সেনাবাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী

সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতীয় যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাসহ দেশের আর্থসামাজিক নানা উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

গতকাল মুজিব রেজিমেন্ট রওশন আরা রেজিমেন্টের কাছে নতুন পতাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠান সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিটকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে চট্টগ্রামের হালিশহরে আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুল ঢাকা সেনানিবাসে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। করোনা মহামারীর কারণে অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় তার পক্ষে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, দেশের যেকোনো প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিজের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমার দুই ভাই সেনাবাহিনীর সদস্য ছিল। ছোট ভাই শেখ রাসেলেরও স্বপ্ন ছিল যে সে একজন সেনাসদস্য হবে। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।

অনুষ্ঠানে তার সরকারের আমলে সামরিক বাহিনীর উন্নয়নে নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী গত ১৩ বছরে এখন যথেষ্ট শক্তিশালী অগ্রসর হয়েছে। আর বিশেষ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দমনে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে।

আকাশ প্রতিরক্ষায় নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এয়ার ডিফেন্স শাখার জন্য ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইলের (এফএম-৯০ স্যাম সিস্টেম) প্রশিক্ষণের সুবিধার্থে ২০১৯ সালে একটি কম্ব্যাট সিমুলেটর সংযুক্ত করেছি। একই বছর এক ব্যাটারির অত্যাধুনিক ওয়েরলিকন রাডার কন্ট্রোল গান সিস্টেম স্কাই গার্ড- রাডার সংযুক্ত করেছি। এসবের পাশাপাশি আরো এক ব্যাটারি ওয়েরলিকন গান সিস্টেম কেনার উদ্যোগ নিয়েছি। ভি শোরাড মিসাইল সিস্টেম ক্রয়ের জন্য চুক্তি করেছি আরো দুই ব্যাটারি রাডার কন্ট্রোল গান বছরেই এয়ার ডিফেন্স শাখায় সংযুক্ত হবে বলেও আশা করছি।

আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ সেনাবাহিনীর আভিযানিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সহায়তায় বিশেষ অবদান রেখেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা এভিয়েশন বহরে ছয়টি এমআই ১৭১ শাহ, একটি কাসা-সি২৯৫ডব্লিউ, চারটি ডায়মন্ড-ডিএ৪০এনজি দুটি বেল-৪০৭ জিএক্সআই বিমান সংযুক্ত করেছি। ভবিষ্যতে তাদের কার্যক্ষমতা আরো বাড়ানোর লক্ষ্যে অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ সংযোজনের পরিকল্পনা করছি।

সময় জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকার করে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ শত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন। বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাবে, বিশ্বদরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে আমরা চলব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন