আলোচনায় বক্তারা

অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রয়োজন নাগরিকদের মানসিক সুস্থতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গতকাল ‘অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে দর্পণ ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে ভূমিকা রয়েছে নাগরিকদের মানসিক সুস্থতার। এজন্য মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য উঠে এসেছে।

কাউন্সেলিং সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান দর্পণ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক . নুর মোহাম্মদ। আলোচনায় মানসিক স্বাস্থ্যজনিত চিকিৎসার নানা অসংগতি তুলে ধরেন এনাম মেডিকেল কলেজের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. ফারুক হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজির আহম্মদ তুষার।

মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক . নুর মোহাম্মদ বলেন, দেশে যে বিপুল জনশক্তি রয়েছে তাদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এতে তারা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখতে পারবে। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও তাদের কর্মক্ষমতা দক্ষতা কাজে লাগানো সম্ভব। মানসিকভাবে সুস্থ কর্মক্ষম জনশক্তির মাধ্যমে রেমিট্যান্সের গতি আরো বাড়বে। দেশও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে। অন্যদিকে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে না পারলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদনশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ডা. মো. ফারুক হোসেন বলেন, মানসিক সমস্যা মানসিক অসুস্থতার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মানসিক নানা ধরনের সমস্যা আমাদের সবারই থাকতে পারে। জীবনব্যাপী ধরনের সমস্যা থাকতে পারে কারো কারো ক্ষেত্রে। তবে সবাই কিন্তু মানসিকভাবে অসুস্থ নয়। কোন পর্যায়ে গেলে সেটাকে আমরা অসুস্থতা বলব বা চিকিৎসার পরামর্শ দেব তা সাধারণ মানুষের মধ্যে তো নয়ই, আমরা যারা চিকিৎসক তাদের অনেকের মধ্যেও বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তানজির আহম্মদ তুষার বলেন, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে অনেক ক্ষেত্রেই অসমতা বিরাজ করছে। তবে এর মধ্যেও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য অসমতা কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে সেগুলো আমাদের জানতে বুঝতে হবে। সেই প্রভাব পুরোপুরি না হলেও কাটিয়ে উঠতে হবে। সবার সামগ্রিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এটির মোকাবেলা করতে হবে।

তানজির আহম্মদ আরো বলেন, অসমতা আমাদের সমাজে সহিংসতা সৃষ্টি করে, একটা খারাপ প্রতিযোগিতায় নিয়ে যায়। প্রতিযোগিতায় না গিয়ে আমরা সাবলীল সুন্দর একটি জীবন যাপন করতে পারি। সেজন্য মানুষের জন্য সবাই কাজ করব। প্রতিটি মানুষ যে যার জায়গা থেকে অন্যের জন্য কাজ করলে মানসিকভাবে ভালো থাকব। এজন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হবে। এক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী যেমন তৈরি করতে হবে, মানসিক স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট সুবিধাগুলো উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সচেতন হতে হবে এবং নাগরিকদেরও সচেতন করে তোলা প্রয়োজন।

এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন সম্পর্কের নয়া সেতুর সভাপতি জয়া শিকদার, দর্পণের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জিয়ানুর রহমান, এভারকেয়ার হসপিটালের সিনিয়র কাউন্সেলর আলিয়া ফেরদৌস আজাদ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন