অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, তরুণদের মধ্যে সব ধরনের ব্যবসায় উদ্যোগ বা স্টার্টআপ সৃষ্টিতে সহায়তার লক্ষ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরের বাজেটেও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও চূড়ান্ত হয়েছে। অচিরেই আইসিটি বিভাগ থেকে তরুণ সমাজ স্টার্টআপ গঠনে এ তহবিল সুবিধা লাভ করতে পারবে।
গতকাল রাজধানীতে আয়োজিত ‘উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প’ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১’ গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। তরুণ উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপগুলোকে অনুপ্রাণিত করতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজ সময় এসেছে তরুণদের স্বপ্ন দেখার এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের। ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরাই একদিন গুগল, টেসলা, আমাজনের মতো বিশাল কোম্পানিতে পরিণত হবে। মুজিব জন্মশতবর্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১’ আয়োজনে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশ থেকে সাত হাজারের বেশি উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও স্টার্টআপের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ আজ আইসিটি খাতে সারা বিশ্বে একটি বিশ্বাসের জায়গা করে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি, বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আব্দুল মান্নান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যু্গ্ম সচিব মো. আব্দুর রাকিব।
বিশ্বখ্যাত কোম্পানিগুলোর সফলতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ফেসবুক, উবার, এয়ার-বিএনবি, টুইটার, লিংকড-ইন, টেসলা বা ড্রপবক্সের মতো মার্কিন প্রধান প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর কোনোটিই ২০ বছর আগে ছিল না। এমনকি গুগল মাত্র ২১ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আজকের দিনে এসব কোম্পানি মাত্র কয়েক বছরে শত শত বিলিয়ন, এমনকি ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ই-কমার্স জগতের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন ঘণ্টায় আড়াই মিলিয়ন ডলার নিট প্রফিট করে, যা সত্যি অবিশ্বাস্য। বিশ্বের বৃহত্তম মিডিয়া সংস্থা ফেসবুক, তাদের বেতনভুক্ত কোনো সাংবাদিক বা কনটেন্ট নির্মাতা নেই। বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্সি কোম্পানি উবার, একটিও ট্যাক্সির মালিক নয়। এ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সার্ভিস সেক্টরে বিপ্লব ঘটিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের যাত্রা ২০১০ সালে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ৫০০টিরও বেশি স্টার্টআপ কাজ করছে এবং আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশে বর্তমানে ৪০টিরও বেশি এক্সেলেরেটর এবং ইনকিউবেটর প্রোগ্রাম তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্টার্টআপদের মাধ্যমে ১৫ লাখের বেশি মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ‘বিগ ২০২১’ আয়োজন এমন একটি উদ্যোগ, যা স্টার্টআপ সংস্কৃতি গঠন ও উন্নয়নের বর্তমান সরকারের অঙ্গীকারের একটি সুস্পষ্ট প্রতিফলন।
