ভিটামিন বি-১২ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বণিক বার্তা অনলাইন

মস্তিস্ক থেকে হাড় পর্যন্ত, মানুষের শরীরের সবকিছুর কাজ ঠিকঠাকমতো চালিয়ে নিতে ভিটামিন বি-১২ এর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এটি এমন একটি ভিটামিন যেটাকে গুরুত্ব দিতে ভুলে যান বেশিরভাগ মানুষ। 

পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে মানুষ সবচেয়ে বেশি ঘাটতিতে ভোগে এই ভিটামিনের। ঘাটতি রয়েছে ১৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের আর সীমারেখা বরাবর রয়েছে ৪০ শতাংশের শরীরে।

ভিটামিন বি-১২ সে উপাদানগুলোর একটি যেটা রক্ত ও স্নায়ুকাষগুলোকে সুস্থ রেখে শরীরের মূল কাজগুলোতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে এটা ডিএনএ উৎপাদনেও সহায়তা করে। কিন্তু যেহেতু মানবশরীর নিজে থেকে ভিটামিন বি-১২ তৈরি করে না তাই ঘাটতি পূরণের জন্য নির্ভর করতে হয় কিছু প্রাণীজ ও সামুদ্রিক খাবারের উপর। 

আর ঠিক এই কারণেই যাদের খাবারের ঘাটতি আছে তাদের জন্য বি-১২ ভিটামিনের মাত্রা ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যায়। আবার যতক্ষণ না মাত্রাটা খুব নিচে নেমে যায় ততক্ষণ তার প্রয়োজনীয়তাও কেউ অনুধাবন করতে পারে না।  

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ভিটামিনটির ঘাটতিতে ভোগার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন সবজিভোজী ও ভেগানরা।

আরেকটি কারণে এ ভিটামিনের ঘাটতি তৈরি হয়, সেটা হলো পেটে ক্রমাগত প্রদাহ ও হজমের সমস্যা। যেটা সাধারণত ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশি হয়। এ সমস্যার কারণে অনেক পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে দিতে হয়। তাছাড়া যারা বয়স্ক, যারা ডায়াবেটিসের জন্য মেটফর্মিন ব্যবহার করে, যাদের অস্ত্রোপচারের জটিলতা আছে ও দীর্ঘসময় অ্যান্টাসিড ব্যবহার করছে তাদের ঘাটতি হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। 

বি-১২ ভিটামিনের ঘাটতির লক্ষণ অনেকটা মানসিক চাপের লক্ষণগুলোর মতোই। চিকিৎসা না নিলে ছয় মাসেই তা যেতে পারে খুব খারাপ দিকে। সেজন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণের পাশাপাশি ঘাটতির লক্ষণগুলো চিনে রাখা জরুরি। 

এই ভিটামিনের অভাবে জিহ্বায় পরিবর্তন দেখা যায়। জিহ্বায় ঘা অথবা খাবারের স্বাদও পরিবর্তন হতে পারে। জিহ্বায় ফোলাভাব এমনকি প্রদাহও দেখা দিতে পারে। ভিটামিনটির অভাবে মুখে আলসার, খোঁচা লাগা বা জ্বালাপোড়াও হতে পারে জিহ্বায়। শরীরে খোঁচা খোঁচা সূচালো সংবেদনশীলতা হওয়া বি-১২ ঘাটতির একটি লক্ষণ। 

তাছাড়া কিছু মনে করতে কষ্ট হওয়া, স্মৃতিশক্তিতে সমস্যা হওয়া, চূড়ান্ত অস্থিরতা বোধ করা, মন সবসময় খুবই খারাপ থাকাও এর লক্ষণ। এ ভিটামিনের অভাবে হৃদকম্পন বেড়ে যায় ও শ্বাস নিতে অনেকের কষ্ট হয়। 

এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ভুল করবেন না। সাধারণত সামুদ্রিক খাবার, ডিম, পোল্ট্রি ও কিছু দুগ্ধজাত খাবারে ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়। কিন্তু যেহেতু শরীর বেশিদিন এই ভিটামিন সংরক্ষণ করতে পারে না তাই সেসব খেতে হবে ঘন ঘন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন