পায়রা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্র‌তি‌বেদক

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পায়রা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। এ সময় সরকার প্রধান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমাগত উন্নতির ফলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আর কেউ পিছিয়ে রাখতে পারবে না। বিশেষ করে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনমান আরও সমৃদ্ধ হবে।

পায়রা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকেই যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেতুটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৫০ লাখ মানুষের স্বপ্নের বাস্তবায়িত হলো। বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালী এলাকায় নির্মিত এ সেতুটি চার লেনের।

আজ থেকেই পটুয়াখালীর পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে। সেতু প্রকল্প অফিস সূত্র জানায়, ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালী এলাকার পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পায়রা সেতু। চার লেনবিশিষ্ট সেতুটি নির্মিত হয়েছে এক্সট্রাডোজড কেবল স্টেইড প্রযুক্তিতে। ১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুটি কেবল দিয়ে দুপাশে সংযুক্ত থাকবে। নদীর জলতল থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু হবে। উভয় পাড়ে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। এ সেতুতে ১৩০ মিটার গভীর পাইল বসানো হয়েছে। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক থাকবে।

এ সেতুতে ‘ব্রিজ হেলথ মনিটর’ (সেতুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ) স্থাপিত হচ্ছে। ফলে বজ্রপাত ও ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই যানবাহন চলাচলে সেতুর ভাইব্রেশন সিস্টেমে কোনো ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে সেই বিষয়ে সংকেত দেবে। এছাড়া সেতুর পিলারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এতে কোনো কিছুর ধাক্কায় সেতুর ক্ষতি ঠেকানো সম্ভব হবে, বাড়বে সেতুর স্থায়িত্ব। আলাদা সাবস্টেশনের মাধ্যমে সেতুতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে, যাতে আলোকিত হবে এটি। থাকছে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থাও।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, সরকার ২০১২ সালের মে মাসে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের যৌথ অর্থায়নে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন সেতুটি নির্মাণে কাজ করছে। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।

পায়রা সেতু উদ্বোধন প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম জানান, মূল সেতু, সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন