ওপেকের পূর্বাভাস

শেষ প্রান্তিকে কমবে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক ব্যবহার

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদার পরিমাণ কমিয়েছে অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) বৃহস্পতিবার উচ্চমূল্যের কারণে চতুর্থ প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী তেলের ব্যবহার কমে আসার পূর্বাভাস দেয় জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর প্লাটফর্ম। জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯-উত্তর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথকে সংকীর্ণ করে তুলছে। ফলে আগামী বছর তেলের ব্যবহার প্রাক-মহামারী স্তরে ফিরে আসার সময় বিলম্বিত হবে বলে মনে করছে ওপেক। খবর রয়টার্স।

ওপেকের মাসিক প্রতিবেদনে এমন চিত্র দেখা যায়। আগামী বছরের জন্য মার্কিন শেল অয়েল উত্তোলনকারীদের কাছ থেকে সরবরাহ বৃদ্ধির পূর্বাভাসও দেয় ওপেক। জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসেবে এমন ঘোষণা দেয় ওপেক তার সহযোগী দেশগুলো।

ওপেক জানায়, চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে প্রতিদিন গড়ে কোটি ৯৫ লাখ ব্যারেল। গত মাসে ওপেকের পূর্বাভাস অনুযায়ী চতুর্থ প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদার তুলনায় এটি লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল কম। একই সময়ে চলতি বছরের জন্য জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদার পূর্বাভাস লাখ ৬০ হাজার কমিয়ে এনেছে সংস্থাটি। ওপেকের সংশোধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি বছর চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস দৈনিক লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল কমে এসেছে। সংশোধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদা বৃদ্ধির পরিমাণ ৫৬ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল নির্ধারণ করেছে ওপেক।

প্রতিবেদনে ওপেক উল্লেখ করে, বাজারে চলমান উচ্চমূল্যের কারণে ২০২১ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জ্বালানি তেলের চাহিদা পুনরুদ্ধারে ঘাটতি তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরআগে তৃতীয় প্রান্তিকে চীন ভারতে প্রত্যাশার চেয়ে জ্বালানি তেলের চাহিদার পরিমাণ কমে আসে, কারণে পণ্যটির ব্যবহারে ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে জানায় ওপেক।

চলতি বছর ব্যারেলপ্রতি ৮৬ ডলার স্পর্শ করার মাধ্যমে তিন বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছে জ্বালানি তেলের দাম। ওপেক প্লাসের সরবরাহের পাশাপাশি পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে কিছু বাজারে জ্বালানি পণ্যটির প্রান্তিক পর্যায়ের দাম বছরের সর্বোচ্চ পরিমাণ স্পর্শ করে।

বিভিন্ন দেশের সরকার, তেল উত্তোলনকারী কোম্পানি এবং ব্যবসায়ীরা চাহিদা বৃদ্ধির ধারাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্যবহার কমে এলে পণ্যটির ঊর্ধ্বমুখী দামের ধারায় কিছুটা সহনশীলতা আসবে। মহামারী-উত্তর প্রভাব পণ্যের চাহিদা কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের জন্য জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক ব্যবহার ১০ কোটি লাখ ব্যারেল ছাড়িয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ওপেক, যা ২০১৯ সালের তুলনায় দৈনিক লাখ ব্যারেল বেশি। সময় বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের ব্যবহার দৈনিক ৪১ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল বাড়বে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে জ্বালানী পণ্যটির বৈশ্বিক ব্যবহার দৈনিক ১০ কোটি ব্যারেল ছাড়িয়েছিল।

ওপেকের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শেল অয়েল উৎপাদকদের কাছ থেকে সরবরাহের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ওপেকের সংশোধিত পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালে মার্কিন শেল অয়েলের উত্তোলন দৈনিক লাখ ১০ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি পাবে, যা গত মাসে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় লাখ ব্যারেল বেশি। চলতি বছর উত্তোলন সংকোচনের ফলে মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় দৃশ্য দেখা যাবে বলে মত দেয় ওপেক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন