ক্রেগ ইয়াংয়ের বলটিকে কভার অঞ্চল দিয়ে সীমানাছাড়া করে নামিবিয়ার জয় নিশ্চিত করেন ডেভিড উইজে। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাস গড়ল আফ্রিকার দেশটি। টেস্ট খেলুড়ে দেশ আয়ারল্যান্ডকে গতকাল ৮ উইকেটে হারিয়ে চলতি টি২০ বিশ্বকাপের সুপার ১২ রাউন্ডে উত্তীর্ণ হলো তারা। ক্রিকেটের বৈশ্বিক মঞ্চে এটাই দেশটির সবচেয়ে বড় কীর্তি। আগে ব্যাটিং করে আইরিশরা ৮ উইকেটে ১২৫ রান তোলে। জবাবে নামিবিয়া ৯ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে।
এরপর গতকাল রাতের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে একই ব্যবধানে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সুপার ১২ রাউন্ডে উঠেছে শ্রীলংকা। আগে ব্যাটিং করতে নামা ডাচদের মাত্র ৪৪ রানে অলআউট করে সিংহলিজরা। এরপর ৭.১ ওভারে প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় দাসুন শানকার দল। লাহিরু কুমারা ৭ রানে তিনটি ও ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা ডি সিলভা ৯ রানে তিনটি উইকেট নেন। এছাড়া মহেশ থিকসানা এক ওভারে ৩ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। ম্যাচসেরা হন লাহিরু কুমারা।
এ জয়ে তিন ম্যাচে তিন জয় পাওয়া শ্রীলংকা পূর্ণ ৬ পয়েন্ট পেয়ে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো, আর ৪ পয়েন্ট নিয়ে নামিবিয়া গ্রুপ রানার্সআপ। আগামীকাল সুপার ১২ রাউন্ডে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে শ্রীলংকা।
কাল বিশ্বকাপের মঞ্চে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে নামিবিয়া। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে খেলার সুবাদে ডেভিড উইজে নামটি বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে বেশ পরিচিতই। এছাড়া তিনি খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের হয়েও। অবশ্য পরে প্রোটিয়াদের জার্সি ছেড়ে দিয়ে তিনি গায়ে তুলেছেন নামিবিয়ার জার্সি। এবার ক্রিকেট দুনিয়ায় অখ্যাত এ দেশটির কীর্তিতে রাখলেন বড় অবদান। তৃতীয় উইকেটে গেরহার্ড এরাসমাসকে নিয়ে মাত্র ৩১ বলে ৫৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে নামিবিয়াকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিতে ভূমিকা রাখেন ৩৬ বছর বয়সী উইজে। তিনি ১৪ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে বল হাতেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেন উইজে। ৪ ওভারে ২২ রানের খরচায় নিয়েছেন দুটি উইকেট। অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে উইজেই হয়েছেন ম্যাচসেরা খেলোয়াড়। এছাড়া ইয়ান ফ্রাঙ্কলিন ২১ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট। নামিবিয়ার বোলারদের লড়াইয়ে ৭.১ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৬২ রান জড়ো করার পরও শেষ পর্যন্ত আইরিশরা তুলতে পারে ৮ উইকেটে ১২৫ রান।
প্রথম রাউন্ডে ‘এ’ গ্রুপ থেকে শ্রীলংকা আগেই সুপার ১২-এর টিকিট নিশ্চিত করেছে। গতকাল দ্বিতীয় দল হিসেবে সুপার ১২-এর টিকিট কাটে নামিবিয়া।
আইরিশদের হারানোর পর আনন্দে কাঁদছিলেন নামিবিয়ার ক্রিকেটাররা। জয়সূচক রান নেয়া উইজে আলিঙ্গন করছেন দলটির সহকারী কোচ অ্যালবি মরকেলের সঙ্গে। মরকেলের মতো বাকিরাও উইজের সঙ্গে আলিঙ্গন করার অপেক্ষায় রয়েছেন। শারজায় তাদের এ আনন্দ হয়তো ঢেউ ফেলছে উইন্ডহোয়েকেও।
৪৯ বলে ৫৩ রানের ক্যাপ্টেন্স নক খেলে দলকে জেতানো এরাসমাস জয় শেষে বলেন, আমাদের ছোট দেশ, অল্পসংখ্যক মানুষ ক্রিকেট খেলে। নিজেদের এ অর্জনে আমাদের গর্ব হওয়া উচিত। চাপের সময় দলের সিনিয়র খেলোয়াড়রা হাল ধরেছেন, আজ রাতে আমরা দুজন যেমনটি করেছি। আশা করি, টুর্নামেন্টজুড়েই আমরা এমনটি করব।
এবার ক্রিকেটের বনেদি দলগুলোর সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে নামিবিয়া। সুপার ১২ রাউন্ডে ‘গ্রুপ-২’-এ তারা লড়াই করবে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডের সঙ্গে। ২৭ অক্টোবর সুপার ১২ রাউন্ডে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে নামিবিয়া।
এবার সুপার ১২ রাউন্ডে ওঠার মানে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী টি২০ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করল নামিবিয়া।