বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার হতে যাচ্ছেন ইলোন মাস্ক!

বণিক বার্তা ডেস্ক

১৯১৬ সালে বিশ্বের প্রথম বিলিয়নেয়ার হিসেবে স্বীকৃতি পান জন ডি রকফেলার। এরপর পেরিয়ে গেছে শতবছরেরও বেশি। বিলিয়নেয়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে কয়েক হাজার নাম। এমনকি এক্সক্লুসিভ ১০০ বিলিয়ন ডলারের ক্লাবেও আছেন বেশ কয়েকজন। কভিডজনিত সংকটের সময়ও বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের সম্পদ বেড়েছে হু হু করে। যদিও সেটি বিলিয়ন ডলারের সীমা পার হয়নি। তবে এবার বিশ্ব ট্রিলিয়ন বা লাখ কোটি ডলার সম্পদের মালিক পেতে যাচ্ছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন এক বিনিয়োগ ব্যাংক। পূর্বাভাস অনুযায়ী বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার হবেন ইলোন মাস্ক।

দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনী এখন ইলোন মাস্ক। মার্কিন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রতিষ্ঠাতার সম্পদের আনুমানিক মূল্য ২৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার। টেসলার উত্থান তাকে শীর্ষ ধনীদের কাতারে নিয়ে এসেছিল। তবে এবার টেসলা নয়। ইলোন মাস্ককে লাখো কোটি ডলার সম্পদের মালিক করে দিতে চলেছে তার মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। মরগান স্ট্যানলি ব্যাংকের এক বিশ্লেষক এমনটাই পূর্বাভাস দিয়েছেন।

ব্যাংকটির বিশ্লেষক অ্যাডাম জোনস বলেন, মাস্কের বর্তমান সম্পদের বেশির ভাগই এসেছে টেসলা থেকে। তবে এবার তিনি মহাকাশ অনুসন্ধান ব্যবসা থেকে অনেক বেশি আয় করতে চলেছেন। ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত স্পেসএক্স রকেট, উেক্ষপণ যন্ত্র সহায়ক অবকাঠামোর সক্ষমতা এবং সময়সীমা নিয়ে পূর্ব ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল।

তিনি বলেন, একাধিক গ্রাহক আমাদের বলেছেন যে, ইলোন মাস্ক প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার হতে যাচ্ছেন। যদিও লাখ কোটি ডলারের সম্পদ গড়ে দেবে টেসলা নয়, বরং স্পেসএক্স। যেকোনো শিল্পের মধ্যে স্পেসএক্স বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান সংস্থা হবে বলেও মনে করেন তিনি।

রকেটগতিতে ছুটছে স্পেসএক্স... কে তাদের ধরতে পারে? শিরোনামে লেখা চিরকুটে জোনস বলেন, স্পেসএক্সের স্টারশিপ এমন একটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট, যা চাঁদ মঙ্গল গ্রহে মানুষ এবং মালামাল নিয়ে যেতে পারে। এটি মহাকাশ শিল্প নিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম।

তিনি বলেন, একজন গ্রাহক বলেছিলেন, স্টারশিপ আসার আগে মহাকাশ সম্পর্কে কথা বলা, গুগল আসার আগে ইন্টারনেট নিয়ে কথা বলার মতো। জোনসের মতে, স্পেসএক্সের মূল্য হতে পারে ২০ হাজার কোটি ডলার। তাছাড়া প্রতিনিয়ত সংস্থাটির দাম বাড়ছে। মহাকাশ অবকাঠামো, পৃথিবী পর্যবেক্ষণ গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানসহ সম্ভাব্য শিল্প নিয়ে নতুন নতুন আশা দেখাচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি সম্প্রতি বাণিজ্যিক মহাকাশ পর্যটনও শুরু করেছে। এর মাধ্যমে মহাকাশ পর্যটনের প্রতিযোগিতায় বিলিয়নেয়ার জেফ বেজোস রিচার্ড ব্র্যানসনের সঙ্গে নাম লিখিয়েছেন মাস্ক।

চলতি মাসে সেকেন্ডারি শেয়ার বিক্রিতে প্রতিষ্ঠানটির মূল্য ছিল ১০ হাজার কোটি ডলার। বর্তমানে স্পেসএক্স বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট বাইটড্যান্সের পেছনে রয়েছে। মাস্ক স্পেসএক্সের প্রায় ৪৮ শতাংশের মালিক। গত জানুয়ারিতে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসকে পেছনে ফেলে তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনীর মুকুট জিতেছিলেন। তবে বছরের শেষ দিকে এসে আবার শীর্ষস্থান ফিরে পাওয়ার আগে তিনি শীর্ষ ধনীর তকমা হারিয়েছিলেন।

ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে কাগজে-কলমে তার সম্পদের পরিমাণ ২৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার। মাস্কের সম্পদের পরিমাণ বেজোসের চেয়ে হাজার ২০০ কোটি ডলার বেশি।

বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার হিসেবে এর আগেও অনেক পূর্বাভাসে ইলোন মাস্কের নাম এসেছে। যদিও সেটি মূলত টেসলার শেয়ার পারফরম্যান্সের কারণে। গত বছর টেসলার শেয়ারদরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল এবং এটি এখনো চলছে। কেবল গত সোমবারই টেসলা তার প্রতিষ্ঠাতার সম্পদে ৬৬০ কোটি ডলার যুক্ত করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন