রংপুরে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ-থানায় হামলা, আহত ৬০

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রংপুর

রংপুরের হারাগাছ এলাকার নতুন বাজার পাকার মাথা এলাকায় তাজুল ইসলাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ঘটনার পর ৫-৬ জনকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ।

সোমবার গভীর রাতের এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা হারাগাছ থানায় হামলা চালিয়ে আসবাবপত্রসহ মালামাল ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে।

তাজুল ইসলাম পুলিশি নির্যাতনে নিহত হয়েছেন- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মূলত সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ দাবি করছে, ওই ব্যক্তি একজন মাদকসেবী ও কারবারী। সোমবার সন্ধ্যায় এক অভিযানে আটক হওয়ার পর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান। তবে, তাজুল ইসলাম মাদক সেবী বা কারবারী নয় বলে দাবি করছে স্থানীয়রা। 

হারাগাছের নয়া টারী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তাজুল। তার ছোট ভাই লোটাস মিয়া জানান, দরদী স্কুলের পূর্বপাশে তেপতি বছি বানিয়া এলাকা থেকে পুলিশ তার ভাইকে আটক করে। পরে তিনি জানতে পারেন তাজুল মারা গেছেন। রাত ১১টার দিকে পুলিশ তার লাশ থানায় নিয়ে যায়।  

সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার পর রাত ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তার পরপরই নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু সুবিধাবাদী উচ্ছৃঙ্খল লোক থানায় হামলা করে ব্যাপক ক্ষতি করেছে বলে দাবি করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশের কাজে বাধা ও থানায় হামলা-ভাংচুর এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে মামলা দুটি এখনো রেকর্ডভুক্ত হয়নি।

হারাগাছ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম ফিরোজ জানান, নিহত তাজুলের নামে কাউনিয়া থানায় একটি মাদক আইনে মামলা রয়েছে।  তার নামে ওয়ারেন্টও ছিল। কয়েক মাস আগে তাকে মাদকসহ আটক করা হয়েছিল। 

ঘটনার ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আবু মারুফ হোসেন বলেন, তাজুলের মৃত্যু পুলিশি নির্যাতনে হয়নি। সেটা স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানেন। খবর ছিল তার কাছে মাদক রয়েছে। পুলিশ অভিযানে গেলে তিনি পালিয়ে যেতে দৌড় দেন। তার কাছে হেরোইন পাওয়া গেছে। আটকের কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। 

বণিক বার্তাকে ডিসি মারুফ আরো বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর পর তাজুলের সুরতহাল প্রতিবেদন করেন সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট। তার শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ণ নেই। অত্যাধিক মাদক সেবনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার পর পুলিশ স্থানীয় ৫-৬ জনকে ধরে নিয়ে গেছে, এ ব্যাপারে তিনি বলেন, মামলার রেকর্ড এখনো প্রক্রিয়াধীন। কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন