্রেন বলা যায় মেধা পাচার বিশাল এক সমস্যা। গরিব দেশ। মেধাবী ছেলেমেয়েদের দরকার, শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের দরকার। অথচ তারা বিদেশে গেলে আর দেশে ফিরতে চান না। সমস্যা একটা রাজনৈতিক সমস্যায় পরিণত হয়। বলা হয় এই ব্রেন ড্রেন থামাতে হবে। মেধাবীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের কাজ করার পরিবেশ দিতে হবে। গবেষণার সুযোগ দিতে হবে। তখনকার এই ব্রেন ড্রেন সমস্যায় টাকাওয়ালাদের সমস্যা ছিল না। অতিধনী কেনো, ধনী ব্যক্তিই বা কতজন। হাতে গোনা কয়েকটা ব্যবসায়ী পরিবার তারাই ধনীলোক। তাদের কেউ অতিধনী বলত না। বস্তুত তখন লাখ টাকার মালিককেই ধনীলোক বলা হতো। লাখ টাকার মালিক হলে তার বাড়িতে শিখা অনির্বাণের মতো ঘি-এর বাতি জ্বলত। কিন্তু কয়জন লাখপতি ছিল দেশে? তখনকার দিনে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম ছিলেন দেশের সবচেয়ে বড় ধনী। মতিঝিলে তার ১১তলা বিল্ডিং ছিল লিফট ছাড়া। একে খান ছিলেন চট্টগ্রামের ধনী ব্যক্তি। কিন্তু কাউকে অতিধনী আখ্যায়িত হতে শুনিনি। তখনকার ব্যবসায়ীদের দেশে মোটামুটি বড় ব্যবসা ছিল। মামুলি ব্যবসা। বড় ব্যবসা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের (বর্তমান পাকিস্তান) দখলে। ব্যাংক-বীমা, বড় বড় কল-কারখানা, আমদানি-রফতানি ব্যবসা ছিল তাদের হাতে। বড় ব্যবসা কিছু ছিল বাঙালি হিন্দুদের হাতে, মাড়োয়ারি হিন্দুদের হাতে। তারা ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ভারতে চলে যায়। শূন্যস্থানও দখল করেন অবাঙালি ব্যবসায়ীরা। বাঙালির ব্যবসা ছিল মামুলি ধরনের বড় ব্যবসা। যেমন জহুরুল ইসলাম ধনী হন, অতিধনী নন, কনস্ট্রাকশন ব্যবসা করে, আবাসন ব্যবসা করে। পাকিস্তানের শেষের দিকে পাকিস্তান সরকারের আনুকূল্যে বস্তুত বিনা পয়সায় কেউ কেউ পাটকল, বস্ত্রকলের মালিক হন। তখন তৈরি পোশাক খাতের নামও কেউ জানত না।

প্রশ্নহলো তত্কালে। ধনীরা কী দেশ ত্যাগ করতেন? মোটেই না। তাদের বিচরণ ক্ষেত্র ছিল বাংলাদেশ, তখনকার পশ্চিম পাকিস্তান। ধনীরা সস্তা বিমান ভাড়ায় বড়জোর নিজ দেশ পশ্চিম পাকিস্তানে যেত। তখন তাই অতিধনীদের দেশান্তরী হওয়ার খবর ছিল না। কিন্তু আজ? আজ প্রায় নিত্যদিন অতিধনীদের কথা শুনি। ধনীর কথা কেউ বলে না। লাখপতিরা এখন গরিব মানুষ টাকায় গ্রামেও এখন এক বিঘা জমি মিলে না। বস্তুত এখন হিসাবপত্র লাখ-কোটিতে হয় না। এখনকার হিসাব মিলিয়ন (১০ লাখ), বিলিয়ন (১০০ কোটি) তাও টাকার হিসাবে নয়, ডলারে, পাউন্ডে। ডলার এখন ঘরে ঘরে। বাচ্চারা ডলারের নোট দিয়ে খেলে। আমরা ছোটবেলায় খেলতাম ফুটো করা তামার এক পয়সা দিয়ে, মার্বেল দিয়ে, বল্টু দিয়ে। কী বিশাল পরিবর্তন। রাষ্ট্র, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতায়ও। আচার-ব্যবহার, দৃষ্টিভঙ্গি, জীবন ধারণ, মনোজগৎ সবকিছু বদলে গেছে। ধনীরা অতিধনী হওয়ার ব্যবস্থা করছে। আর অতিধনীরা দেশান্তরী হওয়ার ব্যবস্থা করছে। বাংলাদেশের সমাজ তাদের ভালো লাগে না। এখানকার পরিবেশ তাদের ভালো লাগে না। ঢাকা শহরের বায়ু দূষিত, জল দূষিত। এখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ভালো ডাক্তার নেই। এখানে কেউ কারো কথা শোনে না। ব্যবসা-বাণিজ্য করার ব্যবস্থা নেই। পদে পদে অনিয়ম। আমলাতন্ত্র। কোনো কাজ করার জো নেই। জীবন এখানে অনিশ্চিত। ছেলেমেয়েদের জীবন অনিশ্চিত। ছেলেমেয়েরা বাইরে থেকে লেখাপড়া করছে, দেশে ফিরতে চায় না। সিলেটের চতুর্থ প্রজন্মের লন্ডনপ্রবাসীরা দেশের সম্পত্তি-সম্পদ বিক্রি করে চূড়ান্তভাবে দেশত্যাগ করছেন বলে কিছুদিন আগে সিলেটের একজন রাজনৈতিক নেতা বলেছেন। যারা দেশে আসেন ব্যবসা করার জন্য, ব্যাংক-বীমা ব্যবসা করার জন্য তারা মুখে বলেন বিদেশ থেকে তারা ডলার-পাউন্ড বিনিয়োগের জন্য আসবেন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এসব ব্যবসায়ীরা শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে ব্যাংকের টাকা মেরে বিদেশে আস্তানা গড়ছেন। লুঙ্গি পরা বাঙালি, শুঁটকি মাছের বাঙালিদের কেউ কেউ অতিধনী হয়ে বাংলাদেশকে টা টা, বাই বাই দিচ্ছেন। টা টা বাই বাই দিচ্ছেন কথা আর নয়। কার?

বণিক বার্তার (১৮-১১-২১) খবর: ভারত বাংলাদেশের অতিধনীরা দেশান্তরী হচ্ছেন: খবরটির শিরোনামে একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন আছে। কিন্তু ভেতরের খবরে দেখা যাচ্ছে যারা যাচ্ছেনএর ওপর পরিসংখ্যান আছে। বণিক বার্তার খবরে বলা হচ্ছে সরকারি, বেসরকারি, বিভিন্ন উৎসে পাওয়া তথ্য বলছে, তিন থেকে পাঁচ হাজার উদ্যোক্তা অতি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাংলাদেশের বাইরে এক বা একাধিক দেশে নিবাস গড়ে তুলেছেন। ব্যবসা পরিচালনার সুবিধার্থে বসবাসের জন্য কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দুবাই, হংকং, সিঙ্গাপুরসহ বড় বড় বাণিজ্যিক আর্থিক হাবকেই বেছে নিচ্ছেন তারা। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে যারা গেছে তারা ব্যবসায়ী অতি ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তারা ব্যবসার স্বার্থে স্বল্প পছন্দের দেশে গিয়েছেন। খবরের পৃষ্ঠে অনেক প্রশ্ন আছে। প্রথমত অতিধনী কারা, তাদের ব্যাংকঋণ আছে কিনা এবং তা থাকলে পরিশোধের ব্যবস্থা কী? তাদের জন্য রাষ্ট্র যে ঋণ করেছে অর্থাৎ আমাদের মাথাপিছু যে বৈদেশিক ঋণ তা পরিশোধ করবে কে? কোথায় তারা যাচ্ছে তা সবারই জানা, অতএব ব্যাপারে প্রশ্ন না তোলাই ভালো। কিন্তু প্রশ্ন তারা যদি বিদেশ থেকে প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে তো দেশে থেকেই বিদেশের ব্যবসা তারা পরিচালনা করতে পারেন। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, তারা কী বৈধ পথে এসব করছেন? বিদেশে অফিস করতে গিয়ে সরকারি যে বাধা-নিষেধ আছে, বিদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব বাধা-নিষেধ আছে তা মেনে এসব করছেন? এমন হাজারো প্রশ্ন আছে যার উত্তর দরকার। শুধু দেশান্তরী হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার বলে বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখার উপায় নেই।

অতিধনীরা ১০ লাখ ডলারের মালিক। অর্থাৎ ১০ লাখ ডলারের মালিক হলেই তাকে অতিধনী বলা হচ্ছে। ২০১৪-১৮ সালের মধ্যে পরিমাণ সম্পদের মালিক ২৩ হাজার অতিধনী দেশান্তরী হয়েছেন। বলাই দরকার তারা অতিধনী হয়েছেন, কমপক্ষে - কোটি টাকার মালিক হয়েছেন হাওয়া থেকে নয়। অতিধনী ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা ব্যাংকের সৃষ্টি। আমরা জানি, ১৯৮২-৮৩ সালেও একটা বেসরকারি ব্যাংক করার জন্য যে পুঁজি দরকার তা একজন বাঙালির ছিল না। কয়েকজন মিলেও ছিল না। সরকারি ব্যাংকের টাকায় তারা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন। ওই সময়ের কাগজের লেখা পড়লেই তা বোঝা যাবে। আমি নিজেও এর ওপর তখন বহুবার লিখেছি। ১৯৭৬ সালে -- কোটি টাকা দিয়ে বেসরকারি খাতে ফাইন্যান্স কোম্পানি করার মতো বাঙালি ছিল না। ব্যাংকগুলো উদারভাবে ঋণ দিয়ে তাদের উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী বানিয়েছেন। সেজন্য ব্যাংকগুলোর বদনামের শেষ নেই। বদনাম নিয়েই ব্যাংকগুলো তাদের অতিধনী বানিয়েছে। -১০ কোটি টাকার মালিক নয়, শত শত কোটি টাকার মালিক, রফতানিকারক বানিয়েছে। প্রশ্ন ওই টাকা তারা ফেরত দিয়ে দেশান্তরী হচ্ছেন কিনা। নাকি দুই দেশের নাগরিক হয়ে দেশের সুবিধাও পাচ্ছেন। ওই দেশের সুবিধাও নিচ্ছেন। এটা বৈধ কিনা এটা বড় প্রশ্ন। বলাই বাহুল্য, দেশের যদি দ্রুত উন্নয়ন না হতো, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার যদি -- শতাংশ না হতো, রফতানি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার না হতো, রেমিট্যান্স বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার না হতো, তাহলে তারা অতিধনী হতে পারতেন না। দেশের উন্নয়ন করতে গিয়ে সরকারকে অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে বিদেশ থেকে প্রচুর ঋণ করতে হয়েছে। প্রশ্ন, তারা এবং তাদের পোষ্যরা যদি বিদেশের নাগরিক হন তাহলে তাদের খাতে যে বিদেশি ঋণ করা হয়েছে, মাথাপিছু যে বৈদেশিক ঋণ হয়েছে তা পরিশোধ করবে কে? খবরে পড়লাম, অতিধনীদের বিদেশে পড়াশোনা করা ছেলেমেয়েরা দেশে ফিরে আসতে চায় না। তাদের কাছে বিদেশই ভালো লাগে। তার অর্থ তারা জন্মস্থানে, জন্মভূমিতে আর ফিরবে না। পর্যন্ত খবর একরকম। কিন্তু এর লেজে লেজে আরেকটা প্রশ্ন আছে। ছেলেমেয়েরা থেকে গেলে বাবা-মা কী করবেন? মনে করার কী কোনো কারণ আছে যে, বাবা-মা দেশেই থেকে যাবেন? আমার মনে হয় না। যদি তারা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মিলিত হয়ে একসঙ্গে বসবাস করতে চান, তাহলে দেশের সহায়-সম্পত্তি, মিল-কারখানা, ব্যবসা-বাণ্যিজ্যের কী হবে? এসব যদি বিক্রি করতে হয়, তাহলে ব্যাংকের টাকার কী হবে? ব্যাংকের টাকা অন্যান্য দায়দেনা পরিশোধ শেষে যে টাকা থাকবে (নিট ওর্থ) সেই টাকা তারা কী বাংলাদেশে রাখবেন? মনে করার কোনো কারণ আছে কী যে, পরিবার কানাডায়, সহায়-সম্পদ বাংলাদেশে? যদি তা না হয় তাহলে এসব বিক্রি করে কানাডায় অর্থ স্থানান্তরিত করতে হবে। বস্তুত ব্যাংকের ঋণখেলাপিদের অনেকেই বিদেশে বাড়ি-ঘর করে, ব্যবসা-বাণিজ্য করে আরাম-আয়েসে আছেন। এসব খবর প্রতিদিন কাগজে ছাপা হয়। প্রশ্ন বৈধভাবে এসব টাকা বিদেশে পাঠানোর কি কোনো ব্যবস্থা আছে? না নেই। বিদেশে টাকা পাঠানোর জন্য বাংলাদেশে নির্ধারিত নিয়ম-কানুন আছে। লেখাপাড়া, চিকিৎসা, পর্যটন ইত্যাদি খাত ছাড়া বিদেশে টাকা পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। বিনিয়োগের জন্য টাকা পাঠাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি দরকার হবে। সীমিত ক্ষেত্রে তারা কিছু অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু বাড়িঘর বিক্রি করে, মিল-কারখানা বিক্রি করে দেশান্তরী হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার পাঠাতে অনুমতি দেবে কথা ভাবার কোনো কারণ নেই। অতএব এসব ক্ষেত্রে টাকা পাচারের প্রশ্ন জড়িত হয়ে যেতে পারে। এটা শুধু ব্রেন ড্রেন নয়, এটা অর্থ পাচার। আবার এর সঙ্গে ব্রেন ড্রেন ছেলেমেয়েদের নিম্নতম মেধা না থাকলে তারা বিদেশী স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি পেত না। যেই অনুমতি পেয়ে তারা লেখাপড়া করতে গেল অথচ লেখাপড়া শেষে তারা দেশে আর ফিরল না। তার মানে স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তান আমলের ব্রেন ড্রেন; সমস্যার সঙ্গে অর্থ পাচার যোগ হলো। লাভের মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশে এই লাভ! অথচ অতিধনীরা, তাদের শিক্ষিত-মেধাবী ছেলেমেয়েরা দেশে থেকে যদি দেশটাকে বাসযোগ্য করত, দেশে সংঘটিত অনিয়মের বিরুদ্ধে একটা শক্তি হিসেবে কাজ করত, চিকিৎসা, লেখাপাড়া ইত্যাদি উন্নয়ন করার চেষ্টা করত, তাহলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা উপকৃত হতাম। অতিধনী ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা মানুষ নন। তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক। ঢাকায় তাদের সুযোগ-সুবিধার অভাব নেই। অনেকের বাড়িতে সুইমিংপুল আছে। অনেকের বাগানবাড়ি, রিসোর্ট আছে তারা সহজেই দেশে-বিদেশ করতে পারেন। প্রশাসন তাদের কথা বলে। মন্ত্রী-মিনিস্টার, সংসদ সদস্য, বড় ব্যবসায়ী, সচিব ইত্যাদি শ্রেণীর লোক তারাই। অথবা এরা তাদের অনুগত বন্ধু। এর পরও কেন উন্নয়নশীল দেশ ছেড়ে অতিধনীরা চলে যাচ্ছেন এর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা দরকার।

 

. আরএম দেবনাথ: অর্থনীতি বিশ্লেষক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন