প্রথমার্ধে ম্যারিকোর আয় বেড়েছে ১৪ শতাংশ

২০০% নগদ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) এফএমসিজি খাতের বহুজাতিক কোম্পানি ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের আয় বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। এদিকে প্রথমার্ধের আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চলতি হিসাব বছরের জন্য ২০০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। লভ্যাংশ নির্ধারণ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ধরা হয়েছে আগামী ১১ নভেম্বর।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে ম্যারিকো বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৬৭৫ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৫৯২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির আয় বেড়েছে ৮৩ কোটি টাকা।

অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৯৭ কোটি টাকার বেশি। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ছিল ১৭৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬২ টাকা ৭৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৬ টাকা ৬৭ পয়সা।

৩১ মার্চ সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য মোট ৯০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে ৭০০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ রয়েছে। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৯৮ টাকা ৬৯ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৮৪ টাকা পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২১ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৫১ টাকা ৯৫ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময় শেষে যা ছিল ৪৪ টাকা পয়সা।

৩১ মার্চ ২০২০ হিসাব বছরে মোট ৯৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। ওই হিসাব বছরে ৭৫০ শতাংশ অন্তর্বর্তী নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৮৪ টাকা পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৬৪ টাকা ২৩ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২০ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৪৪ টাকা পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময় যা শেষে যা ছিল ৪১ টাকা ৩৪ পয়সা।

২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ম্যারিকো বাংলাদেশের  অনুমোদিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১০৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা কোটি ১৫ লাখ। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৯০ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক, দশমিক ৪৮ শতাংশ বিদেশী বাকি দশমিক ৮৬ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার ম্যারিকোর শেয়ারের সর্বশেষ সমাপনী দর ছিল হাজার ৩০৮ টাকা ৩০ পয়সা। ওই দিন শেয়ারটির হাজার ২৭৯ টাকা থেকে হাজার ৩৩২ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে হাজার ৩০ টাকা হাজার ৪৯৪ টাকা ৯০ পয়সা।

সবশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ২৩ দশমিক ৩৯, সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১৬ দশমিক ৮৩।

প্রসঙ্গত, ভারতের মুম্বাইভিত্তিক এফএমসিজি কোম্পানি ম্যারিকোর আন্তর্জাতিক বাজারের ব্যবসার ৪৯ শতাংশই আসে বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশের বাজারে ম্যারিকোর রাজস্ব আয়ের ৬৫ শতাংশই আসে প্যারাশুট ব্র্যান্ডের নারকেল তেল থেকে। আর ২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ আসে ভ্যালু অ্যাডেড তেল থেকে। কভিড-১৯-এর কারণে স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ পারসোনাল হাইজিন জাতীয় পণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হওয়ার কারণে গত বছরের এপ্রিল থেকে নিজেদের পোর্টফোলিওতে এসব পণ্য যুক্ত করেছে ম্যারিকো। এতে নারকেল তেলবহির্ভূত পণ্য থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যবসা প্রবৃদ্ধি হয়েছে কোম্পানিটির। পাশাপাশি পণ্যের বাড়তি চাহিদা মেটাতে চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নতুন একটি কারখানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি। কারখানায় ভোজ্য নারকেল তেল বাদে অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন