আজ
২৮
অক্টোবর।
আজকের
এ
দিনটি
আমার
কাছে
একটি
বিশেষ
দিন,
একটি
ঘটনাবহুল
দিন।
আগে
এ
রকম
দিন
যে
আমি
কখনো
পার
করিনি
তা
নয়,
তথাপি
অন্য
সব
দিনের
চেয়ে
এটি
আলাদা।
আজ
আমার
ক্লাস
নেই,
তবে
অন্য
কাজে
একটা
জায়গায়
যেতে
হয়েছে।
সেখানে
জ্ঞানী-গুণী
মানুষদের
সঙ্গে
কথা
বলেছি,
তাদের
কথা
শুনেছি
এবং
সামান্য
হলেও
শিখেছি।
এছাড়া
আরেকটি
কারণে
দিনটির
তাৎপর্য
আমার
কাছে
একটু
বেশি,
তবে
সে
কথায়
আবার
ফিরে
আসব
সবার
শেষে।
আজ
কোথায়
গেলাম,
কী
শুনলাম
এবং
কী
শিখলাম
তা
আপনাদের
সঙ্গে
ভাগাভাগি
করে
নেয়ার
জন্যই
আমার
এ
লেখার
অবতারণা।
আজ আমার
দিন
শুরু
হওয়ার
কথা
‘ডাবল
ট্রি’
নামে
ন্যাশভিলের
একটি
স্থানীয়
হোটেলে।
আমাদের
কলেজের
আয়োজনে
সেখানে
চলছে
‘গ্লোবাল
লিডারশিপ
কনফারেন্স’।
হোটেলে
যাওয়ার
পথে
অফিসে
থেমে
এক
জরুরি
কাজে
আটকা
পড়ে
গেলাম।
ফলে
সম্মেলনে
যেতে
আমার
দেরি
হয়েছে।
যাওয়ার
একটু
পরেই
দেখলাম
হোটেল
বলরুমে
লাঞ্চের
তোড়জোড়
শুরু
হয়ে
গেছে।
বক্তৃতা
মঞ্চের
একেবারে
সামনে
নির্ধারিত
টেবিলে
আমাকে
বসতে
বলা
হলো।
চেয়ার
টেনে
বসার
মিনিট
পাঁচেক
পরে
আমাদের
টেবিলে
এসে
যোগ
দিল
আমাদেরই
এক
ছাত্রী।
সে
অন্য
বিভাগে
পড়ে,
তাই
তাকে
আমি
চিনতে
পারিনি।
সেও
আমাকে
চেনেনি।
তাকে
দেখতে
লাগল
সাদা
আমেরিকান।
কথাবার্তায়ও
দেখা
গেল
তার
মুখের
ভাষা
খাঁটি
আমেরিকান
ইংলিশ,
কিন্তু
গোলমাল
বাধল
তার
নামে।
নেম
ট্যাগ
পড়ে
আমি
অবাক
হলাম!
লিখেছে,
‘Elif
Shen’।
কোনো
আমেরিকান
মেয়ের
নাম
তো
এ
রকম
হওয়ার
কথা
নয়!
তাকে
বললাম,
If you
don’t mind, you look American, you speak American, but your name does not sound
so. May I know, why?
জবাব যা
পেলাম,
তা
অনুবাদ
করলে
এ
রকম
দাঁড়ায়,
চলায়-বলায়
আমেরিকান
মনে
হলেও
সে
একজন
টার্কিশ
এবং
তার
নামটাও
টার্কিশ।
তার
জন্ম
ও
বেড়ে
ওঠা
তুরস্কের
এক
ছোট্ট
উপকূলীয়
শহরে।
নামের
উচ্চারণ
অনুযায়ী
সঠিক
বানান
হওয়া
উচিত
Alif
Shen, কিন্তু
তার
মা-বাবা
ছোটবেলা
যেভাবে
লিখিয়েছেন
সেভাবেই
রয়ে
গেছে।
আলসেমি
করে
সে
আর
নাম
বদলায়নি।
বিশুদ্ধ
ইংরেজি
উচ্চারণ
প্রসঙ্গে
আলিফ
একটি
মজার
মন্তব্য
করল।
বলল,
এতে
যদি
কোনো
গৌরব
থেকে
থাকে,
তবে
তার
ভাগীদার
সে
নয়;
এর
ষোলো
আনা
কৃতিত্ব
তার
মা-বাবার।
তারা
তাকে
অল্প
বয়সে
এ
দেশে
পাঠিয়েছেন।
স্কুলে
বন্ধুদের
সঙ্গে
কথা
বলতে
বলতেই
সে
ইংরেজি
শিখেছে;
অন্য
অভিবাসীদের
মতো
ব্যাকরণ
পড়ে
তাকে
মুখের
ভাষা
রপ্ত
করতে
হয়নি।
মেয়েটির নামের
প্রথম
অংশ
‘আলিফ’
যে
আরবি
থেকে
এসেছে,
সেটা
কারো
বুঝতে
অসুবিধা
হওয়ার
কথা
নয়
এবং
‘শেন’
সম্ভবত
তুর্কি
শব্দ,
তবে
অর্থটা
তাকে
জিজ্ঞেস
করা
হয়নি।
তুরস্কের
সঙ্গে
তার
যোগাযোগ
এখনো
অটুট
আছে
কিনা,
সে
প্রশ্নের
জবাবে
জানাল,
মা-বাবাসহ
পরিবারের
সবাই
দেশেই
রয়ে
গেছেন,
তাই
নিয়মিত
সেখানে
তার
যাওয়া-আসা
হয়।
সম্প্রতি
গিয়ে
বিয়েও
করে
এসেছে
এক
‘সিপ্রিয়ট’
ছেলেকে।
এরই মধ্যে
টেবিলে
খাবার
দেয়া
হয়েছে,
খেতে
খেতে
তার
কাছে
তুরস্ক
ও
সাইপ্রাসের
গল্প
শুনলাম।
প্রবল
ইচ্ছা
থাকা
সত্ত্বেও
এ
পর্যন্ত
আমার
সাইপ্রাস
যাওয়ার
সুযোগ
হয়নি,
তবে
তুরস্ক
গিয়েছি
২০০২
সালে।
হলে
কী
হবে,
গত
বছরগুলোয়
আমার
দেখা
তুরস্ক
অনেক
বদলে
গেছে।
আমি
যে
সময়
গেছি
তখন
সে
দেশে
এরদোগান
যুগের
শুরুই
হয়নি।
সরকারি
অফিস-আদালতে
কিংবা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
হিজাব
পরে
কোনো
নারী
ঢুকতে
পারতেন
না,
তবুও
আমি
মিডল
ইস্ট
টেকনিক্যাল
ইউনিভার্সিটির
(মেট্যু) ক্যাম্পাসে
অনেক
মেয়েকে
মাথায়
স্কার্ফ
বেঁধে
ঘোরাঘুরি
করতে
দেখে
এক
বাংলাদেশী
ছাত্রকে
জিজ্ঞেস
করেছিলাম,
গেটের
কড়া
সিকিউরিটি
পার
হয়ে
ছাত্রীরা
এভাবে
ক্যাম্পাসে
ঢোকে
কী
করে?
ছেলেটির
উত্তর
শুনে
বিস্মিত
না
হয়ে
পারিনি!
সে
বলেছিল,
‘হিজাব
পরা
মেয়েরা
হিজাব
পরেই
বাড়ি
থেকে
বের
হয়।
মেট্যুর
সিকিউরিটি
এরিয়ায়
আসার
একটু
আগেই
মাথার
হিজাব
বই-খাতার
সঙ্গে
ব্যাকপ্যাকে
ঢুকিয়ে
রাখে।
গেট
পার
হয়েই
আবার
মাথায়
পরে
ফেলে।’
আলিফের
কাছে
জানতে
চাইলাম,
অবস্থাটা
কি
এখনো
সে
রকমই
আছে?
সে
উত্তর
দিল,
‘তুরস্কে
হিজাব
পরায়
এখন
তেমন
বাধানিষেধ
নেই
এবং
হিজাব
পরা
মেয়েদের
সংখ্যা
আগের
চেয়ে
অনেক
বেড়েছেও।’
আমি যখন
তুরস্ক
গিয়েছি
তখন
কামাল
আতাতুর্কের
ছবি
অফিসের
দেয়ালে
দেয়ালে
শোভা
পেত।
আলিফের
কাছে
জানতে
চাইলাম,
হাল
আমলে
তোমাদের
জাতির
পিতাকে
(আধুনিক তুরস্কের
রূপকারের
নাম
মুস্তাফা
কামাল
পাশা;
‘আতাতুর্ক’
অর্থাৎ
‘তুর্কি
জাতির
পিতা’
তার
উপাধি)
তোমরা
কীভাবে
মূল্যায়ন
করো?
আলিফ
বলল,
আজকাল
তুর্কিদের
মনোজগতে
কামালের
কামালতিতে
ভাটির
টান
স্পষ্ট
লক্ষ
করা
যায়।
তুরস্কে
আতাতুর্কের
আগের
অবস্থান
এখন
আর
নেই।
অফিস-আদালতের
দেয়াল
থেকে
তার
ছবি
নামানো
হচ্ছে,
দালানকোঠায়
তার
নাম
মুছে
দেয়ার
আয়োজন
চলছে।
প্রেসিডেন্ট
রিসেপ
এরদোগান
কামাল
আতাতুর্কের
জায়গায়
নিজেকে
প্রতিস্থাপন
করার
জোর
কোশেশ
চালিয়ে
যাচ্ছেন।
আমি
বললাম,
তো
দেশের
মানুষ
এটাকে
কীভাবে
দেখছে?
উত্তর
পেলাম,
অধিকাংশ
জনগণ
এরদোগানের
পক্ষে।
তার
কথায়
আরো
বুঝলাম,
তুরস্কে
আতাতুর্কপন্থী
মানুষের
সংখ্যা
কমতির
দিকে।
প্রথম মহাযুদ্ধে
(এ যুদ্ধ
হয়েছিল
মূলত
মিত্রশক্তি
ও
অক্ষশক্তির
মাঝে।
মিত্রশক্তি
বলতে
বোঝাত
ব্রিটেন,
রাশিয়া,
ফ্রান্স,
ইতালি,
সার্বিয়া
ও
জাপানকে;
আর
অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি,
জার্মানি,
তুরস্ক
ও
বুলগেরিয়াকে
নিয়ে
গড়ে
উঠেছিল
অক্ষশক্তি)
পরাজয়ের
পর
এককালের
পরাশক্তি
তুর্কিরা
এক করুণ
পরিণতির
মুখোমুখি
হয়।
তারা
শুধু
সাম্রাজ্যই
হারায়নি,
বরং
মিত্রশক্তির
উপর্যুপরি
আঘাতে
তাদের
মূল
ভূখণ্ড
লণ্ডভণ্ড
হয়ে
যায়।
এ
অবস্থায়
কামাল
পাশা
তার
সাহস,
রণনৈপুণ্য,
সাংগঠনিক
যোগ্যতা
ও
দৃঢ়
নেতৃত্বের
বলে
তুরস্কের
স্বাধীনতা
ও
সার্বভৌমত্বকে
সুসংহত
করেন।
১৯২৩
সালে
তিনি
খেলাফত
ভেঙে
দিয়ে
ইউরোপের
আদলে
তুরস্ককে
একটি আধুনিক
ও
‘ধর্মনিরপেক্ষ’
রাষ্ট্র
হিসেবে
গড়ে
তোলার
প্রয়াস
চালান।
বহু
যুগ
ধরে
তিনি
ছিলেন
তুরস্কের
মুকুটহীন
সম্রাট।
ব্যক্তিজীবনে
৯০
বছর
অনেক
লম্বা
সময়,
কিন্তু
একটি
জাতির
জন্য
এটা
কিছুই
নয়।
এরই
মধ্যে
তুরস্কের
পিতা
কামাল
আতাতুর্কের
নাম
মানুষের
মন
থেকে
মিলিয়ে
যেতে
শুরু
করেছে।
আলিফের মুখে
সাইপ্রাসের
কথাও
জানলাম।
সে
কাহিনী
একটু
অন্য
রকম।
তার
কথামতো,
আধুনিক
সাইপ্রাসের
ভবিষ্যৎ
খুব
একটা
আলোকোজ্জ্বল
নয়,
কারণ
যেসব
ছেলেমেয়ে
লেখাপড়ায়
ভালো
করছে,
যারা
দেশের
ভবিষ্যৎ,
যারা
দেশের
সমাজ
ও
অর্থনীতিকে
গড়ে
তুলবে,
তারাই
উন্নত
জীবনের
আশায়
অকাতরে
দেশ
ছেড়ে
পশ্চিম
ইউরোপে
পাড়ি
জমাচ্ছে।
কেন
এমন
হচ্ছে,
সেটা
বোঝার
জন্য
মেয়েটিকে
আমি
আর
প্রশ্নবাণে
বিরক্ত
করিনি,
কারণ
এর
একটি
ব্যাখ্যা
আমার
জানা
আছে।
অনেক
আগে
অর্থনীতির
মাইগ্রেশন
তত্ত্বে
পড়েছিলাম,
স্বদেশের
অসহিষ্ণু
অবস্থা
এবং
বিদেশের
টান—এ
দুয়ের
সমন্বয়ে
মাইগ্রেশন
হয়।
নিজ
দেশে
যদি
বেকারত্ব
ও
আইনের
শাসনে
ঘাটতি
থাকে
এবং
একই
সঙ্গে
বিদেশের
চাকরি
বাজারের
উচ্চ
মজুরি
এবং
স্থিতিশীল
উন্নত
জীবন
হাতছানিও
দেয়
তাহলে
তরুণদের
মাইগ্রেশন
স্পৃহায়
গতি
রোধ
করা
কঠিন
হয়ে
পড়ে।
সাইপ্রাসে
এটাই
এখন
ঘটছে।
আলিফের বয়ান
এবং
মধ্যাহ্নভোজ
বলতে
গেলে
একসঙ্গেই
শেষ
হলো।
টেবিলে
টেবিলে
আর
টুং
টাং
আওয়াজ
নেই।
সহসা
মঞ্চের
মাইক
থেকে
ঘোষণা
এল,
কিনোট
স্পিচ
শুরু
হবে।
বলরুমে
পিনপতন
নীরবতা!
নাম
ঘোষণা
ও
পরিচয়
পর্ব
শেষ
হতে
না
হতে
আমার
পাশের
টেবিল
থেকে
অত্যন্ত
সাদামাটা
একজন
মানুষ
বক্তৃতা
মঞ্চের
দিকে
এগিয়ে
গেলেন।
তার
চোখেমুখে
জ্বলজ্বল
প্রতিভা
এবং
আত্মপ্রত্যয়ের
সুস্পষ্ট
ছাপ
ধরা
পড়ল।
শুরু
হলো
তার
মনোমুগ্ধকর
কথামালা,
তবে
বক্তৃতায়
কী
শুনলাম
সেকথা
বলার
আগে
বক্তার
একটি
সংক্ষিপ্ত
পরিচয়
দেয়া
প্রয়োজন
বলে
মনে
করি।
আজকের
বক্তার
নাম
কেভিন
উইলিয়ামস।
কেভিন দক্ষিণ
মেরিল্যান্ডের
এক
ছোট্ট
শহরে
কৃষ্ণাঙ্গ
মা-বাবার
ঘরে
জন্মগ্রহণ
করেন।
তিনি
১২
ভাইবোনের
মাঝে
সবার
ছোট।
তার
বাবা
মিডল
স্কুলে
মাত্র
ষষ্ঠ
শ্রেণী
পর্যন্ত
পড়েছেন।
তার
আগে
তার
পরিবারের
বা
আত্মীয়স্বজনদের
মাঝে
কেউ
কলেজের
দোরগোড়া
পার
হননি।
স্কুলে
কেভিন
ভালো
ছাত্র
ছিলেন।
১৯৭৯
সালে
যখন
তিনি
হাই
স্কুল
পাস
করলেন
তখন
তার
বাবা
তাকে
একদিন
ডেকে
বললেন,
‘My son,
you have to go to college, but all I have is $500’।
সময়মতো
কেভিন
ভর্তি
হলেন
টেনেসি
স্টেট
ইউনিভার্সিটির
বিজনেস
অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
বিভাগে।
আগস্টের শেষে
ক্লাস
শুরু
হবে,
কেভিন
বাক্সপেটরা
গুছিয়ে
ন্যাশভিলের
উদ্দেশে
যখন
রওনা
দেবেন
তখন
তার
বাবা
তার
হাতে
গুঁজে
দিলেন
মাত্র
২৫০
ডলার।
হতাশ
কেভিন
বিস্ময়ভরা
মুখে
বাবাকে
জিজ্ঞেস
করলেন,
‘বাকি
২৫০
ডলার
কোথায়?’
ভরাট
কণ্ঠে
বাবা
উত্তর
দিলেন,
‘You will
get the balance in the Heaven, my son.’
এ
যেন
পুত্রের
প্রতি
পিতার
এক
করুণ
আধ্যাত্মিক
রসিকতা!
বিষয়টি
বুঝতে
কেভিনের
কোনো
অসুবিধা
হয়নি।
অভাবের
সংসার,
এরই
মধ্যে
ছেলের
কলেজ
খরচের
জন্য
রাখা
৫০০
ডলারের
অর্ধেক
খরচ
হয়ে
গেছে।
কী
করুণ
দশা!
নিরুপায়
হয়ে
অগত্যা
এই
২৫০
ডলার
নিয়েই
কেভিন
বেরিয়ে
পড়লেন
ন্যাশভিলের
পথে।
বংশের
প্রথম
সন্তান
কলেজে
আসছে;
মনের
মাঝে
কোনো
উদ্দীপনা
নেই,
উত্তেজনা
নেই।
আছে
শুধু
একরাশ
অজানা
আতঙ্ক
আর
অনিশ্চয়তা!
থাকবেন
কোথায়,
খাবেন
কী,
টিউশন
ফি
দেবেন
কী
করে,
আর
পড়বেনই-বা
কীভাবে?
একেই
কি
বলে
‘অন্নচিন্তা
চমত্কারা’!
পথ চলতে
চলতেই
অসাধারণ
মনের
জোর
ও
দৃঢ়
লক্ষ্য
নিয়ে
কেভিন
ঠিক
করলেন,
ন্যাশভিলে
নেমেই
হাতের
২৫০
ডলার
শেষ
হওয়ার
আগে
যে
করেই
হোক
তাকে
একটা
কাজ
জোগাড়
করতে
হবে।
ভাগ্যবশত
তার
কপালে
একটা
কাজ
জুটেও
গেল।
আমাদের
ক্যাম্পাসের
অতি
নিকটে
বিখ্যাত
‘ভ্যান্ডারবিল্ট’
বিশ্ববিদ্যালয়ে
তিনি
একটি
ফুলটাইম
চাকরি
পেয়ে
গেলেন
এবং
টিএসইউতে
ফুলটাইম
ক্রেডিট
লোড
নিয়ে
রেজিস্ট্রেশন
করলেন।
বন্ধুরা,
কেভিন,
ভ্যান্ডারবিল্টে
কী
চাকরি
নিলেন,
শুনবেন?
তিনি
দ্বিধাহীন
চিত্তে
সবার
সামনে
গর্বভরে
ঘোষণা
দিলেন,
‘In the
Fall of 1979, I began my college life as a full time student at TSU and as a
full time janitor at Vanderbilt University’। সংক্ষেপে
এ
হলো
কেভিনের
জীবনসংগ্রামের
সূচনা
ইতিহাস।
১৯৮৩ সালে
যথাসময়ে
গ্র্যাজুয়েশনের
মধ্য
দিয়ে
শুরু
হয়
কেভিনের
বর্ণাঢ্য
কর্মময়
জীবন।
একই
বছর
তিনি
চাকরি
শুরু
করেন
জেনারেল
মোটরসের
(জিএম) কোয়ালিটি
কন্ট্রোল
বিভাগে
অ্যাপ্রেন্টিস
অফিসার
হিসেবে।
তার
২৭
বছরের
চাকরিজীবনে
করপোরেট
ক্যারিয়ারের
সিঁড়ি
বেয়ে
তিনি
অনেক
উপরে
উঠেছেন।
২০১০
সালে
অবসর
নিয়েছেন
জিএম
কানাডা
লিমিটেডের
প্রেসিডেন্ট
হিসেবে।
তিনি
যখন
চাকরি
ছাড়েন
তখন
তার
অধীনে
তারই
তত্ত্বাবধানে
জিএম
কানাডায়
১০
হাজার
লোক
কাজ
করত
এবং
তারা
প্রতি
বছর
২৫
বিলিয়ন
ডলারের
বেশি
মূল্যের
সম্পদ
সৃষ্টি
করত।
২৭
বছর
আগে
যে
ছেলের
জীবন
শুরু
হয়েছিল
একজন
জ্যানিটার
হিসেবে,
সে
কি
জানত
ভাগ্য
একদিন
তাকে
এ
জায়গায়
নিয়ে
আসবে!
একেই
কি
বলে
‘Truth is
stranger than fiction!’
এবার আসি
বক্তৃতার
কথায়।
আমরা
ক্লাসে
পড়ানোর
সময়
শিক্ষার্থীরা
যেভাবে
নোট
নেয়,
ঠিক
সেভাবে
কেভিন
উইলিয়ামসের
বক্তব্যের
ওপর
নোট
নিতে
দেখেছি
ছাত্র-শিক্ষক
নির্বিশেষে
অনেককে।
বক্তৃতার
শুরুতে
তিনি
ইংরেজিতে
একটি
উদ্ধৃতি
পড়ে
শোনালেন,
‘There
are three kinds of people in the world...those who see things happen, those who
make things happen, and those who don’t know what happens’।
কথাটা
শেষ
হতে
না
হতেই
তিনি
শ্রোতাদের
বললেন,
‘আপনারা
এবার
যাচাই
করে
ঠিক
করে
নিন
কে
কোন
দলে
আছেন
এবং
কে
কোন
দলে
যেতে
চান।
মনে
রাখবেন,
এ
বিষয়ে
আপনাদের
সঠিক
সিদ্ধান্ত
আপন
আপন
জীবনের
ওপর
সুদূরপ্রসারী
প্রভাব
ফেলতে
বাধ্য।’
এরপর তার
বক্তৃতায়
উঠে
এল
এক
মিসরীয়
উটচালকের
কথা।
উটের
পিঠে
চড়ে
উটের
মালিক
একবার
এক
অনির্দিষ্ট
গন্তব্যের
উদ্দেশে
রওনা
দিয়েছেন।
চলার
পথে
তিনি
যখন
বলতেন,
‘ওয়াও’
তখন
উট
চলতে
শুরু
করত,
যখন
বলতেন
‘ওয়াও,
ওয়াও’
তখন
উট
দৌড়াত
এবং
“আ’মিন”
বলার
সঙ্গে
সঙ্গে
উট
থেমে
যেত।
এভাবে
যেতে
যেতে
মরুপথ
পার
হয়ে
উট
তার
সওয়ারিকে
পিঠে
নিয়ে
এক
খাড়া
পাহাড়ের
ঠিক
সামনে
এসে
থেমেছে।
উটচালক
আগে
খেয়াল
করেননি।
হঠাৎ
চোখের
সামনে
অপরূপ
সুন্দর
পাহাড়
দেখে
উত্তেজনাবশত
চিত্কার
করে
বলে
উঠলেন,
ওয়াও!
যেই
বলা
সেই
কাজ।
ওয়াও
শুনেই
উট
লাফ
মেরে
উড়ে
গিয়ে
পড়ল
পাহাড়ের
গায়।
সওয়ারি
মুহূর্তের
মধ্যে
উটের
পিঠ
থেকে
ছিটকে
পড়ে
মারা
গেলেন।
এ
গল্পের
মাধ্যমে
কেভিন
উপস্থিত
শ্রোতাদের
বলতে
চেয়েছেন,
জীবনের
লক্ষ্য
ও
উদ্দেশ্য
আগেই
ঠিক
করতে
হয়
এবং
চলার
পথে
চোখ-কান
খাড়া
রেখে
সাবধানে
চলতে
হয়।
পথের
বাধা
কত
বড়
এবং
কত
বিপদসংকুল
হতে
পারে
তা
বিবেচনা
করতে
হয়।
পরিবর্তিত
পরিস্থিতিতে
সময়মতো
সঠিকভাবে
কৌশল
না
বদলালে
সমূহ
বিপদের
আশঙ্কা
থেকেই
যায়।
কর্মস্থলে কেমন
সহকর্মী
চান,
সে
বিষয়
বোঝাতে
গিয়ে
কেভিন
বললেন,
তিনি
তার
আশেপাশে
এমন
ভীরু
ও
সন্দেহপ্রবণ
কর্মচারী-কর্মকর্তা
দেখতে
চান
না,
যারা
সাহসিকতার
সঙ্গে
সিদ্ধান্ত
নেন
না;
দায়িত্ব
নেন
না;
কথায়
কথায়
সবকিছুতে
অনুমতি
চান।
বরং
তিনি
এমন
লোক
চান,
যিনি
ভেবেচিন্তে
দায়িত্ব
সহকারে
সিদ্ধান্ত
নেন,
বাস্তবায়ন
করেন,
করতে
গিয়ে
ভুল
করেন,
ভুল
থেকে
শিক্ষা
নেন
এবং
ক্ষমা
চান।
একথার
সারসংক্ষেপ
তিনি
ইংরেজিতে
বলেছেন,
“Don’t
ask for permission, ask for forgiveness.” বক্তৃতা
শেষে
তাকে
আমি
ব্যক্তিগতভাবে
প্রশ্ন
করলাম,
যদি
ক্ষমা
না
পান
তাহলে
কী
করবেন?
কেভিন
জবাব
দিলেন,
‘If the
act is honest and sincere, and if the apology is humble and genuine, then
forgiveness is guaranteed.’
এবার আসি
শেষ
কথায়।
আমার
জীবনে
২৮
অক্টোবরের
তাৎপর্য
কী?
আর
কিছু
নয়,
২৮
অক্টোবর
আমার
জন্মদিন,
তবে
এখানে
একটা
‘কথা’
আছে!
এটা
আমার
সার্টিফিকেটে
লেখা
জন্মদিন;
আসলটা
নয়।
আপনারা
যদি
জানতে
চান,
আমার
আসল
জন্মদিন
কবে?
তবে
আমি
বলব,
লাখো
বাংলাদেশীর
মতো
আমিও
জন্মেছিলাম
একদিন
ঠিকই,
কিন্তু
দিন-তারিখ
জানি
না।
আরো
বলব,
এতে
আমার
কোনো
আফসোস
নেই,
দুঃখবোধও
নেই।
আমার
সঠিক
জন্মতারিখ
যত্ন
করে
তুলে
রাখেননি
বলে
মা-বাবার
প্রতি
আমার
কোনো
রাগ-অভিমানও
নেই।
আর
থাকবেই
বা
কেন?
এ
জগতে
আমি
কে?
কবি
আব্দুল
মান্নান
সৈয়দের
মতো
করে
বলতে
গেলে,
আমার
জীবন
বড়জোর
বৃষ্টির
পানিতে
ক্ষণকালের
জন্য
জন্ম
লওয়া
একটা
‘বুদ্বুদের
মতন’!
আবু এন
এম ওয়াহিদ: অধ্যাপক,
টেনেসি
স্টেট
ইউনিভার্সিটি
এডিটর,
জার্নাল
অব
ডেভেলপিং
এরিয়াজ