উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলায় নিহত ৭

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কক্সবাজার

কক্সবাজারের উখিয়ার একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাদ্রাসায় চালানো হামলায় সাত রোহিঙ্গা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। সময় আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন। গতকাল ভোরে উখিয়ার ১৮ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক এইস ৫২-এর ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় হামলা চালানো হয়। হামলায় নিহতরা সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা   নাগরিক। তাদের মধ্যে এক কিশোরও রয়েছে। ঘটনায় অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

ক্যাম্পের দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি শিহাব কায়সার খান জানান, ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে এফডিএমএন ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ওই মাদ্রাসায় হামলা চালানো হয়। তিনি হামলাকারীদের রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারী হিসেবে উল্লেখ করেন।

নিহতরা হলেন ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে -এর মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ইদ্রীস (৩২), ক্যাম্প- ব্লক-২৯-এর ইব্রাহীম হোসেন (২২), ক্যাম্প-১৮ ব্লক-এইচ ৫২-এর আজিজুল হক (২৬), মো. আমীন (৩২), ক্যাম্প-১৮-এর বাসিন্দা মাদ্রাসা শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫), ক্যাম্প-২৪-এর বাসিন্দা হামিদুল্লাহ (৫৫) ক্যাম্প-১৮ ব্লক-এইচ ৫২-এর মাদ্রাসা ছাত্র নূর কায়সার (১৫)

শিহাব কায়সার খান আরো বলেন, হামলার খবর পেয়ে ময়নার ঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২-এর পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। হামলায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে মুজিবুর রহমান নামে একজনকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে গুলিভর্তি একটি দেশীয় ওয়ান শুটারগান, রাউন্ড গুলি একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। ক্যাম্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান কর্মকর্তা।

এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুতুপালং- লম্বাশিয়া ক্যাম্পে গুলি করে হত্যা করা হয় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিচ অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) নামের একটি সংগঠনের প্রধান ছিলেন। সেই সময় তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল যে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে। মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের পক্ষে জনমত গঠন নিয়ে এআরএসপিএইচের সঙ্গে আরসার বিরোধ ছিল। তারই জের ধরে হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। ওই হত্যাকাণ্ডের এক মাস না পেরোতেই আবারো রক্তাক্ত হলো রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির।

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হত্যা নির্যাতনের কারণে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গা নাগরিকরা। সেই দফায় সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা। এর আগেও ছোট ছোট পরিসরে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন