পৃথিবীর তাপমাত্রা ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির আশঙ্কা

বণিক বার্তা অনলাইন

গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে যেভাবে দূষণ বাড়ছে, তাতে এই শতাব্দিতে পৃথিবীর তাপমাত্রা ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। বিষয়টিকে ‘বিপর্যয়কর’ বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে। 

সংস্থাটির প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত  বিশ্ব নেতারা।

আগামী রোববার গ্ল্যাসগোয় শুরু হবে জলাবায়ু সম্মেলন কপ-২৬। চলবে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। এ সম্মেলনের আগে জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বার্ষিক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

গতকাল মঙ্গলবার ডব্লিউএমও জানায়, কার্বন দূষণ কমাতে যে পরিকল্পনাগুলোর প্রতিশ্রুতি নেয়া হয়েছে, তা দুর্বল।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, আসন্ন কপ-২৬ সম্মেলনে পরিবেশ রক্ষায় নতুন টার্গেট নির্ধারণ করা হবে। এর আগে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে ১২০টি দেশ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। জাতিসংঘের রিপোর্টে তাও উল্লেখ করা হয়।  

জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ কার্বন ফুটপ্রিন্ট। ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের দূষণ সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ কমার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু প্যারিস সম্মেলনে স্থির হয়েছিল তা ৫৫ শতাংশ কমানো হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি হার রোধ করতে হলে প্রতি বছর গোটা পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ ২৮ গিগাটন কমাতে হবে। অর্থাৎ, প্রতিটি দেশকে বাৎসরিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট ৩০ শতাংশ হারে কমাতে হবে।

প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য প্রতিটি দেশকে নিজের মতো টার্গেট নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে যে বিশেষ লাভ হয়নি, তা এখন স্পষ্ট। এর ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দুই দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এবারের সম্মেলনে কড়া ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে ভয়াবহ পরিস্থিতির সামনে পড়তে হবে। 


জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চলতি বছর পৃথিবীতে ব্যাপক তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। দাবানল, তাপপ্রবাহ, বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এ বছর। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে এ বিষয়গুলিকেই আলোচনায় রাখা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, জি-টোয়েন্টির আওতাভুক্ত দেশগুলো গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ ৭৮ শতাংশের জন্য দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন ইউএনইপির নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার অ্যান্ডারসেন।

অ্যান্ডারসন আরো বলেন, যে দেশগুলো পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার বেশিরভাগ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিলম্ব করছে। এ অবস্থায় পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি থামাতে অনেক দেরি হয়ে যাবে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন