তিন প্রান্তিকে আরএকে সিরামিকসের মুনাফা বেড়েছে ৭ গুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২১ হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ভালো ব্যবসা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেড। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। বিক্রি বাড়ার পাশাপাশি সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে গুণ। সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে।

তিন প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ৪৮৪ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৩৪১ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ১৪৩ কোটি টাকা বা ৪১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৬৩ কোটি টাকার বেশি। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল কোটি ৯২ লাখ টাকা। সেই হিসাবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে ৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে টাকা ৪৭ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২১ পয়সা। বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৮৮ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময় শেষে যা ছিল ১৫ টাকা ৮৯ পয়সা।

অন্যদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ১৫৭ কোটি টাকা ৪৫ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যেখানে বিক্রি ছিল ১৪৪ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আলোচ্য সময় সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৪৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৯ পয়সা।  

এদিকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি টাইলস প্লান্টের (প্লান্ট-, প্লান্ট-,প্লান্ট-) বিদ্যমান মেশিনারিজের আপগ্রেডেশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উত্পাদন বাড়ানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জন্য সম্ভাব্য বিনিয়োগ ধরা হয়েছে ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মেশিনারিজ আপগ্রেডেশনের পরে কোম্পানিটির দৈনিক টাইলস উত্পাদন সক্ষমতা হাজার ৪০০ বর্গমিটার বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছে তারা।

সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে আরএকে সিরামিকস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৭৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল টাকা ৭৬ পয়সা। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৬ টাকা ৪১ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৭ টাকা ১৮ পয়সা।

২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল আরএকে সিরামিকস। ২০১৮ হিসাব বছরে ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি একই হারে স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। ২০১৭ হিসাব বছরেও একই হারে নগদ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।

সর্বশেষ রেটিং অনুযায়ী, আরএকে সিরামিকসের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ডাবল প্লাস স্বল্পমেয়াদে এসটি-ওয়ান ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ হালনাগাদ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যয়ন করে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরআইএসএল)

২০১০ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেড মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক রাস-আল খাইমার গ্রুপের একটি যৌথ উদ্যোগ। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৪২৭ কোটি ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১২৭ কোটি টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪২ কোটি ৭৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭০১টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৭২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ, বিদেশী দশমিক ৩৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বাকি দশমিক ৩৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ সমাপনী দর ছিল ৪৭ টাকা ৩০ পয়সা।  গত এক বছরে শেয়ারটির দর ২৬ টাকা থেকে ৫৩ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৬৪ দশমিক ৩৮, সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ২৩ দশমিক ৯৮।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন