টেক জায়ান্টগুলোর আর্থিক তথ্য তদন্ত করবে যুক্তরাষ্ট্র

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর কাছে ৫৫ পৃষ্ঠার একটি তথ্য সংগ্রহ ফরম পাঠানোর পরিকল্পনা করছে সিএফপিবি ছবি: রয়টার্স

চলতি সপ্তাহে ফেসবুক, অ্যামাজন, গুগলসহ অন্য প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর ওপর তদন্ত শুরু করতে চায় মার্কিন ভোক্তা পর্যবেক্ষক কর্তৃপক্ষ। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকদের আর্থিক তথ্য কীভাবে পরিচালনা সংরক্ষণ করে থাকে তা যাচাই করাই তদন্তের মূল উদ্দেশ্য। ভোক্তা সুরক্ষা আর্থিক খাতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির বৃহত্তর লক্ষ্যে তদন্ত পরিচালনা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট দুই সূত্রে জানা গেছে। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের কনজ্যুমার ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন ব্যুরো (সিএফপিবি) এরই মধ্যে -সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। সংস্থাটি প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর কাছে ৫৫ পৃষ্ঠার একটি তথ্য সংগ্রহ ফরম পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। ফরমে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি, ব্যবহার গ্রাহকদের আর্থিক তথ্য বিপণন প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।

সূত্রগুলোর একটি জানায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান উদ্দেশ্য হলো কোম্পানিগুলো ঠিক কী কী তথ্য সংগ্রহ করে থাকে, কীভাবে সংগ্রহ করে এবং সংগৃহীত তথ্য কী কাজে ব্যবহার করে তা জানা। তবে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি সিএফপিবি। পাশাপাশি ফেসবুক, অ্যামাজন অ্যালফাবেট ইনকরপোরেটেডের গুগলও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও এসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি সিএফপিবি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়।

গত মাসে মার্কিন সিনেটে সিএফপিবির পরিচালক হিসেবে রোহিত চোপড়াকে অনুমোদন দেয়ার পর থেকেই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যাশা করা হচ্ছিল। রোহিত আগে ফেডারেল ট্রেড কমিশনের ডেমোক্রেটিক কমিশনার ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা আইনজীবী হিসেবে তার বেশ খ্যাতি রয়েছে। পাশাপাশি প্রযুক্তি জায়ান্টদের ওপর কঠোর মনোভাব পোষণের ব্যাপারেও তার পরিচিতি রয়েছে।

আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত নীতির একটি হলো কনজ্যুমার ফাইন্যান্স খাতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব আর্থিক তথ্যের ওপর ভোক্তাদের আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অধিকার প্রদানের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাকে আরো বাড়ানোর লক্ষ্য হাতে নেয়া হয়েছে। ধারণাকে ওপেন ব্যাংকিং বলা হয়।

নীতিমালার আওতায় ব্যাংক অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক তথ্যগুলোয় গ্রাহকদের আরো বেশি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ দেয়া হবে। ফলে গ্রাহকরা তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স, পেমেন্টগুলো, লেনদেন এবং বিনিয়োগ-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ডাউনলোড করতে পারবেন। পাশাপাশি তৃতীয় কোনো পক্ষের সঙ্গে এসব তথ্য বিনিময় করতে পারবেন। ফলে ভোক্তাদের জন্য সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করা অনেকটা সহজ হয়ে উঠবে।

সিএফপিবির পরিচালক রোহিত চোপড়া আশা করছেন, খুব শিগগিরই তিনি ওপেন ব্যাংকিং নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারবেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময় সিএফপিবি সর্বপ্রথম নীতিমালা প্রণয়নের ব্যাপারে প্রস্তাব করেছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোম্পানিগুলোর গোপনীয় প্রতিক্রিয়া ওপেন ব্যাংকিং এবং ভবিষ্যতের অন্যান্য নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অনেককে সাহায্য করে থাকে। সূত্র আরো জানায়, সিএফপিবির পদক্ষেপের মাধ্যমে একটি স্পষ্ট সংকেত পাওয়া যায়। সেটি হলো যেসব প্রতিষ্ঠান সংস্থাটির আওতায় নেই তাদের ওপরও নীতিমালা বিস্তৃত করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম তাদের দ্বারা গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ ভবিষ্যতে ওপেন ব্যাংকিং নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিষয়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন